বাংলারজমিন
তেল-গ্যাস কোম্পানির কাজ বাগিয়ে নিতে মৌলভীবাজার যুবদল সভাপতি উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারমৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন বাদশা মিয়া কাজল নামের এক বিএনপি নেতা। জিডিতে উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে তেল-গ্যাস কোম্পানির কাজ বাগিয়ে নিতে মোবাইল ফোনে ও লোকজন পাঠিয়ে হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার (৩রা সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল থানায় জিডি করেন এই বিএনপি নেতা। উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি এম. নাসের রহমান ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী ও জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বরাবর চিঠি দিয়েছেন তিনি।
বাদশা মিয়া কাজল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের সিরাজনগর এলাকার শেখ আব্দুল বারিকের ছেলে ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি। জানা গেছে, মার্কিন বহুজাতিক তেল- গ্যাস কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশের কাছ থেকে কালাপুর এলাকায় একটি কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডকে নিযুক্ত করা হয়। গত ১৯শে আগস্ট তারা সাব- ঠিকাদার হিসেবে বাদশা এন্টারপ্রাইজ নামের স্থানীয় একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের জন্য চুক্তি করেন।
বাদশা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাদশা মিয়া কাজল থানায় করা জিডিতে উল্লেখ করেন, গত ১৯শে আগস্ট মৌলভীবাজার গ্যাসফিল্ড এমবি-৯ ও এমবি-৫ এর মীর আক্তার কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সাব-কন্ট্রাক্টে একটি কাজের চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করি। কাজ পাওয়ার পর ২২শে আগস্ট বিকাল ৫টা ২০ থেকে ৫টা ২৫ মিনিটের মধ্যে একটি নম্বর (০১৭১১-১৯৭১১৬) থেকে কল করে মৌলভীবাজার জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে কাজটি উনি করবেন বলে জানান। আমি ওনাকে অনুরোধ করার জন্য কল করলে উনি আমার কল আর রিসিভ করেননি।
পরে উনি আমার সঙ্গে চুক্তিনামায় স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মান্নানের সঙ্গে কথা বলে আমাকে কাজ না দেয়ার জন্য বলেন। এছাড়া উনি লোক পাঠিয়ে কোম্পানির ওই কর্মকর্তাকে বারবার নিষেধ করেন এবং শ্রীমঙ্গল শহরের উনার নিজস্ব লোক দিয়ে আমাকে হুমকি-ধমকি দেন। আমি একজন ব্যবসায়ী ও বিএনপি’র সক্রিয় কর্মী।
জিডিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমি নিরুপায় হয়ে বিষয়টি মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম. নাসের রহমান ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরীকে জানাই। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ন্যায় ও সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।
মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল মান্নান বলেন, কাকিয়ার বাজার এলাকায় আমাদের যে প্রজেক্ট রয়েছে, সেটা আমরা বাদশা এন্টাপ্রাইজকে সাব কন্ট্রাক্ট হিসেবে কাজ দিই। এর আগেও তারা আমাদের কাজ করেছে। আমরা সাধারণত লোকাল কমিউনিটিকে জড়িত করি কাজের জন্য। জাকির হোসেন নামের একজন ব্যক্তি তার লোক দিয়ে আমাকে ফোন দিয়ে অনুরোধ করেছিলেন কাজটি ওনাকে দেয়ার জন্য। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাকির হোসেন উজ্জ্বল মানবজমিনকে বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে হেয় করার জন্য ও আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য এসব করা হচ্ছে। কিছুদিন আগে জেলা বিএনপি’র সভাপতির সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর থেকে একটি চক্র দলের ভেতরে আমাকে কালার করার জন্য এসব করাচ্ছে। এছাড়া কোম্পানির ম্যানেজার যিনি বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি পরে তা প্রত্যাহার করেছেন। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম. নাসের রহমান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কড়া নির্দেশনা, দলের কেউ যেন বিশৃঙ্খলা না করেন। আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং দলের কেন্দ্রীয় অফিসে পাঠিয়েছি- তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আলী মাহমুদ বলেন, থানায় জিডি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি।