শেষের পাতা
এবার বিশেষ সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন
মো. আল আমিন
২ আগস্ট ২০২২, মঙ্গলবারসদ্য সমাপ্ত সংলাপ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ পর্যালোচনা করে শিগগিরই একটি কৌশলপত্র প্রস্তুত করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর এই কৌশলপত্র সামনে রেখে বিশেষ সংলাপে বসবে কমিশন। গতকাল নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবগুলো নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই খসড়াটি চূড়ান্ত্ত করা হবে। এরপর ফের গণমাধ্যম, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ জন ও দলগুলোকে ডাকা হবে। এক্ষেত্রে সংলাপে সাড়া না দেয়া বিএনপি সহ অন্যান্য দলগুলোকেও ডাকা হবে। বিশেষ সংলাপটি অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী। সেখানে সবাই এক মঞ্চেই থাকবে।
এক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রুপ থেকে চার-পাঁচ জন করে অংশ নেবে। সংলাপে কৌশলপত্রটি উপস্থাপন করে অংশীজনের কাছ থেকে মতামত নেয়া হবে।
আলমগীর বলেন, একজন বলেছেন অনলাইনে ভোট নেয়ার জন্য। এটা তো এখনই পারবো না। অর্থনৈতিক দিক থেকে পারবো কিনা- এসব আলোচনা করতে করতে যেটা বাস্তব, সেটা হয়তো আমরা নেবো। অন্যগুলো হয়তো বাদ রাখতে হবে। আপনি হয়তো খুব ভালো পরামর্শ দিয়েছেন, সেটা হয়তো এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। যেগুলো সম্ভব সেগুলো হয়তো আমরা নেবো। পরবর্তীতে আবার সংলাপ হবে। এই রোডম্যাপ করার পরে আবার আসবে বিশেষ আলোচনা। সেই রাউন্ড কিন্তু আমাদের সামনে রয়েছে। সেই রাউন্ডে বলা হবে যে, আপনারা এইটা করতে বলেছিলেন, আমরা তো করতে চাচ্ছি। কিন্তু এগুলোতে এই চ্যালেঞ্জ আছে, এখন বলেন- আমরা কী করবো। কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবো।
তিনি বলেন, বিশেষ সংলাপে হয়তো পাঁচটা গ্রুপ একসঙ্গে বসে আলোচনা করবে। প্রত্যেক গ্রুপ থেকে হয়তো কয়েকজন করে আসবে। এক্ষেত্রে যেই দাবিগুলো খুব বেশি, সেগুলো নিয়ে হয়তো আলোচনা হবে। এবারের মতো বিভিন্ন মহলের সঙ্গে পৃথক পৃথক নয়। হয়তো দিনব্যাপী আলোচনা হবে। তিনি বলেন, বিএনপিকে আবার অবশ্যই ডাকবো। আমাদের কাছে সবার গুরুত্ব সমান। কেউ ছোট না, কেউ বড় না। যখনই প্রয়োজন হবে ডাকবো। শুধু তাই নয়, যখন কোনো দল আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইবে আমরা বসবো।
বিএনপি’র নির্বাচনে না আসার ঘোষণা নিয়ে সংকটকে রাজনৈতিক সংকট হিসেবেই দেখছে ইসি। এ সংকট মোকাবিলা রাজনৈতিকভাবেই করতে হবে। আর নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েও তারা কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, বিশেষ সংলাপে আমাদের কৌশলপত্রে উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, সুবিধা-অসুবিধা, অর্থ সংক্রান্ত বিষয়, লোকবল, চ্যালেঞ্জ, ইভিএম ইত্যাদি থাকবে। যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, সেগুলো কীভাবে মোকাবিলা করতে পারি, তা নিয়েই আলোচনা হবে।
সংলাপে সেনাবাহিনীর বিপক্ষে কেউ বলেনি উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, একটা রাজনৈতিক দলের একজন প্রস্তাব দিলো সব কেন্দ্রে সেনাবাহিনী দেয়ার জন্য। তখন আমি উনাকে একটা পাল্টা প্রশ্ন করে বলেছিলাম, আপনি কি জানেন ৪০ হাজার কেন্দ্র আছে। তো ৪০ হাজার কেন্দ্রে আমরা যদি সেনা দিতে চাই কতো আর্মি দরকার? আমাদের তো এত অফিসার এবং আর্মি নাই। তখন আমরা কি করবো? তখন ক্যান্টনমেন্ট খালি করে দিলেও, নৌ-বাহিনী, বিমান বাহিনী দিলেও তো হবে না। তখন তিনি বললেন যে, না না, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দেবেন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দিলেও তো হিসাব করতে হবে। কতো লাগবে-এগুলো তো বললে হবে না তো ভাই। একটা জিনিস তো হিসাবনিকাশ করা লাগবে।
ইভিএমের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু দল ইভিএমের পক্ষে কথা বলেছে, আবার কিছু দল বিপক্ষে কথা বলেছে। আমরা পর্যালোচনা করে দেখবো কোন পক্ষ বেশি নাম্বার পেয়েছে। যে পক্ষ বেশি নাম্বার পাবে, সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।