ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

ছাব্বিশের এপ্রিলে হতে পারে নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার
২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
mzamin

আগামী বছরের এপ্রিলে হতে পারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানালেও নানা কারণে নির্বাচনটি এপ্রিলে আয়োজনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বড় কোনো সংকট তৈরি না হলে জাতীয় নির্বাচন এই সময়ের বাইরে যাবে না বলে সরকারি সূত্রে মানবজমিন জানতে পেরেছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারে থাকা ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সরকারপ্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আলোচনা করেছেন। দলগুলোর দাবি অনুযায়ী ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন খুব সহজ নয় বলে মনে করছেন সরকার সংশ্লিষ্টরা। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে নির্বাচন করা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়ে থাকে এই সময়ে। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারি-মার্চে পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর পড়ায় এই সময়ে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। ঈদের পর নির্বাচন আয়োজন সুবিধাজনক বিবেচনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে এপ্রিলে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হতে পারে। 

সূত্রের দাবি, প্রধান উপদেষ্টা জুন পর্যন্ত নির্বাচনের সর্বশেষ সময়সীমা উল্লেখ করলেও তার আগেই নির্বাচন আয়োজনের চিন্তা করছেন। এজন্য সম্ভাব্য সুবিধাজনক সময় ও তারিখ বিবেচনা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য দিন তারিখ নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। আপাতত ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের চিন্তা নেই বলে জানা গেছে। ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে পরের তিন মাস নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা জটিল। কারণ ২রা জানুয়ারি ভোটার তালিকা হাল নাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়। ২রা মার্চ ভোটার দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই কার্যক্রম চলাকালে নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ নেই। এছাড়া আগামী বছরের রমজান মাস পড়বে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে। মার্চেই হবে ঈদুল ফিতর।  রোজার মাসে নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ নেই বলে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এসব বিবেচনায় নিয়ে ঈদের পর এপ্রিলে নির্বাচন আয়োজনকে সুবিধাজনক বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের দিন তারিখের বিষয় আরও পরিষ্কার হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, আসছে জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। এ সময়  রোডম্যাপ ঘোষণা হলে আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে নির্বাচন আয়োজনের পুরো প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব বলে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, নির্বাচনী কেনাকাটা, নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণসহ আরও অনেক কাজ এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ভোটের সময়ের বিষয়ে কমিশন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মে-জুন এই সময়ে দেশের আবহাওয়া উষ্ণ থাকে এবং বৃষ্টিপাত বেশি হয়। সাধারণত এই সময়ে নির্বাচন আয়োজনের আদর্শ সময় না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে জুন পর্যন্ত সীমা দেয়া হলেও নানা দিক বিবেচনায় জুনের আগেই নির্বাচন করতে হবে বলে তারা মনে করছেন। 

এর আগের জাতীয় নির্বাচনগুলো সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতেই হয়েছে। ১৯৮৬ সালের এবং ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের সময় শুধু ব্যতিক্রম ছিল। ’৮৬ সালে মে মাসে এবং ’৯৬ সালের  জুনে নির্বাচন আয়োজন হয়েছিল। 

রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ইতিমধ্যে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে তাদের জমা দেয়া মতামত নিয়ে বৈঠক করেছে কমিশন। জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় এখনো স্পষ্ট কোনো ধারণা মিলছে না। প্রধান দল বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো আসছে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাইছে। জামায়াত ও এনসিপি’র অবস্থান অবশ্য ভিন্ন। জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান আসছে রমজানের আগে নির্বাচন চান বলে জানিয়েছেন। নবগঠিত দল এনসিপি মৌলিক সংস্কারের পরই নির্বাচন করার দাবি জানিয়ে আসছে। নির্বাচনের সময়সীমা পিছালে সুবিধা হবে বলে দলটির নেতাকর্মীরা মনে করছেন। নির্বাচনের সময়সীমা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন সময়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিয়ে দলগুলো আশ্বস্ত নয়। সর্বশেষ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপিও নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছে। তবে সরকারের তরফে এমন কোনো আশ্বাস না মেলায় দলটির নেতারা অসন্তোষ বা হতাশা প্রকাশ করেন।

 

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status