প্রথম পাতা
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল
ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে চার ট্রাক তৈরি পোশাক, বিকল্প চিন্তা ঢাকার
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১১ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
ভারতীয় স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে চারটি বাংলাদেশি পণ্যবোঝাই ট্রাক ফেরত পাঠিয়েছে ভারত। দেশটি ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় বাংলাদেশ রপ্তানি-বাণিজ্যে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আমিনুল হক আনু।
তবে গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘হঠাৎ করে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করেছে ভারত। তিনটি পোর্ট ব্যবহার করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টন পণ্য ট্রান্সশিপমেন্ট হতো। তবে এতে বাংলাদেশের সমস্যা হবে না। সরকার এখন অন্য উপায়ে এগুলো করার চেষ্টা করবে এবং এটা করা সম্ভব। শিগগিরই এই প্রভাব কাটিয়ে উঠবো। এছাড়া রপ্তানি এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে যাতে কোনো ঘাটতি না হয় সেই চেষ্টা করা হবে।
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি জানান, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে চারটি বাংলাদেশি পণ্যবোঝাই ট্রাক ফেরত পাঠিয়েছে ভারত। বুধবার সন্ধ্যায় ফেরত পাঠানো পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ঢাকায় নিয়ে গেছে। বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ফেরত যাওয়া পণ্যের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লি.। এর আগে গত ৮ই এপ্রিল জারি করা সার্কুলার নং ১৩/২০২৫-কাস্টমসের মাধ্যমে কার্যকর হওয়ায় বুধবার থেকে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্রুত ও স্বল্প খরচে বাণিজ্য করার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, স্থলবন্দর দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের জন্য ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় একটি চিঠি ইস্যু করেছে কাস্টমসে। চিঠির আলোকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার পণ্য বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়। বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন জানান, ভারত সরকার তাদের এই সিদ্ধান্ত পরিহার করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখবেন বলে আমরা আশা করছি।
বেনাপোলের সি অ্যান্ড এফ ব্যবসায়ী আমিনুল হক আনু বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় বেনাপোল থেকে চারটি রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক ফেরত গেছে।
বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি ডিরেক্টর রাশেদুল সজীব নাজির জানান, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় পেট্রাপোল কাস্টমস থার্ডকান্ট্রির পণ্যে কার্পাস ইস্যু করেনি। এতে ওইসব পণ্যবোঝাই ট্রাক ভারতে ঢুকতে পারছে না। তবে ভারতের অভ্যন্তরে রপ্তানির উদ্দেশ্যে আসা অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বুধবারই বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। সেখানে ক্রেতারাও উপস্থিত ছিলেন। আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংকট কাটাতে চেষ্টা করবো। নিজস্ব সক্ষমতায় প্রতিযোগিতায় যেন কোনো ঘাটতি না হয় সেটা নিয়ে কাজ করছি। বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে কাজ করছি যোগাযোগের ব্যাপারেও যাতে কোনো ঘাটতি না হয় ‘
কী কী পদক্ষেপ নেয়া হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু আছে অবকাঠামোগত বিষয়, কিছু আছে খরচ বৃদ্ধি, এসব নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, সমস্যা কাটিয়ে উঠবো।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ধরনের দাবি উঠেছে যে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাল্টা ট্রান্সশিপমেন্ট বা ট্রানজিট বাতিল করা যায় কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সেটা আমার বিষয় না। আমার বিষয় হচ্ছে সক্ষমতা বৃদ্ধি।
ভারতকে কোনো চিঠি দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এই মুহূর্তে চিঠি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছি না।
উল্লেখ্য, ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে যাওয়ার জন্য ২০২০ সালের ২৯শে জুন একটি আদেশ জারি করেছিল ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) মঙ্গলবার সেই আদেশ বাতিল করে।
পাঠকের মতামত
ভারত অতিতে ও বব্ধু রাষ্ট্র ছিল ভান করেছিলো মুলত বন্ধু ছিলনা, অদের কাছে নিজের স্বার্থটাই বড় সব কিছুর ছেয়ে।
এ পণ্যগুলো ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে প্রথমে ভারত যেতে হয় এবং বাংলাদেশেও দীর্ঘ স্থলপথ পাড়ি দিতে হয়। আকাশ পথে পাকিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ট্রানজিট করা গেলে রপ্তানি খরচ আরো কম আসতে পারে।
india is our eternal enemy.
ভারত আমাদের বুঝতে বাকি নেই। ওরা নিজের সারথ ছাড়া কিছু ই বুঝে না আমরা ভালো করে জানি।