ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

আপিল বিভাগের রায়ের আগে সরকার কিছু করবে না

স্টাফ রিপোর্টার
১৪ জুলাই ২০২৪, রবিবারmzamin

আপিল বিভাগের রায়ের আগে সরকার কোটা নিয়ে কিছু করবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি বিচারাধীন বিষয়, আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের অনেক দাবি ও বক্তব্য সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী। সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির আওতায় প্রণীত কোনো সরকারি নীতি শিক্ষার্থীদের একটা অংশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন হতে পারে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সংবিধানের আলোকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, ২০১৮ সালে যখন কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়, তখন এই রাজনৈতিকভাবে পরাজিত অশুভ শক্তি কোটার ওপর ভর করেছিল এবং সড়কে যে আন্দোলনে ভর করে রাজনৈতিক রূপ নেয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তখন এই অশুভ শক্তির হাতে আমাদের ধানমণ্ডি পার্টি অফিসও আক্রান্ত হয়। ওই মহলটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করার জন্য এবং এদের ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরির ক্ষেত্র প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও অনেক বক্তব্য আমাদের সংবিধানের, সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিরোধী। সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনা তার আলোকেই হবে। রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে সব নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র। সেখানে বলা হয়েছে, মানুষের সামাজিক অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্য নিরোধের জন্য নাগরিকদের মধ্যে সুষম বণ্টন এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি আরও বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে, জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অথচ গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হতাশাজনকভাবে কমেছে। কোটা না থাকায় পুলিশে মাত্র চারজন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছে, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছে দুজন। ৫০টি জেলায় নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ পায়নি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পায়নি। সংবিধানের উল্লিখিত বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাতে সরকারি চাকরিসহ সবক্ষেত্রে সবাই যেন সমানভাগে সুযোগ পায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে। সেজন্যই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশে কোটা সবচেয়ে কম দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় নিয়োগ প্রায় ৭০ শতাংশের মতো,  ৩৩, ৩৪, ৩৫ এই তিনটি বিসিএসে ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যেখানে কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ২৮ শতাংশ। শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে নেয়া হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে সেখানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই কোটার ভিত্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে কোটায় ভারতে ৬০ ভাগ, পাকিস্তানে ৯২.৫ ভাগ, নেপালে ৪৫ ভাগ, শ্রীলঙ্কায় ৫০ ভাগ। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, আমাদের আর্থসামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন রয়েছে। ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাঁপা, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status