বাংলারজমিন
চট্টগ্রামে আবার মাঠে ছাত্র-জনতা ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার অঙ্গীকার
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৪ আগস্ট ২০২৪, বুধবার কয়েকদিনের বিরতির পর চট্টগ্রামের রাজপথ আবারো দখলে নিয়েছে ছাত্র-জনতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব পয়েন্টে পুলিশ-আ’লীগের গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেসব পয়েন্ট অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করেছে তারা। এ সময় তারা ৫ই আগস্টের ঐতিহাসিক বিপ্লবের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার অঙ্গীকার করেন।
মঙ্গলবার বিকালে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মিছিল-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে নগরীর ষোলশহর থেকে বহদ্দারহাট এলাকা। কর্মসূচি চলার সময় শিক্ষার্থীরা মুরাদপুর ও বহদ্দারহাট মোড়ে সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করেন এবং শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা করেন। সেই দুইটি স্থানে গত ১৬ ও ১৮ই জুলাই গুলিতে ৭ জন নিহত হয়েছিলেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ নামে একটি কর্মসূচি শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকাল তিনটায় হাজারো শিক্ষার্থী ষোলশহর স্টেশনে জড়ো হন। সেখানে প্রায় ৪০মিনিট ধরে তারা সমাবেশ করেন। এরপর মিছিল নিয়ে মুরাদপুর মোড়ে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান শেষে একটি অংশ মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাট মোড়ে যান। আরেকটি অংশ শুলকবহর এলাকায় অবস্থান নেন।
এর আগে ষোলশহর মোড়ে সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ফ্যাসিবাদকে কেউ প্রশ্রয় দেবেন না। যদি কেউ প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করে, গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে, আপনারা সবাই মিলে ঐক্যবব্ধ হয়ে প্রতিহত করবেন। যেকোনো মূল্যে আমাদের ভাইদের রক্ত বৃথা যেতে দেয়া যাবে না। শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। যদি কোনোভাবে কোনো সমস্যা তৈরি হয়, তাহলে আমরা আমাদের শহীদ ভাইদের জবাব দিতে পারবো না। যারা রক্ত দিয়ে গেছেন তাদের জবাব দিতে পারবো না। সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ উল্লেখ করে বলেন, এই বাংলাদেশে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের। আমরা বাংলাদেশি। আমাদের আন্দোলনে আমার হিন্দু বন্ধুরা এসেছে, মুসলিম বন্ধুরা এসেছে, খ্রিস্টান বন্ধুরা এসেছে, প্রত্যেক ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাই এসেছে। যারা মন্দিরে হামলার চেষ্টা করেছে তাদের আমরা প্রতিরোধ করবো। আমরা ঢাল হয়ে দাঁড়াবো।
কেউ চাঁদাবাজি করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে জানিয়ে রাফি বলেন, এটা সাধারণ শিক্ষার্থী আর সাধারণ মানুষের আন্দোলন, বিজয়ও তাদের। আমি যেমন, আপনিও তেমন। এখানে আলাদা কিছু নেই, আলাদা কোনো পদ নেই। যখন আমরা মাঠে নামবো, এখানে আমরা সবাই এক। যদি কেউ সমন্বয়কের নামেও যদি চাঁদাবাজি করে, অদের প্রতিহত করবেন। কোনো বৈষম্যের জায়গা বাংলাদেশে হবে না বলেও জানান তিনি।