বিশ্বজমিন
৬০,০০০ বছরের জন্য সীমাহীন জ্বালানির সন্ধান পেয়েছে চীন
মানবজমিন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ১ মার্চ ২০২৫, শনিবার, ১২:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:৪৯ অপরাহ্ন

সীমাহীন এক জ্বালানির উৎসের সন্ধান পেয়েছে চীন। এই জ্বালানি দিয়ে তারা ৬০ হাজার বছর চলতে পারবে। বেইজিংয়ে ভূবিজ্ঞানীরা এমন দাবি করেছেন। এ খবর দিয়ে অনলাইন ডেইলি মেইল বলছে, ইনার মঙ্গোলিয়ায় বায়ান ওবো খনিজ কমপ্লেক্সে পাওয়া গেছে পর্যাপ্ত পরিমাণ থোরিয়াম। এটা এতটা বেশি যে, তা দিয়ে চীনাদের প্রতিটি বাড়িতে ‘চিরদিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
উল্লেখ্য, থোরিয়াম হালকা মাত্রার একটি তেজষ্ক্রিয় পদার্থ। এটা দিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে। এর নাম হবে মল্টেন-সল্ড রিঅ্যাকটর। তা থেকে আসবে অসীম পরিমাণ বিদ্যুৎ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি ওই খনি থেকে পুরোটা থোরিয়াম উত্তোলন করা যায় তাহলে তার পরিমাণ হবে ১০ লাখ টন। দ্য সাউথ চায়না পোস্ট প্রকাশিত হয়ে পড়া একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে এ তথ্য দিয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ওই খনিতে থোরিয়ামের উৎস এখন পর্যন্ত অস্পৃশ্য অবস্থায় আছে। এটা যথাযথভাবে উত্তোলন করা গেলে তা সারাবিশ্বের জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতার ইতি ঘটাবে। গবেষকরা আরো দাবি করেছেন যে, ইনার মঙ্গোলিয়ার একটি লোহার আকরিকের খনি থেকে ৫ বছরে যে বর্জ্য হিসেবে খনিজ পাওয়া যাবে, তাতে যে পরিমাণ থোরিয়াম থাকবে, তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে এক হাজার বছরের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব। উল্লেখ্য, এই খবরটি এমন এক সময়ে এলো যখন চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাওয়ার সোর্স সন্ধান করছে। গবেষণায় পুরো চীনে ২৩৩ টি থোরিয়াম সমৃদ্ধ অঞ্চলের সন্ধান মিলেছে। যদি এ কথা সত্য হয়, তাহলে চীনে যে পরিমাণ থোরিয়াম জমা আছে, তা আগের হিসাবকে অনেকটাই ছাড়িয়ে যাবে। প্রচলিত পারমাণবিক চুল্লিতে ব্যবহৃত হয় ইউরেনিয়াম-২৩২। তার চেয়ে কমপক্ষে ৫০০ গুণ বেশি থোরিয়াম জমা আছে। ফলে চীনের মুখে হাসির রেখা দেখা দিয়েছে।
পারমাণবিক চুল্লি তেজষ্ক্রিয় পদার্থকে ফিশন বা বিগলন নামে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি সৃষ্টি করে। এই প্রক্রিয়াকালে ওই তেজষ্ক্রিয় পদার্থ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়, অধিক স্থিতিশীল পদার্থে পরিণত হয়। তার সঙ্গে প্রচুর তাপশক্তি সৃষ্টি করে। এই তাপশক্তিকে ব্যবহার করে স্টিম টার্বাইন চালানো যায়। নিজে থেকে থোরিয়াম বিগলনযোগ্য নয়। এর অর্থ হলো ফিশন প্রক্রিয়ায় একে ব্যবহার করা যায় না। তবে ফিশন বিক্রিয়ার ভিত্তি হিসেবে তা ব্যবহার হয়। এর কারণ হলো থোরিয়াম হলো ‘উর্বর’। এর অর্থ হলো যখন নিউট্রনের সঙ্গে সংঘর্ষে বোমার মতো আচরণ করে তখন থেরিয়াম পরিবর্তিত হয়ে ইউরেনিয়াম- ২৩৩’তে পরিণত হতে পারে। মল্টেন-সল্ড রিঅ্যাকটরে থোরিয়াম মিশ্রিত হয় আরেকটি রাসায়নিক লিথিয়াম ফ্লোরাইডের সঙ্গে এবং তা প্রায় ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উত্তপ্ত হয়। এই মিশ্রণ তারপর নিউট্রনের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায় যতক্ষণ না কিছু থোরিয়াম পরিবর্তন হয়ে ইউরেনিয়াম-২৩২’তে পরিণত হওয়া শুরু করে। এটা একটি ফিশন বিক্রিয়া। ক্ষয় প্রক্রিয়ায় এই ইউরেনিয়াম তখন অধিক পরিমাণে নিউট্রন তৈরি করে। তা অতিরিক্ত থোরিয়ামের সঙ্গে বিক্রিয়ার মাধ্যমে জ্বালানিতে পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়া চলাকালে পারমাণবিক চুল্লি অসীম পর্যন্ত শক্তি উৎপন্ন করে।
পাঠকের মতামত
যুক্তরাষ্ট্র এখন একটা ফন্দিফিকির করে চিনে একটি জাতিগত দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে চাইলে যুদ্ধ লাগিয়ে দিতে পারে।
ঠিক বলিছেন ভাই। এখন শুধু দরকার সময়ের সঠিক ব্যবহার।
চীনের উচিত হবে তার দেশের জ্বালানির চাহিদা মিটিয়ে বহির্বিশ্বে থোরিয়াম রপ্তানি করা । বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সকল রাষ্ট্রে জ্বালানীর চাহিদা ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে । বাংলাদেশ ইতিমধ্যে জ্বালাানি শক্তির চাহিদা মিটাতে বহির্বিশ্বের বৃহৎ রাষ্ট্রের দ্বারস্থ হচ্ছে । চীন এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগী হলে বাংলাদেশ ও চায়না ফ্রেন্ডশীপ অনন্য উচ্চতায় পৌছাবে ।
চমৎকার সংবাদ মানব সভ্যতা বিনির্মানের।এখন শুধুমাত্র পররাজ্য গ্রাসের ইহুদী আধিপত্যবাদী মনোবৃত্তি পরিহার করলে এ বিশ্ব প্রকৃতই জান্নাত হতে পারে, নচেৎ জাহান্নামের অগ্নিগর্ভ তৈরী হয়ে মানব সভ্যতা বিলীন হতে বাধ্য।।