শেষের পাতা
গোপালপুরের জনসভায় তারেক রহমান
দেশে উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতি চালু করতে চায় বিএনপি
গোপালপুর প্রতিনিধি
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারস্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে গেলেও তাদের দোসরদের নানামুখী ষড়যন্ত্র থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, চক্রান্ত হলে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে হবে। আগামীতে বিএনপি দেশে উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতি চালু করতে চায়। প্রায় ১৭ বছর পর গোপালপুরের জনসভায় উপস্থিত মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল তারেক রহমানের বক্তব্য। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি বিকাল পৌনে ৫টায় জনসভায় তিনি যুক্ত হলে হাজার হাজার বিএনপি’র নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ তাকে অভিবাদন জানান। প্রায় ৩৫ মিনিটের বক্তব্যে বেশির ভাগ জুড়ে তিনি টাঙ্গাইল জেলার বিখ্যাত নানা পণ্যের সম্ভাবনা নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা জানান। বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তি হলে দেশ এগিয়ে যাবে। আর একমাত্র রাজনৈতিক সরকারের পক্ষেই জনগণের সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। সেজন্য প্রয়োজন জনগণের সমর্থন। দেশের জনগণের সমর্থনে আমরা সে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেলে সেদিনও আপনাদের সমস্যার কথা আমার মনে থাকবে। গতকাল টাঙ্গাইলের গোপালপুরে সাবেক মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবিতে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। জনসভায় খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে গোপালপুরের সূতি ভিএম হাইস্কুল মাঠের জনসভায় যোগ দেন বিএনপি’র হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। স্লোগানে স্লোগানে মুক্তির দাবি জানান তাদের প্রিয় নেতা আবদুস সালাম পিন্টুর।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমি রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে চাই না। আমার পিতা আপনাদের সবার প্রাণের মানুষ, তিনি আমাকে ছোটবেলা থেকেই শিখিয়েছেন- কীভাবে দেশের খেটে খাওয়া কৃষক, মজুর আর সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যেতে হয়, আর আমার মা আপনাদের সবার প্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাকে শিখিয়েছেন মানুষের ভালোবাসা অর্জনের গুরুত্ব, শিখিয়েছেন দেশের মা-বোনের সমস্যা সমাধানে কীভাবে কাজ করতে হয়। তারেক রহমান বলেন, আমি জানি টাঙ্গাইলের শাড়ি আর চমচমের কথা। যদিও টাঙ্গাইলের শাড়ির সঙ্গে আপনাদের পাশের উপজেলা দেলদুয়ারের নাম সবাই বলে, কিন্তু আমি জানি- এই গোপালপুরেও টাঙ্গাইলের বিখ্যাত শাড়ি তৈরি হয়। এখানকার মা-বোনেরা সুতা রঙ করেন, সেগুলো শুকান আর মাকুতে ভরেন এবং ভাইয়ারা সেটা তাঁতে লাগিয়ে অসাধারণ সুন্দর শাড়ি তৈরি করেন। আপনারা তাঁতের কারখানা আরও বাড়ান, দেলদুয়ারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামুন। প্রতিযোগিতা করলে সবারই মান উন্নত হবে। আমি জানি সুতার দাম, রঙের দামের সঙ্গে আপনারা কুলিয়ে উঠতে পারেন না। আবার ঠিকমতো বাজারজাতও করতে পারেন না। আমরা যদি সুযোগ পাই; দেশে গবাদিপশুর সংখ্যা যেমন বাড়াবো, তেমনি বদ্ধ খাল আর নদী আবারো খনন করবো। আর টাঙ্গাইলের এই চমচম বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে টিনজাত হয়ে পৃথিবীর সব কোণায় পৌঁছে যাবে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পাটের নতুন নতুন ব্যবহার বাড়াতে হবে, আবিষ্কার করতে হবে। ব্যাগ, বোর্ড, জুতা, স্যান্ডেল, আসবাবপত্র তৈরির কাজে পাটের ব্যবহার উদ্ভাবন করতে হবে। আর পাটকাঠি দিয়ে শুধু পার্টিকেল বোর্ড নয়, এটারও নতুন নতুন ব্যবহার আবিষ্কার করতে হবে পরিবেশ বাঁচাতে। পাটের বংশ ইতিহাস বা জেনেটিক ভালো করে রপ্ত করে উন্নতমানের উচ্চ ফলনশীল বীজ আবিষ্কার করতে হবে। কথা দিচ্ছি মহান আল্লাহ আমাদের সুযোগ দিলে আমি এর একটি কথাও ভুলে যাবো না।
তারেক রহমান বলেন, ভূমিহীন মানুষের সংখ্যাও এখানে অনেক বেশি। এসব দিকে নজর দিতে হবে। আর সবার আরেকটি বড় সমস্যা হলো যমুনা নদীর ভাঙন, বিশেষ করে ভুয়াপুর উপজেলায়। এ ব্যাপারে অনেক বাস্তবমুখী আর স্থায়ী পরিকল্পনার কথা ভাবতে হবে।
গোপালপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমেদ আজম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, জেলা বিএনপি সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ জেলা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল সহ সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বয়স ৭৩। এর ভিতর যত সরকার এসেছে সবার চরিত্র ও কর্মকাণ্ড দেখেছি । নির্বাচনের আগে সবাই লম্ভা আশ্বাস দেয়। এরাও দিয়েছিল। ক্ষমতায় গিয়ে ওয়াদা পূরণ করে নি ।। যেহেতু বিকল্প কোন দল আপাতত দেখছি না, তাই হয়ত ক্ষমতায় যাবে । তবে যেভাবে কল্পনাতীত একটি আন্দোলন হয়েছিল, সেভাবেই কল্পনাতীত একটি সৎ লোকের দল যদি গঠিত হয়ে ক্ষমতায় যায়, তাহলে আন্দোলনের অর্জন ফলপ্রসূ হবে ।
ক্ষমতা না আসতেই যেভাবে লুটপাট ও দুর্নীতি আরম্ভ করেছে আপনার দল আপনারা ক্ষমতায় আসলে দেশের অবস্থা আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ হবে। ১৭ বছরের ক্ষুধার্ত বাঘের সামনের রুটি হালুয়া দিলে সবকিছু খেয়ে ফেলবে। আগে কর্মী সামলান। আওয়ামী লীগও দেখলাম বিএনপি ও দেখলাম এবার ক্ষমতায় দেখতে চাই জামাতে ইসলাম। এজন্য আমাদের আফগানিস্তানের আদর্শ হিসেবে মানা উচিত।