শেষের পাতা
কোনো ভাবেই তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ দেয়া যাবে না: ১৪ দল
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ জুলাই ২০২৪, মঙ্গলবারকোটা বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়কে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা বলেছেন, হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আর আন্দোলনের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। আমরা মনে করি, আমাদের মন্ত্রীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের যে আলোচনা, সেই আলোচনার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত। কোনো ভাবেই তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ দেয়া যাবে না। দ্রুত শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে তাদের শিক্ষা জীবন শুরু করবেন এমনও আশাবাদ ব্যক্ত করেন জোটের নেতারা। গতকাল রাজধানীর ইস্কাটন রোডস্থ চৌদ্দ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর বাসভবনে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের বৈঠকে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুচিন্তিত পরিকল্পনার মধ্যদিয়ে যে পদক্ষেপগুলোর কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন। পাশাপাশি দেশের জনগণ যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন, তার জন্য পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে। এর জন্য জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, সরকারবিরোধী যে আন্দোলন, এটা ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত ও যুক্তিহীন। কোটা বিরোধী আন্দোলনের কারণে সরকার ২০১৮ সালে একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ওই সরকার সম্পূর্ণ কোটা পদ্ধতি বাতিল করে। যখন এর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে রিট করা হলো, তখন কিন্তু সরকার পক্ষই চ্যালেঞ্জ করেছে। তিনি বলেন, সরকার পক্ষ কোটার বিরুদ্ধে ডিফেন্ড করেছে এবং প্রতিটা স্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল বিরোধিতা করেছে। তারপরও সরকারবিরোধী আন্দোলন হয়েছে। এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য ও ষড়যন্ত্র আছে বলে আমরা মনে করি। আমির হোসেন আমু বলেন, যেহেতু কোটা আন্দোলনকারীরা উপলব্ধি করতে পেরেছে তাদের আন্দোলন কেউ হাইজ্যাক করছে, যারা আন্দোলনের সঙ্গে মিশে জ্বালাও-পোড়াও করেছে তাদের সঙ্গে আমাদের কোনোই সম্পৃক্ততা নেই। আগুন সন্ত্রাস আমাদের বিষয়বস্তু নয়, আমরা এটাকে প্রত্যাখ্যান করছি। এরপরই স্পষ্ট হয়ে যায় এর পেছনে কারা ছিল। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, হাইকোর্টের রায়, কোটা আন্দোলনকারী ও সরকার- মাঝে কোনো বিরোধ নেই। বিএনপি-জামায়াতের জঙ্গিরা যে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে সেটা দমন করা রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয়ে বিলম্ব করলে তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ করে দেবে। কাজেই মন্ত্রীদের সঙ্গে ছাত্রদের আলোচনা দ্রুত করতে হবে। বিষয়টি শেষ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো ভাবেই তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ দেয়া যাবে না। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্ত্রাস দমন করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে এবং জনগণের সুবিধার জন্য ইন্টারনেট সেবা চালু করবে। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, বাসদের রেজাউর রশীদ খান, গণতন্ত্রী পার্টির ডা. শহীদুল্লাহ শিকদার, গণআজাদী লীগের এস কে সিকদার প্রমুখ।