শিক্ষাঙ্গন
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
দায়িত্ব পালন না করেও সম্মানী নেয়ার অভিযোগ ভিসি ও ট্রেজারারের বিরুদ্ধে
সাঈদ হাসান, কুবি প্রতিনিধি
(৮ মাস আগে) ১৪ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:৪৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৫৭ অপরাহ্ন
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা-২০২৪ 'সি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় কেন্দ্রে না এসে সম্মানী নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। শিক্ষকরা বলছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওনারা এই সম্মানী গ্রহণ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১০ই মে ভর্তি পরীক্ষার অংশ হিসেবে ভিসি ১৫ হাজার ও ট্রেজারার ১২ হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে তাদের কেউই পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেননি। তারা এদিন বাংলোতে ছিলেন বলে জানিয়েছেন ‘ভিসিপন্থি’ শিক্ষকরা৷
এ বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ‘সি’ ইউনিটের অর্থ কমিটির সদস্য সচিব শুভ্র ব্রত সাহা বলেন, সদস্যসচিব হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এ বিষয়ে আহ্বায়ক ভালো বলতে পারবেন।
ভিসি আর ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়ার পরও টাকা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অর্থ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমি যতটুকু জানি ভিসি বাংলো ক্যাম্পাসের অন্তর্ভুক্ত। আমি অর্থ কমিটির দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু অর্থ বণ্টন করে অর্থ দপ্তর। এতগুলো মানুষের টাকা এক ঘণ্টার মধ্যে বণ্টন করা সম্ভব না বিধায় পরীক্ষা শুরুর আগে থেকে বণ্টন করা হয়।
অর্থ দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর নাসির উদ্দিন বলেন, স্যার বাংলোতে ছিলেন। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি।
‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্ল্যাহ বলেন, ভিসি আর ট্রেজারার বাংলোতে ছিলেন। তারা আমার সঙ্গে ছিলেন না। তবে প্রো-ভিসি আমার সঙ্গে সার্বক্ষণিক ছিলেন। তিনি আমার সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছিলেন। তারা ক্যাম্পাসে কেন আসেননি সেটা আমি জানি না। ওনারা টপ লেভেলের। আমি তো আর বলতে পারবো না, ওনাদের সঙ্গে কথা বলেন। আমাদের তারা নির্দেশ দেন সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করি। এখন তারা ক্যাম্পাসে এসেছিলেন কিনা সেটা তারা ভালো বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, যিনি স্যালারি শিট চুরি করতে পারেন, আসলে তাকে নিয়ে কমেন্ট করতে আমার রুচিতে বাধে। সারাদেশের গুচ্ছ অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন যতদূর জানি। তবে তিনি সে জায়গা থেকে ন্যূনতম দায়িত্ববোধ পালন না করে অর্থনৈতিক সুবিধা নিবেন অনিয়মের মাধ্যমে। তবে ভিসি এবং ট্রেজারার দুইজনই সংঘবদ্ধ, দুইজনেই যেমন সন্ত্রাসী তেমন দুর্নীতিতেও একজন অন্যজনকে সহযোগিতা করেন। তিনি যে বলছেন 'দুর্নীতি-উন্নতি' সে এটাতেই বিশ্বাসী।
সম্মানী গ্রহণের বিষয়ে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এটা ভুল তথ্য। আমি অফিস করেছি, স্বাক্ষরও করেছি।
তবে ট্রেজারারের অফিসের সেকশন অফিসার নমিতা পাল বলেন, আমি যতখন ছিলাম স্যারকে দেখি নাই। এরপর আমি পরীক্ষার ডিউটিতে চলে যাই। পরীক্ষা শেষে বাংলোতে গেলেও স্যারকে পাওয়া যায়নি।
ভিসির পিএস হোসাইন মোরশেদ ফরহাদ বলেন, স্যার ক্যাম্পাসে আসেন নাই। তবে বাংলোতে ছিলেন। কেন আসে নাই জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি না। হয়ত মনমানসিকতা ভালো ছিল না।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও পাওয়া যায়নি ভিসিকে। পরে বাংলোতে গিয়েও তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কুবিতে হচ্ছেটা কি?