বাংলারজমিন
আরও ৯০ হত্যা, নিহত কিশোরের মৃতদেহ পরিবারকে দেয়নি ইসরাইল
মানবজমিন ডেস্ক
২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবারগাজায় ইসরাইলি নারকীয় তাণ্ডবের শেষ নেই। শুক্রবার ভোর থেকে কমপক্ষে ৯০ জনকে হত্যা করেছে তারা। ওদিকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জরুরি সতর্কতা দিয়েছে। তারা বলেছে, গাজার এখন খাদ্যের প্রয়োজন। কারণ লাখ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। আল জাজিরার সংবাদদাতা বলছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের মানুষ ইসরাইলি বোমা হামলার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ত্রাণ সরবরাহের ওপর ইসরাইলি অবরোধের কারণে তাদের সন্তানরা অনাহারে থাকছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মাস আগে গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৫১,০৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৬,৫০৫ জন আহত হয়েছেন। ওদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০-এরও বেশি বলে জানিয়েছে। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে মৃত বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।
পশ্চিম তীরে অতর্কিতে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা। কিন্তু তার মৃতদেহ পরিবারের কাছে ফেরত দেয়নি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলিবিদ্ধ হয় ১৬ বছর বয়সী ওই ফিলিস্তিনি বালক। এ বছরের শুরু থেকে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত ২২তম ফিলিস্তিনি শিশু সে। ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল-প্যালেস্টাইন (ডিসিআইপি) জানিয়েছে, নাবলুসের দক্ষিণে ওসারিন শহরের কাছে ইসরাইলি আক্রমণে জিহাদ আদহাম রেবি আদেলি নামের ওই কিশোর আরও দুই তরুণ ফিলিস্তিনির সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করতে এম্বুলেন্স ছুটে যায়। কিন্তু এর ক্রুদের ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বাধা দেয় ইসরাইলি বাহিনী। ডিসিআইপি’র আয়েদ আবু একতাইশ এক বিবৃতিতে বলেন- এখন মৃত্যুর পরেও জিহাদ বিশ্রাম নিতে পারছে না। কারণ ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ তার পরিবারকে মৃতদেহ দাফনের সুযোগ দিচ্ছে না। তার মৃতদেহ এখন আরও ৪১টি ফিলিস্তিনি শিশুর দেহাবশেষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে, যারা ২০১৬ সাল থেকে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে এবং তাদের মৃতদেহ ইসরাইলি সামরিক বাহিনী নিয়ে গেছে। তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দেয়নি। ডিসিআইপি জানিয়েছে, নিহত ফিলিস্তিনিদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ইসরাইলের নীতি কেবল আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনই নয়, এটিকে শোকাহত পরিবারগুলোর ওপর পরিচালিত সম্মিলিত শাস্তির একটি নিষ্ঠুর উপায় হিসেবে দেখা হয়। ওদিকে ইসরাইলি মানবাধিকার গোষ্ঠী ইয়েশ দিন সতর্ক করে দিয়েছে যে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ এবং এল-বিরেহ গভর্নরেটে অবস্থিত ফিলিস্তিনি গ্রামের তুরমুস আয়া’র কাছে একটি অবৈধ খামার ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। অধিকৃত অঞ্চলে কাজ করা এই অধিকার গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, শিলোহ উপত্যকা অঞ্চল জুড়ে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ফাঁড়িগুলোতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ক্যারাভান এবং পূর্বনির্মিত বাড়িঘর রয়েছে। আবারো সেনাবাহিনী অবৈধ খামার ফাঁড়ি স্থাপনে বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে, যারা রাষ্ট্রের সুরক্ষায় ফিলিস্তিনিদের তাদের জমি থেকে বিতাড়িত করার জন্য সহিংসতা ব্যবহার করে- ইয়েশ দীন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে একথা বলেছেন।
ওদিকে, ফিলিস্তিনি তথ্য কেন্দ্রের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনের দক্ষিণে ফাওয়ার ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে এবং গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ক্যাম্পে হামলার সময় প্রায় ৩০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে।