ঢাকা, ১ মে ২০২৪, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

নতুন নোটের দোকানেও বাড়তি দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৮ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার
mzamin

ঈদ মানেই খুশি। ঈদের খুশি   আরও বাড়িয়ে দেয় নতুন নোট। ঈদকেন্দ্রিক সালামি থেকে শুরু করে দান-খয়রাত ও ফিতরাতে নতুন টাকার চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরে এ চাহিদা বাড়ে কয়েকগুণ। এসব বিষয় বিবেচনা করে বাজারে নতুন টাকা ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা বিভিন্ন ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। এবারো বিভিন্ন ব্যাংকের ৮০ শাখায় মিলছে নতুন টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকের বাইরেও ঢাকার নির্দিষ্ট এলাকার ফুটপাথে চলে নতুন টাকার কেনাবেচা। ঈদ সামনে রেখে নতুন টাকার পসরা বসিয়েছেন খোলাবাজারের বিক্রেতারা। তাদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নতুন নোট। তবে প্রতি বান্ডিলে বাড়তি ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন
গত ৩১শে মার্চ থেকে নতুন নোট বিতরণ শুরু হয়েছে। চলবে ৯ই এপ্রিল পর্যন্ত। 

সূত্র জানায়, চাহিদার তুলনায় নতুন নোটের সরবরাহ কম থাকায় এ বছর চড়া দামে কিনতে হচ্ছে নতুন নোট। নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের শাখা ছাড়া নতুন নোট সংগ্রহের উপায় থাকে না। নতুন নোট সংগ্রহের জন্য অনেক সময় ব্যাংকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সহজ পন্থা হিসেবে গ্রাহকরা বেছে নিয়েছেন ফুটপাথের নতুন নোটের দোকানগুলোকে। 
রাজধানীর গুলিস্তান ও মতিঝিলে অস্থায়ী বাজারে নতুন টাকার বিক্রি বেড়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, নতুন টাকার বিনিময়ে এ বছর অতিরিক্ত অর্থ রাখছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক ক্রেতাই বেশি দাম দেখে নতুন নোট না নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর যে পরিমাণ নতুন নোট সরবরাহ করা হয় চলতি বছর সে তুলনায় অনেক কম নোট ছাপানো হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। 

ফুটপাথের বিক্রেতারা নতুন টাকা সংগ্রহ করেন বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে। পরে তারা এ টাকা বিক্রি করেন সাধারণ মানুষের কাছে। মতিঝিলে নতুন টাকা বিক্রি হয় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও এখানে ক্রেতা আসেন টাকা সংগ্রহ করতে। এর সঙ্গে ছেঁড়া-ফাটা টাকার বিনিময়ও করা যায় তাদের কাছে।
বিক্রেতারা জানান, এ বছর ঈদে ১০ ও ২০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা বেশি। এরপর ৫ ও ২ টাকার নোট বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে সচ্ছল ক্রেতারা বেশি পরিমাণে ৫০ ও ১০০ টাকার নোটও কিনছেন।

নতুন টাকা কিনতে গুলিস্তানে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই এখান থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করে থাকি। ব্যাংকে অনেক ভিড় থাকে। তাই ভোগান্তি এড়াতে গুলিস্তান থেকে নতুন টাকা কিনে বাড়ি পাঠাই। ফুটপাথে নতুন নোটের অভাব নেই। যত খুশি নেয়া যাচ্ছে, লাগছে অতিরিক্ত অর্থ। তবে ব্যাংকে গিয়ে নতুন নোট পাচ্ছি না। প্রতি বান্ডিল বা ১০০ পিস টাকার দাম (পরিমাণ ভেদে) ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি নেয়া হচ্ছে।

আরেক ক্রেতা মাজেদা বেগম বলেন, দুই টাকা ও পাঁচ টাকার কয়েক বান্ডিল নতুন নোট লাগবে আমার। কিন্তু ফুটপাথে নতুন টাকার দাম গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। গত বছর ঈদে দুই টাকার এক বান্ডিল নোট কিনেছিলাম ২৮০ টাকায়। এবার তা ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে। পাঁচ টাকার বান্ডিলে গতবারের চেয়ে ১০০ টাকা বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। 
মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অস্থায়ী ভ্রাম্যমাণ টাকা বিক্রেতারা ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০ ও ২০০ টাকার নতুন নোট বিক্রি করছেন। প্রতি এক বান্ডিল টাকা কিনতে হলে ক্রেতাকে অতিরিক্ত ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি গুনতে হচ্ছে। দোকানিরা জানান, নতুন টাকার বান্ডিলে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ৫ ও ১০ টাকার নোটে। 

