বাংলারজমিন
স্কুল বন্ধ করে নির্বাচনী সমাবেশ
ফেনী প্রতিনিধি
২৫ মে ২০২৪, শনিবার
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ফেনী সদর উপজেলায় আগামী ২৯শে মে ভোট গ্রহণ হবে। ফেনীতে নির্বাচনী আচরণ বিধিকে পদে পদে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে প্রার্থী ও সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধিরা। প্রচার-প্রচারণার সময় মাইকিং দুপুর থেকে শুরুর কথা থাকলেও স্বয়ং স্কুল বন্ধ করে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে চলছে নির্বাচনী সমাবেশ। এতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য হচ্ছে সকল মহলে। জানা যায়, ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের কেরনিয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুল মাঠে প্যান্ডেল করে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে মহিলা সমাবেশে নির্বাচনী প্রচারণা চালান ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শুসেন চন্দ্র শীল (দোয়াত-কলম), ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী একে শহীদ খন্দকার (টিউবওয়েল) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মুর্শিদা আক্তার (কলস)। প্রতিদিনের মতো ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সকালে স্কুলে আসেন। তখন স্থানীয় লেমুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ উদ্দিন নাসিম ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিল্পী রানী ঘোষকে স্কুল বন্ধ করে ছুটি দিয়ে সকলকে বাড়ি চলে যেতে বলেন।
একপর্যায়ে চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ী স্কুলে আগত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ছুটি দিয়ে প্রধান শিক্ষক বাড়ি চলে যান। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক শিল্পী রানী ঘোষ বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের স্কুল বন্ধ করে চলে যেতে বলেন। তার কথায় আমি স্কুল বন্ধ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া বিদ্যালয় মাঠে উচ্চস্বরের মাইক ব্যবহার হলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান (ক্লাস নেয়া) করা সম্ভব নয়।’ ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ উদ্দিন নাসিম জানান, কেরনিয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের ট্রেনিং চলায় বৃহস্পতিবার স্কুল বন্ধ ছিল। এ জন্য মাঠে মহিলা সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ বিষয়ে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমা বেগম জানান, আমি বিষয়টি জানি না। প্রধান শিক্ষকও আমাকে কিছু জানাননি। কিছুক্ষণ পরে তিনি জেনে বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে বন্ধ করতে পারেন না। প্রধান শিক্ষক কেন আমাদের বিষয়টি তখন জানালেন না, কেন ছুটি দিয়ে বন্ধ করে চলে গেলেন সেজন্য ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (কুমিল্লা অঞ্চল) মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন বলেন, স্কুল বন্ধ করে নির্বাচনী সমাবেশের বিষয়টি আমি জেনেছি। খোঁজখবর নিচ্ছি। প্রয়োজনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী স্কুল বন্ধ করে সমাবেশ করা যায় না। তাছাড়া প্রার্থীরা নির্বাচনী সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ দুপুর ২টার পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত করতে পারে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ নেই। এদিকে এর আগে সরকারদলীয় নির্বাচনী মহিলা সমাবেশে নারী ভোটারদের মাঝে প্রকাশ্যে টাকা বিতরণ, ভোটের দিন কেন্দ্রে যেয়ে ভোট না দিলে সরকারি সহায়তার কার্ড বন্ধের হুমকি দেন ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভপতি করিম উল্যাহ।