বাংলারজমিন
নলছিটিতে কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়েও সরকারি সাহায্য পেলেন না ক্ষতিগ্রস্তরা
নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
১১ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবারঝালকাঠির নলছিটিতে ঘুষের টাকা দিয়েও ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করেছেন বাছাই প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত এক ট্যাগ অফিসারের বিরুদ্ধে। উপজেলার মগড় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা ইউপি সদস্য আশা আক্তার ও ময়না বেগম এ অভিযোগ করে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উজ্জ্বল কৃষ্ণ বেপারী। তিনি মঙ্গলবারই নলছিটি থেকে ঢাকা হেড অফিসে বদলি হয়েছেন।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালে উপজেলার মগড় ইউপি’র ১৫২ জন ক্ষতিগ্রস্তকে সম্প্রতি গৃহ নির্মাণের জন্য সরকারি সাহায্য জনপ্রতি এক বান্ডিল টিন ও ৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। ইতিপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক নির্দেশ মোতাবেক ওই ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তার কাছে দাখিল করেন ইউপি সদস্যরা। তাদের দেয়া নামের তালিকা সরজমিন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উজ্জ্বল কৃষ্ণ বেপারীকে ওই ্্ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়। ইউপি সদস্যদের দেয়া তালিকা বাছাইয়ে ঠিক রেখার আশ্বাস দিয়ে ওই কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে ঘুষ নেন। ইউপি সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ওই ঘুষের টাকা তোলেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে টিন ও টাকার চেক বণ্টনকালে ইউপি সদস্যদের দেয়া তালিকার অনেকেই এই সাহায্য পায়নি। ঘুষের টাকা দিয়েও সাহায্য না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় ক্ষতিগ্রস্তরা।
ইউপি সদস্য আশা আক্তার জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ জনের নামের তালিকা ইউএনও’র মৌখিক নির্দেশে তার কাছে জমা দেন তিনি। সরজমিন যাচাইয়ে তা ঠিক রাখার জন্য ট্যাগ অফিসার উজ্জ্বল কৃষ্ণ বেপারীকে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে ১৫ হাজার টাকা দেন। কিন্তু তার দেয়া তালিকার ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ সাহায্য পায়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্তরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন। তারা ভাবছেন তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি ওই কর্মকর্তাকে টাকা দেননি। তিনি আরও জানান, ওই কর্মকর্তা ১২ জন ইউপি সদস্যের কাছ থেকেই এই হারে টাকা নিয়েছেন। ময়না বেগম জানান, তিনি ৫ জন ক্ষতিগ্রস্তের থেকে এনে ওই কর্মকর্তাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তারাও কেউ সাহায্য পায়নি।
এ ব্যাপারে উজ্জ্বল কৃষ্ণ বেপারী সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরজমিন যাদের ঘরবাড়ির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ দেখেছি, তাদের নাম ঠিক রেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তালিকা দিয়েছি। তাতে অভিযোগকারী ওই মেম্বারদের দেয়া তালিকা থেকে যারা সাহায্য পাওয়ার যোগ্য তাদের কয়েকজনের নামও দিয়েছি। কিন্তু কেন তারা সাহায্য পায়নি তা আমি বলতে পারবো না। মেম্বারদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে তারা এসব কথা বলছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সমস্ত উপজেলায় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে টিন ও টাকার চেক স্বচ্ছভাবে বণ্টন করা হয়েছে। আমি ওই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এরপর ওই মেম্বারদের বলেছি যদি একান্ত্ত ক্ষতিগ্রস্ত কেউ সাহায্য না পেয়ে থাকেন, তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে।