বাংলারজমিন
চট্টগ্রামে জামায়াতের নিজস্ব অর্থায়নে খাল খনন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থকে
২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
‘সবার সহযোগিতায় বির্জাখাল পাবে প্রাণ’ এই স্লোগানকে ধারণ করে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে বাকলিয়ার বির্জাখাল খনন কার্যক্রম ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামী। প্রায় ১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খরচে এই প্রকল্পের সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে চট্টগ্রাম মহানগর শাখা জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এতে সংগঠনটির সাড়ে ৩ হাজার কর্মীও স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করবেন। প্রায় মৃতপ্রায় খালটি খনন শেষ করতে ২০-২৫ দিন সময় টার্গেট করা হয়েছে। শনিবার সকালে বাকলিয়াস্থ ইছহাকের পুল এলাকার অছি মিয়া দোস্ত ভবনের মাঠে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন নগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শপথ নেয়ার পর থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনে আমি মনে করেছি সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। চট্টগ্রাম নগরী কারও একার শহর নয়। সকলের দেশ ও শহরের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে, তাহলেই দেশ ও শহর সমৃদ্ধ হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এই উদ্যোগের জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে স্বাগত জানাচ্ছি।’ চসিক মেয়র বলেন, গত ১৬ বছরে উন্নয়নের নামে চট্টগ্রাম নগরকে জলাবদ্ধতার নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। আইন আইনের জায়গায় থাকবে। এখন থেকে আমরা কঠোর হবো। দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে হলে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে খাল খনন কার্যক্রম শুরুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী জানান, কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফয়জুল কবির খান ও ফারুক ই আজমের সঙ্গে একটি বৈঠকে সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা জলাবদ্ধতা নিরসনে বিপুল অর্থ বরাদ্দ চায়। তখন তিনি প্রস্তাব দেন, একটি খাল দায়িত্ব দেয়া হলে কোনো অর্থ ছাড়াই জামায়াত তা পরিষ্কার করে দেবে। তার এই প্রস্তাবে উপদেষ্টারা খুশি হয়ে বলেন, ‘আপনারাই পারবেন।’ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের উদাহরণ টেনে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আনোয়ার ইব্রাহিম ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ২০ বছর জেল খেটেছেন, কিন্তু তিনি রাজনীতিকে কখনো নেতিবাচকভাবে দেখেননি। তার জীবনী পড়ে আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরদোয়ান এক সময় রাস্তায় ৫০০ কর্মী নিয়ে ঝাড়ু হাতে সড়ক পরিষ্কার করতেন। আমি তাদের পথ অনুসরণ করছি।’ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সব ধরনের উন্নয়নে সিটি করপোরেশনকে আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা করবো। হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা ভুলে আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’ প্রধান অতিথি মেয়র ডা. শাহাদাতের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কয়েকটা বাজারের দায়িত্ব দিন। সেই বাজারগুলোকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা চায়নার শহরের মতো সুন্দর বাজার উপহার দিবে। পাশাপাশি ১০টি স্কুলের কাজ করার সুযোগ দিন। সেগুলোর আঙ্গিনাসহ আশেপাশের এলাকা জামায়াতের কর্মীরা পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন করে দেবে, ইনশাআল্লাহ।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার আই ইউ এ চৌধুরী, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মানজারে খোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুল হক, নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী প্রমুখ।