বিক্রেতারা বলছেন, বছরব্যাপী ব্যবসা করলেও বিক্রি বেশি হয় কেবল ঈদেই। ফলে দাম খুব একটা বেশি বাড়েনি। এবার বিক্রিও কিছুটা কম বলে জানান তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এবার ঈদের জন্য নতুন টাকা কম ছাড়া হয়েছে। এ কারণে বাজারে সেভাবে নতুন টাকা মিলছে না। যাদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে সেখান থেকে বাড়তি দামেই টাকা কিনতে হচ্ছে। এতে টাকার দাম কিছুটা বাড়তি মনে হচ্ছে। 

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগ মুহূর্তে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার বেশি বিক্রি তাদের। পাঁচ টাকা, ১০ টাকা, ৫০ টাকার নোটের চাহিদা বেশি। এবার ২০ টাকার নোটের একটি বান্ডিল (এক হাজার টাকা) বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ টাকায়। ১০ টাকার বান্ডিল (এক হাজার টাকা) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা বেশি অর্থাৎ ১৩০০ টাকায়। পাঁচ টাকার নোট ১০০টি নিলে গুনতে হচ্ছে বাড়তি ১৫০ টাকা। এ ছাড়া হাজারে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে ১০০ টাকার নোটের বান্ডিল বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকার নোট এক বান্ডিল (এক হাজার টাকা) নিতে হলে বাড়তি দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা। দুই টাকার নোট ৬০০ টাকার বান্ডিল বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। ৩০০ টাকা বাড়তি রাখা হচ্ছে ২০০ টাকার বান্ডিলে। তবে একটু দরাদরি করে নিলে দামে কিছুটা ছাড় পাওয়ার সুযোগ থাকে।

পাঠকের মতামত

বাজারে গেলে সব কিছু বেশি দাম, আবার বেশি টাকা দিয়ে নুতন টাকা কেনা ফুটানি।

এ এইচ.ভূইয়া
৮ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ৫:৫৭ অপরাহ্ন

ঈদের সময় নতুন নোট সরবরাহের সিস্টেমটি যত দ্রুত বন্ধ করা যায় ততই মঙ্গল হবে। এই নতুন নোটের কারণে প্রতিটি ব্যাংকের কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এমনকি নতুন নোট দিতে না পারলে অনেকের কাছে লজ্জিত হতে হয়। শেষ দশ রমজানে (ইতেকাফ, লাইলাতুল ক্বদর, কুরআন নাজিলের সময়, নাজাতের সময়) ইবাদতে মশগুল হওয়ার সুযোগ থাকলেও এই নতুন নোট, শপিং ইত্যাদি করতে করতে সুবর্ণ সুযোগটা আমাদের হাত থেকে চলে যায়। সবচেয়ে হতাশাজনক ও বেদনাদায়ক হলো লাইলাতুল ক্বদরের রাতে মার্কেটে মানুষেরা বিশেষ করে মহিলারা কেনাকাটায় রাত পার করে দিচ্ছে। আফসোস ছাড়া আর কিইবা করার আছে?

শওকত আলী
৮ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

বাহিরে যারা নোট বিক্রি করে তাদের কাছে অভাব নাই, নোট কি বাংলাদেশ ব্যাংক ছাপে নাকি হকাররা ছাপে বুঝতেছিনা ।

MK. Mamun Mirza
৮ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

ব্যাংকে ৫০ টাকার নীচে কোনো নোট পাওয়া যায়না কিন্তু বাহিরে যারা বিক্রি করে তাদের কাছে অভাব নাই, নোট কি বাংলাদেশ ব্যাংক ছাপে নাকি হকাররা ছাপে বুঝতেছিনা।

হুমায়ুন কবির
৮ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status