ঢাকা, ৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বাংলারজমিন

৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কাণ্ডে ফৌজদারি মামলা, বাদী ইউএনও

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
৬ আগস্ট ২০২২, শনিবার

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অন্তরালে ৪২ বিত্তবানের নামে ৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর খাস জমি বরাদ্দ দেয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষ না হতেই ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কলাপাড়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. হুমায়ুন কবিরকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার কলাপাড়া থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। বন্দোবস্ত গ্রহীতার তালিকায় রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকার মো. আনোয়ারুল ইসলাম, গলাচিপা উপজেলার চরমোন্তাজ গ্রামের আর্শেদ আলী তালুকদার এবং গলাচিপা পৌর শহরের সোহরাব হোসেনসহ অন্যরা কলাপাড়া উপজেলার। মামলার বাদী হয়েছেন কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক।  মামলায় বলা হয়েছে, ইউএনও (বাদী) গত ৩রা মার্চ থেকে ১৭ই মে পর্যন্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় মুজিব শতবর্ষের ১৯৫ ভূমিহীনের ভূমি ও বসতবাড়ি বন্দোবস্ত কেসের কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করার জন্য ভূমি অফিসে বিভিন্ন স্মারকে প্রেরণ করা হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদনপ্রাপ্ত কবুলিয়ত রেজিস্ট্রিী করার জন্য সার্ভেয়ার হুমায়ুনকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়। কিন্তু সার্ভেয়ার বাদীর স্বাক্ষর জাল করে আরও ৪২টি বন্দোবস্ত কবুলিয়ত বিত্তবানদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়।  এর আগে ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কান্ডে বুধবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব কে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার মো. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ ফৌজদারি মামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া সাব-রেজিস্ট্রিী অফিসের একজন নকলনবিশ, একজন দলিল লেখককে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। ১২ জন নকলনবিশকে অফিসিয়াল কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।  খেপুপাড়া সাব রেজিস্ট্রার রেহেনা পারভিন বলেন, ’বন্দোবস্ত কেসগুলোতে ইউএনও’র স্বাক্ষর সঠিক ছিল। জাল বা স্ক্যান করে করা হয়নি বিধায় তিনি দলিলগুলো রেজিস্ট্রি করেছেন।’ এদিকে ৪২ বিত্তবানের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ৭২ একর খাস জমি দলিল রেজিস্ট্রি কাজে ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, তার সই স্ক্যানিং করে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির এমন অপকর্ম করেছেন। জেলা রেজিস্ট্রার ও তদন্ত কমিটির সদস্য মো. কামাল হোসেন বলেন, ’বন্দোবস্ত দলিলে ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল না সঠিক ছিল, এটি সিআইডি’র এক্সপার্ট ওপিনিয়ন ছাড়া বলা যাবে না। তদন্ত কার্যক্রম শেষে সবকিছুই জানা যাবে।’ তদন্ত কমিটির অপর সদস্য কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম চলছে। বন্দোবস্ত কেসের স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনো খতিয়ে দেখা হয়নি।’   তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ’বৃহস্পতিবার জেলা রেজিস্ট্রার ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে।’  তিনি বলেন, তদন্তের সঙ্গে মামলার কোনো সম্পর্ক নাই। তার স্বাক্ষর জাল হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন, তাই তিনি বাদী হয়ে মামলা করেছেন, এটা তার বিষয়। আমাদের তদন্তের বিষয়টি আলাদা। আমরা ইউএনও, এসিল্যান্ড, সাব-রেজিস্ট্রার সবার বক্তব্য নেবো। আরও যাদের নাম আসবে আমরা তাদেরও বক্তব্য নেবো। তদন্ত শেষে বলা যাবে কে দোষী আর, কে দোষী না।’

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status