ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

টেলিফোনে বা এসএমএসে সমন জারি করতে পারবে আদালত

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার

বৃটিশ সরকারের সময়ে প্রণীত দেওয়ানি কার্যবিধি বা সিভিল প্রসিডিউর কোডে (সিপিসি) কিছু পরিবর্তন আনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে টেলিফোন, খুদে বার্তাসহ যোগাযোগের অন্যান্য আধুনিক পদ্ধতিতে সমন জারি করতে পারবেন আদালত। গতকাল তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশে একটি কথা আছে, কারও সঙ্গে শত্রুতা করলে ভূমির মামলা দিয়ে দাও। তাহলে তিন প্রজন্মেও সেই মামলা আর শেষ হবে না। তাই সেই তিন প্রজন্ম যেন না লাগে, এক প্রজন্মেই যেন শেষ করা যায় সে জন্য সিপিসির কিছু সংশোধনী আনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যাতে করে বিচারের সময় কম লাগে, টাকা কম লাগে। সিপিসির কিছু সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আগে একটি মামলার রায় হওয়ার পরেও জারি-মোকদ্দমা করতে হতো সেই মামলার রায় বাস্তবায়নের জন্য। এখন বলা হচ্ছে, যখন রায় হবে, তখনই এই পিটিশনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে দেয়া হবে। আমরা যারা যারা উকিল আছি নানান অজুহাতে বিভিন্ন সময়ে সময় নিয়ে মামলার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করি। সেটা যেন আর না হয়, সেরকম কতোগুলো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বারবার বিভিন্ন সময়ে সময় নেয়ার কথা বলা হতো, উকিলরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সময় নেবেন- সর্বোচ্চ কতোবার সময় নেয়া যাবে তা এখানে বলে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিচার কাজও আধুনিকায়ন করতে বলা হয়েছে। এখন থেকে সমন জারি টেলিফোনের মাধ্যমে, এসএমএসের মাধ্যমে বা অন্য আধুনিক পদ্ধতিতে করা যাবে। আগে ভুয়া মামলার জন্য শাস্তি ছিল ২০ হাজার টাকা জরিমানা। এখন সেটি বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ সময় রিজওয়ানা হাসান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ‘কনভেনশন অন দ্য প্রোটেকশন অ্যান্ড ইউজ অব ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটার কোর্সেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লীগ-১৯৯২ কনভেনশন’-এ অনুস্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া (সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, আন্তঃমন্ত্রণালয়, ওই কনভেনশনের সেক্রেটারিয়েট থেকে লোক আসা) এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে এ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগি ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা সব সময় বলি কেন আন্তর্জাতিক আইনগুলোতে সই করছি না, এ অভিন্ন জলরাশির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জাতিসংঘের দুটো (১৯৯৭ কনভেনশন ও ১৯৯২ কনভেনশন) আইন রয়েছে। ১৯৯৭ কনভেনশনটি ১৯১৪ সালে কার্যকর হয়। উজানের দেশগুলোর অনীহার কারণে মাত্র ৩৬টি দেশের সই লাগতো। সেই সই পেতেই লেগে যায় ১৭ বছরেরও বেশি সময়। আরেকটি আইন রয়েছে যেটি খুবই কার্যকর। যদিও ১৯৯২ সালের এ আইনটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে টার্গেট করে, এটি ২০১৬ সালে সব দেশের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এ পর্যন্ত ১১টি দেশ এতে সই করেছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ দেশ হচ্ছে আফ্রিকান। অন্যদিকে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার কার্যক্রম শুরু করতে সরকার কমিটি গঠন করেছে বলেও জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। 
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status