অনলাইন
কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না: হেফাজত
স্টাফ রিপোর্টার
(১ দিন আগে) ৬ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ১১:২২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৭ পূর্বাহ্ন
কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটি বলছে, কিছু মিডিয়া তাদের রিপোর্টে বিএনপির একতরফা বক্তব্য তুলে ধরায় জনমনে হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে যা কাম্য নয়। এক্ষেত্রে কিছু মিডিয়া অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে বলে আমরা মনে করি। তাদের উচিত ছিল হেফাজত নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকেও বক্তব্য নেয়া, যা তারা করেননি। হেফাজতে ইসলাম একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। গতকাল শনিবার বিএনপির সঙ্গে হেফাজতের বৈঠকে নিজেদের বক্তব্যে তুলে ধরে রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এসব কথা বলে।
এ প্রসঙ্গে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের কোনো বক্তব্য হেফাজত থেকে দেয়া হয়নি। অন্য কোনো গোষ্ঠীর মাধ্যমে এমন বক্তব্য প্রচার করা হলে তা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিকৃত বক্তব্য। হেফাজত কখনো কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না।
এতে বলা হয়, নির্বাচনী রাজনীতি থেকেও হেফাজত সবসময়ই মুক্ত থাকবে। হেফাজতের নাম বিক্রি করে কেউ রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করলে তা সফল হবে না। ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়াবলীতে হেফাজত জনগণের পক্ষেই সবসময় মতামত দেয় এবং ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে হেফাজতের অবস্থান পূর্বের মতোই অবিচল থাকবে ইনশাআল্লাহ। উপরোক্ত ইস্যুগুলো নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও হেফাজত নেতৃবৃন্দ শিগগিরই বৈঠকে বসবেন। আগামী ১২ এপ্রিল কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে বৈঠক হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত ২৭ রমজান খাস কমিটির এক বৈঠকে হেফাজত নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও বেশকিছু জরুরি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে হেফাজত নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিএনপিকে হেফাজত নেতৃবৃন্দ যা বলেছে তা নিচে তুলে ধরা হলো, সেগুলো হল-সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ বহাল রাখা ও ‘বহুত্ববাদ’ শব্দ না ঢোকানোর ব্যাপারে বিএনপিকে সরব হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। শাপলা ও জুলাই-আগস্টের গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচারকাজ সম্পন্ন হওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই বলে জানানো হয়েছে এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের বিচার দ্রুত আগাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা এবং ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ডের জন্য আমরা মামলা দায়ের করেছি ও শাপলার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে বিএনপিকেও সরব হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ মে মামলায় হেফাজতের আলেম-ওলামা এবং কর্মী-সমর্থক ছাড়াও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছিল এবং বিএনপির ওই নেতাকর্মীদের মামলাসহ হেফাজত নেতৃবৃন্দের মামলাগুলোও দ্রুত প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপ দিতে বিএনপির সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া দেশে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বিএনপিকে শক্ত অবস্থান নেয়ার আহ্বান করা হয়েছে এবং তৌহিদি জনতা ও আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে যায় এমন কথাবার্তা বলা থেকেও বিরত থাকতে বিএনপিকে অনুরোধ করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে জঙ্গি ও উগ্রবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত ও আওয়ামী লীগের অপপ্রচারণার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভাষায় কথা বলতে বিএনপিকে আহ্বান করা হয়েছে। বিএনপির কিছু কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষ ও ওলামায়ে কেরাম যে অসন্তুষ্ট তা বিএনপিকে জানানো হয়েছে এবং জাতীয় ঐক্য গঠনে বিএনপি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, সেই আশা ব্যক্ত করা হয়েছে। গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে বিএনপিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাঠকের মতামত
হেফাজতে ইসলাম কোন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম নয়, তাই নির্বাচনে জোট গঠনের প্রশ্ন অবান্তর। তবে ভোটের মাঠে হেফাজতের প্রভাব আছে এটা সত্য। প্রশ্ন আসতে পারে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলামকে হেফাজত করার জন্য সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু! অমুসলিম দেশের মুসলমানদের ইসলাম কে হেফাজত করেন?
জনগণ এখন অনেক সচেতন। মুখে গণতন্ত্রের বুলি আর নির্বাচনের দাবিতে সরব হলেও, বিএনপির প্রকৃত চেহারা এখন আর কারো অজানা নয়। বারবার তারা প্রমাণ করেছে, তারা ভারতের দালালি করে দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত। দেশের জনগণ দেখেছে, কিভাবে এই দলটি নিজের স্বার্থে দেশের পথ রুদ্ধ করতে চেয়েছে, অস্থিরতা ছড়াতে চেয়েছে। এই সংকটকালে দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে একজন নিরপেক্ষ, দূরদর্শী ও আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত নেতৃত্ব জরুরি। ড. ইউনুস বর্তমানে যেভাবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাতে তিনি দেশের জন্য একটি আশার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে এমন নেতৃত্বকে আরও ৫ বছর সময় দেওয়া উচিত।
সালাহউদ্দিন সাহেব তো আপনাদের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন তখন আপনারা চুপ ছিলেন কেনো।
hefajot ki puropuri rajnoitik dol hoye gelo?