খেলা
‘সামনে বড় লক্ষ্য লেভারকুসেনের’
স্পোর্টস ডেস্ক
১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবারসেই ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বায়ার লেভারকুসেন ক্লাব। শত বছর পেরিয়েও জার্মানির শীর্ষ লীগে তাদের শিরোপার স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গিয়েছিল। সেই অধরা সাফল্যই এবার ধরা দিয়েছে স্প্যানিয়ার্ড তারকা জাবি আলোনসোর জাদুকরী কোচিংয়ে। এই মৌসুমের আগে ক্লাবের ইতিহাসের সোনালি সময় ছিল ১৯৯৬-৯৭ থেকে পরের ছয় মৌসুম। এই সময়টায় চারবার বুন্দেসলিগায় রানার্স আপ হয় তারা। একবার রানার্স আপ হয় জার্মান কাপে। এমনকি চ্যাম্পিয়ন্স লীগেও ফাইনালে উঠে শেষ পর্যন্ত হেরে যায় রিয়াল মাদ্রিদের কাছে। বারবার কাছে গিয়েও চূড়ান্ত সাফল্য না পাওয়ায় কৌতুক করে তাদের নামে দেওয়া হয় ‘নেভারকুসেন’, যাদেরকে দিয়ে কখনোই সম্ভব নয়।
২০২২ সালের অক্টোবরে যখন আলোনসো ক্লাবের হাল ধরেন, লেভারকুসেন তখন ভয়ানকভাবে ধুঁকছে। বুন্দেসলিগার পয়েন্ট তালিকায় তাদের অবস্থান ছিল ১৭তম। জাবি আলোনসোর জন্য সেটিই ছিল শীর্ষ পর্যায়ের কোনো ক্লাবের প্রথম দায়িত্ব।
মৌসুম শুরুর আগে লেভারকুসেনকে নিয়ে কেউ আশাবাদী ছিল না। সেই অকল্পনীয় সাফল্যই পেয়েছে আলোনসোর দল। সেটিও প্রবল দাপটে। বছরের পর বছর ধরে বায়ার্ন মিউনিখ যেভাবে বিশাল ব্যবধানে বুন্ডেসলিগা জিতে এসেছে, এবার সেরকম ব্যবধানেই বায়ার্নকে পেছনে ফেলেছে তারা।
এমন দাপুটে পথচলায় ট্রফি জিততে পারা বাড়তি তৃপ্তি দিচ্ছে আলোনসোকে। তিনি বলেন, “আমরা এই মৌসুমে খেলতে চেয়েছিলাম ভালো মানসিকতা নিয়ে এবং ছেলেরা বেশ দ্রুতই একসঙ্গে কার্যকর খেলা শুরু করে দেয়। কয়েকটি ম্যাচ যাওয়ার পর আমরা দেখলাম, এই দলটি সত্যিই দুর্দান্ত ফুটবল খেলতে পারে। তবে এভাবে এই অর্জন (শিরোপা) ছুঁয়ে ফেলা মানে শীর্ষ মানের- অসাধারণ। অবশেষে আমরা বলতে পারছি যে, বায়ার লেভারকুসেন এখন জার্মান চ্যাম্পিয়ন। আমাদের সবার জন্যই এটা বড় সম্মানের। এই দল, এই ক্লাব ও সমর্থকদের এটা দারুণভাবে প্রাপ্য।”
মৌসুমের শুরু থেকে লেভারকুসেন দারুণ খেললেও একটা সময় পর্যন্ত বায়ার্নও ছিল নাগালেই। গত ১০ই ফেব্রুয়ারি বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আলোনসোর দল এগিয়ে ছিল কেবল ২ পয়েন্টে। ওই ম্যাচ জিতে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে যায় তারা। এরপর ব্যবধান কেবল বাড়তেই থাকে। আলোনসো বলেন, “বায়ার্নের বিপক্ষে ঘরের মাঠের সেই ম্যাচটি- এমনও হতে পারত, ওরা আমাদেরকে টপকে যেতে পারত। কিন্তু আমরা তা হতে দেইনি। এরপরই আমরা জানতাম। ড্রেসিং রুমে আমরা কেউ এটা নিয়ে খুব একটা আলোচনা করিনি। কিন্তু আমাদের ভাবনায় ঠিকই ছিল। আমরা সবাই জানতাম।”
এই মৌসুমে আরও সাফল্যের হাতছানি আছে আলোনসোর দলের। জার্মান কাপের ফাইনালে উঠে গেছে তারা। এখানে তাদের একমাত্র শিরোপাটি এসেছিল সেই ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে। ইউরোপা লীগের কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে ২-০ গোলে জিতে সেমি-ফাইনালের পথে এগিয়ে আছে তারা। এখানে তাদের একমাত্র শিরোপাটি এসেছিল ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে (তখনকার উয়েফা কাপ)। এই দুই আসরেই এখন ফেভারিট তারা। লীগ জয়ের উৎসবের পাশাপাশি সামনের হাতছানির কথাও দলকে মনে করিয়ে দিলেন কোচ। বলেন, “তীব্র লড়াইয়ের মৌসুম ছিল এবং এখনও তা শেষ হয়নি। আমাদের তা ভুলে গেলে চলবে না। এটা (লীগ শিরোপা) এখন আমাদের জন্য অতীত এবং এখনও এই মৌসুমে বড় লক্ষ্য আছে আমাদের সামনে।”