ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ রজব ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

যৌনপল্লী থেকে ৩ কিশোরী উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে
১২ জানুয়ারি ২০২৫, রবিবার

ময়মনসিংহে যৌনপল্লী থেকে ৩ কিশোরীরকে উদ্ধার করে পরিবারে ফিরিয়ে দিলো ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম।
কিশোরী ঝর্ণার (ছদ্মনাম) পরিবারে সারা বছর অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। তাই স্বপ্ন দেখেন নিজে টাকা রোজগারের। দুই বছর আগে সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে রংপুর মহানগরীর বাসা থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতে ঢাকায় যান। সেখানে সাগর নামে এক যুবকের খপ্পরে পড়েন ঝর্ণা। ওই যুবক তাকে বেশি বেতনে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। একপর্যায়ে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত পানি পান করিয়ে অজ্ঞান করে ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকার রমেশ চন্দ্র সেন রোডের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়। একই দশা হয় আরও দুই কিশোরীর। এদের মধ্যে একজনের নাম জবা (ছদ্মনাম) ও আরেক জনের নাম তিথি (ছদ্মনাম)। তাদের সুখের সংসার থাকলেও বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পরই ওই দুই কিশোরী সৎ মায়ের বকাবকি আর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চাকরির পরিকল্পনা করেন। ২০২৩ সালের আগস্টে রংপুরের বাড়ি থেকে ঢাকায় যান জবা। পরে এক ব্যক্তির খপ্পরে পড়েন। বিউটি পার্লারে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ময়মনসিংহের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়। অপরদিকে তিথি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বরিশালে গ্রামের বাড়ি থেকে চাকরির সন্ধানে ঢাকায় এলে এক ব্যক্তি তাকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে কৌশলে নিয়ে যায় ময়মনসিংহের যৌনপল্লীতে। সেখানে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। এরপর থেকে ওই তিন কিশোরীর জীবন কাটতে থাকে যৌনপল্লীতে। অবশেষে তিন কিশোরীরকে উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কিশোরী ঝর্ণা যৌনপল্লী থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সুযোগ পাচ্ছিলো না। গত বৃহস্পতিবার সুকৌশলে তার মায়ের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। যৌনপল্লীতে আসার ঘটনাটি মা-বাবাকে খুলে বলে। এমতাবস্থায় তার বাবা-মা মেয়েকে ফেরত নেয়ার জন্য পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমের নির্দেশে ওদিনই গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশ যৌনপল্লীতে গিয়ে ঝর্ণাসহ আরও দুই কিশোরীরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, কোনো মেয়ে পরিবারের লোকজন ছাড়া দূরে কোথাও গেলে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। তা না হলে, এসব কিশোরীর মতো অন্য যে কারও জীবনে এমন অন্ধকার নেমে আসতে পারে। তবে পুলিশ যেকোনো অপরাধীদের ধরতে তৎপর রয়েছে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status