শেষের পাতা
সিলেটে বাড়ি বাড়ি অভিযান, গ্রেপ্তার ১১৯
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৪ জুলাই ২০২৪, বুধবার
সিলেটে বিএনপি’র অঙ্গসংগঠন ও বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালানো হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাতের বেলা নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি এ তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন। এতে করে সিলেট বিএনপি ও বিরোধী জোটের নেতারা ঘরছাড়া রয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা জানিয়েছেন, পুলিশের অভিযানের কারণে অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছেন। আবার গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বহু নেতাকর্মী। শুধু সিলেট নগরীই নয় উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। আর এ অভিযানের কারণে নতুন করে অস্বস্তিতে রয়েছেন দাবি করেছেন নেতারা। গত এক সপ্তাহের ঘটনায় সিলেট নগর ও জেলায় মোট ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার সূত্র ধরে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। জানান, অযথা কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। গতকাল পর্যন্ত জেলা ও নগর পুলিশের অভিযানে ১১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত ১২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ৫ জন, জালালাবাদ থানায় ২ জন, দক্ষিণ সুরমা থানায় ২ জন, শাহপরাণ থানার ২ জন, মোগলাবাজার থানায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের চলমান ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, সিলেট নগর এলাকায় দায়ের করা মামলায় গতকাল পর্যন্ত মোট ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে দক্ষিণ সুরমা থানায় পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনায় মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি ইয়ারদৌস হাসান। তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছ থেকে লুট হওয়া রিভলবার এখনো উদ্ধার হয়নি। পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে রয়েছে। অস্ত্রের সন্ধান পেতে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা ও সিনিয়র এএসপি সম্রাট হোসেন জানিয়েছেন, গতকাল সিলেট জেলায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিলেট জেলায় মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিলেট বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় বিএনপি’র অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এখন গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে। এ কারণে বিএনপি’র অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাড়িছাড়া। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে জানিয়েছেন, প্রতি রাতে তল্লাশির নামে নেতাকর্মীদের পরিবারকে হেনস্তা করা হচ্ছে। সিনিয়র নেতাদের বাসায় তল্লাশি না হলেও ওয়ার্ড নেতা ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাদের বাসায় বাসায় অভিযান ও তল্লাশি হচ্ছে।
এদিকে সিলেটের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি করছে পুলিশ। এ কারণে নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া রয়েছেন। সিলেট জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মইনুল হক জানিয়েছেন, গতকাল ভোররাতে তার বিশ্বনাথের মাউনপুরের গ্রামের বাড়িতে অভিযান ও তল্লাশি চালিয়েছে। এ সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। একইসঙ্গে বিএনপি’র আরও কয়েকজন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হয় বলে জানান মইনুল।
শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবি দ্রুত মেনে নিন
দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী নাসির উদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন চৌধুরী, উপদেষ্টা নেছারুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন গতকাল এক বিবৃতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবি জানিয়ে বলেন, সচেতন দেশবাসীর প্রশ্ন- সরকার এই তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ তৈরি করার পরিবেশ কেন দিলেন। যারা দুর্যোগময় মুহূর্তে কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন তাদের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়াই মঙ্গলজনক বলে বিবৃতিতে দাবি করেন নেতৃবৃন্দ।
ফটো সাংবাদিকদের দোয়া মাহফিল
শুক্রবার নগরীর কোর্ট পয়েন্টে পুলিশের গুলিতে নিহত সিনিয়র ফটোসাংবাদিক এটিএম তোরাবের দুনিয়ার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল করেছে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিশেন সিলেট বিভাগীয় কমিটি। গতকাল বিকালে নগরীর কালেক্টরির জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলে সিলেটের সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল সাংবাদিক নেতারা অংশ নেন। এতে বক্তব্য রাখেন ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম।
পাঠকের মতামত
পুলিশ ভাইদের কাছে আমার প্রশ্ন - তাদের সবার পরিবার কি মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার উপকার ভোগী ? ছাত্রদের দাবি ও আন্দোলন তো সবার জন্য বৈষম্য হীন সুবিধার দাবি । তা হলে এত নিষ্ঠুর আচরন কেন ? এ আন্দোলন তো কোন রাজনৈতিক দলের নয় । তাহলে রাজনৈতিক দলের নেতাদের গ্রেফতার কেন ? যাদের বয়স ৫০ এর নীচে তারা হয়ত জানেন না পাকিস্তান সরকার ছাত্রদের আন্দোলন দমন করতে পারে নি । তাই ছাত্রদের আন্দোলনের কাছে আত্মসমর্পণ করে শেখ মুজিব কে ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল । জেল থেকে মুক্তি দিয়েছিল ।