বিশ্বজমিন
তাইওয়ানে নতুন প্রেসিডেন্ট কঠোর প্রতিশোধের হুমকি চীনের
মানবজমিন ডেস্ক
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবারতাইওয়ানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের উদ্বোধনী ভাষণকে কেন্দ্র করে দেশটিকে কঠিন প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি জানিয়েছে চীন। তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন অংশ মনে করে চীন। তবে তা মানতে নারাজ তাইওয়ানের জনগণ। সে কারণে জানুয়ারির প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টারি নির্বাচনের ভোটে স্ব্বাধীনতার পক্ষে শক্ত অবস্থানে থাকা ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) প্রার্থী লাই চিং- তেকে তারা বেছে নিয়েছেন। গত সোমবার শপথ নেন লাই। এরপর উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি চীনকে রাজনৈতিক এবং সামরিক হুমকি বন্ধের আহ্বান জানান। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রশাসন। বেইজিং লাইকে একজন ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। চীনে অবস্থিত তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয়ের (টিএও) মুখপাত্র চেং বিনহুয়া বলেছেন, আমরা অবশ্যই এর (লাইয়ের বক্তৃতার) কঠিন জবাব দেবো। এ ছাড়া লাইয়ের দল ডিপিপি’কে উচিত শিক্ষা দেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
এর আগে লাই তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। সোমবার তিনি সাই ইং-ওয়েনের কাছ থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর উদ্বোধনী বক্তৃতায় লাই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বলে অভিযোগ চীনের। বেইজিং মনে করে চীনের (পিআরসি) বিচ্ছিন্ন হওয়া অংশ তাইওয়ান। তবে চীনের এমন মনোভাব তাইওয়ান না মানায় এমন কড়া প্রতিক্রিয়া জানালো বেইজিং। এতে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও তীব্র হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্লেষকরা।
চীনের গ্লোবাল টাইমসের একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, লাই যেভাবে তাইওয়ানকে স্বাধীন ভাবছে তাতে তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলবে। তাইওয়ানের স্বাধীনতা বিষয়ে লাই আগের প্রেসিডেন্টের নীতি অনুসরণ না করায় তাইওয়ান প্রণালীতে আগের তুলনায় চীনা আগ্রাসন আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট সাই চীনের সঙ্গে বিরোধ কমাতে মধ্যপন্থা নীতি অনুসরণ করেছিলেন। যাতে তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব রক্ষা হয় এবং ওই অঞ্চলে চীনের আগ্রাসন কমিয়ে আনা যায়। এক্ষেত্রে লাই আগের প্রেসিডেন্টের নীতি অনুসরণ না করায় তাদের অত্মরক্ষার আরও কঠিন দিকে মোড় নিবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সাই সরাসরি দুই দেশের নাম উল্লেখ না করে ‘এক চীন’ নীতিকে পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করতেন। তবে লাই যেভাবে তাইওয়ানকে স্বাধীন ভূখণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছেন এতে চীনের সঙ্গে বৈরিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। যাতে ওই অঞ্চলে অস্থিরতা আরও বাড়বে বলেই ধারণা করছেন অনেকে।
তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও চীন সেটা মানে না। বরং তাইওয়ানকে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশ মনে করে, যারা একদিন পুনরায় একত্রিত হবে। এজন্য প্রয়োজনে বল প্রয়োগের হুমকিও দিয়ে রেখেছে চীন।