প্রথম পাতা
বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ববাদী শাসনের সমর্থনে চীন
মানবজমিন ডেস্ক
১৫ জুন ২০২৪, শনিবার
বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ববাদী শাসনকে উৎসাহিত করছে চীন দেশটি তাদের এক-দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিভিন্ন সেমিনার এবং প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করছে বলে সম্প্রতি একটি মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক ওই প্রতিষ্ঠানের নাম আটলান্টিক কাউন্সিল। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর কর্মকর্তাদের জন্য সেমিনার এবং প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করছে চীন। বিশ্বব্যাপী দেশটির একদলীয় শাসন ব্যবস্থা এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিশ্বদর্শন প্রচার করার লক্ষ্যে চীন এসব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে ওই গবেষণার প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
বিদেশের মাটিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের মাধ্যমে চীন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রচুর ঋণ হস্তান্তর করছে। যার মাধ্যমে তারা ওসব দেশে শি জিনপিংয়ের বিশ্বদর্শন প্রচারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ করছে। নিভা ইয়াউ নামের একজন মার্কিন গবেষক এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। প্রতিবেদনের নথিগুলোতে চীনের কর্তৃত্ববাদী মডেলের বিভিন্ন দিক স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। চীন কীভাবে নিজেকে একটি অনুকরণীয় দেশ হিসেবে উপস্থাপন করছে এ বিষয়টিও প্রতিবেদনে স্পষ্ট করেছেন ওই গবেষক। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা সহ বিআরআই অংশীদার দেশগুলোর কাছে নিজেদের একদলীয় শাসন এবং চীনা প্রেসিডেন্টের চিন্তাভাবনা প্রচারের প্রচেষ্ট করা হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চীন ঋণ দিয়ে সেখানে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থা দৃঢ় করছে।
মার্কিন ওই গবেষণায় যেসব নথিপত্র উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, চীনের শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের প্রভাব প্রসারিত করার লক্ষ্যে বিআরআইভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইনে সেমিনারে যুক্ত হচ্ছেন চীনা কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে ২০২১ সালের জুনে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারের কথা বলা হয়েছে। ওই সেমিনারে চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং এর মৌলিক নীতিগুলো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছে চীন। এছাড়া কোভিড মহামারি চলাকালীন সামাজিক সংহতি এবং এর ব্যবস্থাপনায় নিজেদের প্রচেষ্টাকেও প্রচার করেছে চীন। যার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চীনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার চেষ্ট করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এছাড়া আফ্রিকার দেশগুলোতে নগর পরিকল্পনায় স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে চীনের ব্যাপক অংশীদারিত্বের কথা জানানো হয়েছে। সেখানে চীনা কর্মকর্তারা সামাজিক নজরদারির বিষয়গুলো নিয়ে জোরালো আলোচনা করেছেন। প্রতিবেদনে উদ্ধৃত নথিপত্রে চীনের একটি পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে, যার মাধ্যমে আফ্রিকার দেশগুলোতে তথ্য-প্রযুক্তিতে নিজেদের নিরাপত্তা পরিচালনার বিষয়ে স্থানীয়দের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার কাজ করছে চীন। প্রতিবদনে বলা হচ্ছে, বিশ্বের যেসব দেশ সামাজিকভাবে জনগণের ওপর নজরদারি করছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চীন। দেশটি অভ্যন্তরীণভাবে তাদের জনগণের ওপর ব্যাপক নজরদারি জারি রেখেছে। এক্ষেত্রে বেইজিং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে জনগণের ওপর নজরদারি বাড়ানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনের ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বিআরআই দেশগুলোর কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ কোর্স পরিচালনার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এসব বিষয় চীনের গণমাধ্যমগুলোতেও বিষদভাবে প্রচার করা হয়েছে।