প্রথম পাতা
হাতিরঝিলে গুলিবিদ্ধ যুবদল নেতার মৃত্যু
১০ আসামিকে খুঁজছে পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবাররাজধানীর হাতিরঝিল থানার মোড়ল গলি এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত আরিফ সিকদার (৩৫) ঢাকা মেডিকেলের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পরে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছে পরিবার। পুলিশ আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। তবে কী কারণে আরিফকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তবে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাসেল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি নিহত আরিফ ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদলের একজন সদস্য ও পাশাপাশি তিনি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করেন। শনিবার রাতে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আমরা চিকিৎসকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি গুলি আরিফের মুখের ডান পাশে দিয়ে ঢুকে কপালের বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত করা হবে। যুবদল কর্মী আরিফের বাবা গিয়াস উদ্দিন শিকদার জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার হোগলা বালিকান্দি গ্রামে। আরিফ স্ত্রীকে নিয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারে ভাড়া থাকতো। সেখানে তার ওয়ার্কশপ ব্যবসা আছে। তিনি বলেন, শুনেছি ঘটনার দিন আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে গুলি করছে। কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে।
হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় নিহতের ছোটবোন রিমা আক্তার যে মামলা করেছেন সেখানে তিনি ১০ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। তারা হলেন- মো. ইয়াছিন (১৯), মো. আসিফ হোসেন (২১), বিপু (৫০), মো. অনিক (১৯), মো. আশিক (১৯), মো. মিরাজ (১৯), মো. ইফতি (২৪), জাফর ইমাম তরফদার মন্টু (৪০), রতন শেখ (৪৫) ও আলিফ (১৯)। এজাহারনামীয় এই ১০ আসামিকে খুঁজছে পুলিশ। তাদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এজাহারে বলা হচ্ছে আমার ভাই ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহ-ক্রীড়া সম্পাদক। অনেক আগে থেকেই এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ ও শত্রুতা চলছে। ওই জেরেই তাকে জখম ও খুনের পাঁয়তারা করছিল তারা। গত ১৯শে এপ্রিল বিকাল ৪টায় আমার ভাই আরিফ সিকদার ও তার বন্ধু মো. রাজু বেপারী হাতিরঝিল থানা এলাকার টিএনটি কলোনিতে বিএনপি’র প্রোগ্রামে আসে। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে আরিফ সিকদার ও তার বন্ধু রাজু এ সাগর উক্ত প্রোগ্রাম শেষ করে বের হয়ে হাতিরঝিলস্থ আকিজের গলিতে আড্ডা দেয়। আড্ডা শেষে রাত ১১টা ২৫ মিনিটের সময় নিজেদের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে হাতিরঝিল আকিজের গলি থেকে হেঁটে মোড়ল গলির ৩০ গজ সামনে মধুবাগ ব্রিজের সামনে যেতেই আসামি ইয়াছিন ও আসিফ আরিফের কাঁধে হাত দিয়ে বলে চাচা আমাদের সঙ্গে চলেন কথা আছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে ও অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় অতর্কিতভাবে আরিফ সিকদারকে এলোপাতাড়িভাবে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। তখন আসিফের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে আরিফ সিকদারকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা বরাবর আঘাত করলে আরিফ সিকাদার মাথা সরিয়ে নিলে চাকুর আঘাত আরিফের ডান পাশের ভুরুর উপর লাগিয়া কেটে গিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ১ নম্বর আসামি তখন তাহার কোমর থেকে পিস্তল বের করে আরিফকে হত্যার উদ্দেশ্যে মুখে গুলি করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। আরিফ সিকদারের চিৎকার ও গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে আসে। ওই সময় আরিফের বন্ধু রাজু বেপারী সাগর কৌশলে দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আরিফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজান মানবজমিনকে বলেন, নিহতের পরিবার মামলা করেছে। আমরা বেশ কিছু ক্লু নিয়ে কাজ শুরু করেছি। একাধিক টিম মাঠে আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য আছে। আশা করছি খুব শিগগিরই রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামিদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।