ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

প্রবৃদ্ধির হার কমার পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের

স্টাফ রিপোর্টার
৩ এপ্রিল ২০২৪, বুধবারmzamin

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, চলতি অর্থবছরে দেশের জিডিপি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে, যেখানে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। গতকাল ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেয় বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বাণিজ্য ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার, যদিও এ লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চাভিলাষী বলেছিলেন অর্থনীতিবিদরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রান্তিক ভিত্তিক হিসাব প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; তাতে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশের জিডিপি বেড়েছে ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ হারে।

বিশ্বব্যাংকের সংবাদ সম্মেলনে এ সংস্থার বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের প্রধান আব্দুল্লায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌল ভিত্তি শক্তিশালী হওয়ায় অতীতের সব চ্যালেঞ্জ উৎরে যেতে সহায়তা করেছে। আর্থিক ও মুদ্রানীতির সংস্কারের নেয়া পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারলে তা প্রবৃদ্ধিতে গতি সঞ্চার ও সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক হবে। সুদহারের সীমা ৯ শতাংশ থেকে তুলে নেয়ায় মুদ্রানীতি আগের চেয়ে ভালো কাজ করতে পারছে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদহারের সীমা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতি কমাতে ভূমিকা রাখবে এবং আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছর পুরো বিশ্বে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে, আগামী অর্থবছরে তা আরেকটু বেড়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে চালকের আসনে থাকবে বাংলাদেশ ও ভারত।

তবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) যথাযথ ব্যবহারে ব্যর্থ হচ্ছে মন্তব্য করে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওনসর্গ বলেন, সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশের মতো জনশক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে এসব দেশ বর্তমানের চেয়ে আরও ১৬ শতাংশ বেশি আর্থিক সুবিধা পাবে।
এদিকে ব্যাংক একীভূত (মার্জার) করার চলমান পদক্ষেপে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের পরিমাণ ও খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য সম্পদের মান ও নীতিমালার আলোকে ব্যাংক একীভূত হওয়া উচিত। একীভূত করার আগে দুর্বল ব্যাংকের সম্পদের মান নিরীক্ষা করা এবং একীভূত করার নীতিমালা হালনাগাদের পরামর্শ দিয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, এসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা না হলে বাংলাদেশের আর্থিক খাতের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতের বাজার বাড়ছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগ ও আর্থিক খাতের সংস্কার মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনীতির সহনশীলতা বৃদ্ধি করবে।
চলতি অর্থবছরে বেসরকারি খাতের ঋণ ও বিনিয়োগ মন্থর হওয়ার পেছনে মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া, ব্যাংকের তারল্য সংকট, সুদহার বৃদ্ধি পাওয়া, আমদানিতে বিধিনিষেধ ও জ্বালানির দর সমন্বয় করার বিষয়গুলোকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণের উচ্চ হারসহ দুর্বল নিয়ন্ত্রণের কারণে ব্যাংকিং খাত চাপের মুখে রয়েছে।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status