ঢাকা, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা

১০ মাদক গডফাদারের ১৭৮ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার
mzamin

প্রতীকী ছবি

মাদক ব্যবসায় টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একইসঙ্গে তদন্ত করতে গিয়ে ১০ জন মাদক গডফাদারের ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার সম্পদ জব্দ করেছে সংস্থাটি। গতকাল সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

সিআইডি প্রধান বলেন, টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা ওই পরিবারের অবৈধভাবে অর্জিত ৬.৯ একর সম্পত্তি শনাক্ত করেছি। আরও সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। যার বিরুদ্ধেই তথ্য-প্রমাণ পাবো তাকেই ধরা হবে। তিনি বলেন, সিআইডি এখন পর্যন্ত ৩৫টি মাদক সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং মামলার তদন্ত করছে। এরমধ্যে ১০টি মামলার তদন্তে প্রকৃত গডফাদারদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মাদকের অর্থে বাড়ি-গাড়ি, জমি ক্রোক করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
সবমিলিয়ে গডফাদারদের ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাদক মামলায় ১২২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। এরমধ্যে এজাহারনামীয় ৬৭ জন। গডফাদারদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিছু মামলার চার্জশিট দেয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, সিআইডি ইতিমধ্যে ৩টি মামলায় গডফাদারদের ৯ দশমিক ১৪ একর জমি ও ২টি বাড়ি যার মূল্য ৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ক্রোক এবং মাদক সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে রাখা ১ কোটি ১ লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা ক্রোক করেছে। আরও ৩৫ দশমিক ১৭৩ একর জমি, ১২টি বাড়ি ও ১টি গাড়ি যার মূল্য ৩৬ দশমিক ৮২ কোটি টাকা ক্রোকের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

মোহাম্মদ আলী বলেন, মাদক মামলার তদন্তে সাধারণত সেবনকারী বা বাহক পর্যন্ত তদন্ত করেই চার্জশিট দেয়া হয়। এর পেছনে গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। কিন্তু গডফাদারদের আরও আগে আইনের আওতায় আনতে পারলে মাদকের এত ব্যাপকতা হতো না। সিআইডি প্রথম গডফাদারদের গ্রেপ্তার ও তাদের সম্পদ ক্রোকের কাজে হাত দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্পদ ক্রোকের বিষয়ে আমরা আদালতে উপস্থাপন করি, আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ক্রোকের নির্দেশ দেন। পরে ক্রোক করে আদালতেই জমা দেয়া হয়। গডফাদারদের পরিচয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। তারা প্রকৃতপক্ষে পেশাগতভাবে মাদক ব্যবসায়ী। তাদের আর কোনো পরিচয় নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদক সংশ্লিষ্টতায় সাধারণত প্রথমে বাহক বা সেবনকারীকে ধরা হয়। তারপর তদন্তকারী কর্মকর্তা এর পেছনে কারা আছেন সে পর্যন্ত যেতেন না। সিআইডি ভিন্ন আঙ্গিকে পেছনের ব্যক্তিদের খোঁজ নেয়া শুরু করে। তারা কোথায় যোগাযোগ করছে, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তল্লাশি করা হচ্ছে। সন্দেহজনক লেনদেন পেলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা মাদক ব্যবসার কথা স্বীকার করছেন। যেহেতু গডফাদারদের গায়ে হাত পড়েছে। তারা গ্রেপ্তার হচ্ছে, তাদের সম্পত্তিও ক্রোক হচ্ছে। তাই আমি মনে করি অন্য গডফাদাররাও নিরুৎসাহিত হবে। আমি বিশ্বাস করি অন্য গডফাদাররা মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিবে।

বদির দুই ভাইয়ের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডি প্রধান বলেন, আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুর বিভিন্নভাবে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনে। এরপর তাদের নিয়োজিত সহযোগীদের মাধ্যমে বিভিন্নস্থানে পৌঁছে দেয়া হতো। ইতিমধ্যে বদির ভাইদের ৬ দশমিক ৯ একর জমি শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এক কোটি টাকা মূল্যের ৪০ শতাংশ জমির তথ্য পাওয়া গেছে। জমির তথ্য এখনো ডিজিটালাইজড হয়নি।

যাদের সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে: টেকনাফ থানার মামলায় নুরুল ভুট্টোর, চট্টগ্রামের খুলশী থানার মামলায় শফিক আলম শফিকের, খুলনার লবণচরা থানার মামলায় শাহজাহান হাওলাদারের, টেকনাফ থানার মামলায় শফিক আলমের, পাবনার আতাইকুলা থানার মামলায় শাহিন আলমের, টেকনাফ থানার মামলায় নুরুল কবিরের, টেকনাফের আরেক মানিলন্ডারিং মামলায় সিদ্দিক আহমেদের, আদাবর থানার একটি মামলায় মাদক গডফাদার নুরুল ইসলামের, টঙ্গী পূর্ব থানার একটি মামলায় পারুলের ও টেকনাফ থানার মামলায় ফজর আলীর সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। 
 

পাঠকের মতামত

Lets see how many godfathers they can arrest and bring under real judgement this time!

Ojana
১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৫:২২ অপরাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status