বাংলারজমিন
ফটিকছড়িতে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার অভিযোগে তদন্ত কমিটি
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
৩ জুলাই ২০২৪, বুধবারচট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে স্থানীয়দের স্বজন সাজিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিচ্ছেন রোহিঙ্গারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এমনটা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি স্থানীয় এক বাসিন্দা লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেজবাহ উদ্দিন, ফটিকছড়ি থানার পুলিশ পরিদর্শক আবু জাফর সালেহ তুহিন এবং উপজেলা নির্বাচন কমিশনার অরুণ উদয় ত্রিপুরাকে নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার মধ্যকাঞ্চননগর গ্রামের গুয়া মিয়া চৌধুরীর বাড়িতে ৭-৮ বছর আগে রোহিঙ্গা সাজেদা আকতার ওরফে বেগমা ও তার স্বামী হাছান শ্রমিক সেজে বসবাস শুরু করেন। পরে স্থানীয়দের স্বজন সাজিয়ে বিভিন্ন কৌশলে পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র বানানোর চেষ্টা করেন। জনপ্রতিনিধি ও দালালের মাধ্যমে তারা এনআইডি তৈরি করেন। তাদের একজন ওমানেও পাড়ি জমান। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন অপরাধ ও মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়েন। পরে টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লোকজনের অবাধ বিচরণের ফলে বিষয়টি সবার নজরে আসে।
অভিযোগকারী মো. ওসমান করিম বলেন, এলাকার একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে যাওয়া বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আশা করি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করছে বলে কর্মকর্তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, রোহিঙ্গারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং নির্বাচন কার্যালয়ের কতিপয় কর্মচারীকে ম্যানেজ করে উপজেলার মধ্যকাঞ্চননগর গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে এনআইডি কার্ড বানান। টাকার বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে তারা এসব করেন। উপজেলা বার কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এনআইডি প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি সহজ নয়। ৫টি ধাপ অতিক্রম করে এই কার্ড পাওয়া যায়। আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর তথ্য সংগ্রহ, পরিচিতি যাচাই, সার্ভারে প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদনকারীকে কার্ড দেয়া হয়। ধাপগুলো বেশ সময় সাপেক্ষও বটে। এক্ষেত্রে গুরুতর অনিয়ম হয়েছে। কাঞ্চননগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. দিদারুল আলম বলেন, তারা কীভাবে ভোটার হয়েছেন তা জানি না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।