প্রথম পাতা
আপত্তি উপেক্ষা করে দায়িত্ব নিলেন ব্যারিস্টার খোকন
স্টাফ রিপোর্টার
৫ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবারজাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির দায়িত্ব নিলেন বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব। গতকাল সাধারণ সভায় সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তবে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের নির্বাচিত তিন সদস্য সৈয়দ ফজলে এলাহি অভি, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম শফিক দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। একইসঙ্গে দায়িত্ব নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক সাদা প্যানেলের সম্পাদক পদে বিজয়ী এডভোকেট শাহ মনজুরুল হকসহ ১০ জন। তারা হলেন- দুই সহ-সভাপতি রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মোহাম্মদ আবু ওবায়েদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, দুই সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও হুমায়ুন কবির পল্লব, সদস্য- রাশেদুল হক খোকন, রায়হান রনি, বেলাল হোসেন শাহীন, খালেদ মোশাররফ রিপন। বিজয়ীদের সদ্য বিদায়ী কমিটির স্ব স্ব পদের নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বারের বিদায়ী সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ফুল দিয়ে বরণ করতে গেলে তা তিনি নিতে অস্বীকৃতি জানান। জোর করে ফুল দেয়ার চেষ্টা করলেও তা তিনি গ্রহণ করেননি। একপর্যায়ে ফুল নিচে পড়ে যায়।
দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য সমর্থিত ও সমমনা আইনজীবীদের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার খোকন মতবিনিময় সভা করেন। সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক আলহাজ গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বাগত বক্তব্যে মাহবুব উদ্দিন খোকন ফোরামের শীর্ষ নেতাদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভোট গণনার দিন আমার সম্পাদক প্রার্থী কাজল সাহেবকে আমি বলেছি তাদের (আওয়ামী লীগের) অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আমরা জড়াবো না। আপনি আমার পাশে এসে বসুন। তিনি আমাকে বলেন, আমাদেরকে যুথী আপাকে সহযোগিতা করা দরকার। আমরা কেন তার পক্ষ নিবো? ভোট গণনা কার্যক্রম বর্জন করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, মানুষ ভোট বর্জন করে, আর আমরা ভোট গণনা বর্জন করেছি। ফোরামের কতিপয় নেতা নিশ্চিত কারও স্বার্থে তারা ভোট গণনা বর্জন করেছেন। মূলত তারা আওয়ামী লীগকে ওয়াক ওভার দেয়ার জন্য ভোট গণনা কার্যক্রম বর্জন করেছে। আমরা যদি ভোট গণনা বর্জন না করতাম তাহলে কমপক্ষে ১১/১২টা পদে বিজয়ী হতাম। কারণ ব্যালট বাক্স খোলার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বিগত দুই বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করেছে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দুজন প্রার্থী, প্রথমে নাহিদ সুলতানা যুথী ও পরে শাহ মঞ্জুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদেরকে মারধর ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের দুজন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরও তিন জন আইনজীবী ফোরামের নেতাকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে।
চিঠিতে বলা হয়, এ মামলায় ওসমান চৌধুরী, সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)কে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হয়। তারা দুই সপ্তাহের মতো কারাভোগ করেছেন। তাদেরকে কারাগারে রেখে গত ১০ই মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদেরকে (বিএনপি’র বিজয়ী চারজন) নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে। আইনজীবী সমাজ ও দেশের আপামর জনগণ নির্বাচনের এই ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ব্যারিস্টার মাহাবুদ্দিন খোকন কাজটা ঠিক করেননি।