প্রথম পাতা
থাকছে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, জাপানে বাংলাদেশ দূতের মেয়াদ বাড়ছে
মিজানুর রহমান
৫ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবারসব জল্পনা-কল্পনার অবসান। রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আর নয়- এমন আলোচনা থেকে সরে এসেছে সরকার। পররাষ্ট্র নীতি বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক প্রতিনিধি গতকাল মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানিয়েছেন, বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বহালই থাকছে। সেই ধারাবাহিকতায় জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের চুক্তির মেয়াদ বেড়েছে। মার্চে চুক্তি নবায়নের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। যদিও জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশারফ হোসেন ভূঁইয়াসহ ১০ রাষ্ট্রদূতকে পূর্ব-নির্ধারিত চুক্তি বা চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই দেশে ফিরতে ফেব্রুয়ারিতে ‘অতি উৎসাহী আদেশ’- জারি করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সূত্রমতে, জার্মানির বাংলাদেশ দূতের আদলেই বাড়ছে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ-এর মেয়াদ। ন্যূনতম ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১ বছরের জন্য রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে জানিয়ে সুত্র বলছে, সরকারের সাবেক খাদ্য সচিব হিসেবে অবসরে যাওয়া শাহাবুদ্দিন আহমদের দেশে ফেরার জন্য জারিকৃত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নোটিশও বাতিল করা হবে।
ওয়াকিবহাল মহল জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদের চাকরির (চুক্তি) মেয়াদ বাড়ছে।
২০০৯-২৪ পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে ৪ দফা পরিবর্তন এসেছে। ডা. দীপু মনি, এএইচ মাহমুদ আলী এবং ড. একে আবদুল মোমেনের পর ড. হাছান মাহমুদ এখন মন্ত্রীর আসনে। প্রতিমন্ত্রী না থাকায় তিনি একাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামলাচ্ছেন। ৭ই জানুয়ারির বহুল আলোচিত নির্বাচনের পর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নতুন মন্ত্রীকে অনেক কিছু সাজাতে হচ্ছে। এজন্য তিনি খানিকটা সময় নিচ্ছেন জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এই ক’দিনে বিদেশে থাকা বাংলাদেশের ৮১ মিশনে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৯দফা নির্দেশনা সংবলিত চিঠি পাঠিয়েছেন মন্ত্রী। সেইসঙ্গে মিশনগুলো পুনর্গঠনে উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পরপরই জুনিয়র লেভেলে কিছু অর্ডার হয়েছে এবং তা কার্যকরও হয়েছে জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, এখন থেকে সব অর্ডারের ফাইল মন্ত্রী পর্যন্ত যাওয়াকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেইসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রণীত ‘পোস্টিং পলিসি’ যথাসম্ভব অনুসর করে নিয়োগ হবে বলে নিশ্চিত হয়েছে মানবজমিন। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত যেসব চুক্তি বিদ্যমান তার হিসাবে আগামী ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ১৪জন রাষ্ট্রদূতের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন পররাষ্ট্র সচিব হবেন নতুবা বর্তমান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে। পররাষ্ট্র সচিব পদে পরিবর্তন এলে যারা দায়িত্ব পেতে পারেন বলে আলোচনায় রয়েছেন তাদেরও ‘চুক্তিভিত্তিক’ নিয়োগই দিতে হবে। কারণ ১১ ব্যাচ থেকে সম্ভাব্য পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে যে ৩ জনের যাদের নাম আলোচনায়, তাদের সবার চলতি বছরে কিংবা আগামী বছরের শুরুতে পিআরএল (অবসর-উত্তর ছুটি) শুরু হওয়ার কথা। স্মরণ করা যায়, বিগত সব সরকারের আমলেই গুরুত্বপূর্ণ মিশনগুলোতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ছিল। অবসরে যাওয়ার প্রায় ১০ বছর পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে ফেরানো হয়েছিল সাবেক পররাষ্ট্র সচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে।