ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

উপজেলা নির্বাচন

নাটাই মন্ত্রী এমপিদের হাতেই

কাজী সোহাগ
২ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার

তৃণমূলে নেতৃত্বের কোন্দলে চিন্তিত আওয়ামী লীগ। বিভাগীয় সমাবেশগুলো করতে গিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের কোন্দল ও সংকটগুলো প্রকাশ্যে আসছে। বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার কোন্দল মেটানোর উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। এখন সবাই চেয়ে আছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনার ওপর। অন্যদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক এরইমধ্যে বেশ কয়েকবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। মন্ত্রী ও এমপিদের সতর্ক করেছেন। স্থানীয় নেতৃত্ব নিয়ে তারা যেনো কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করে সে আহ্বান জানিয়েছেন। এতে পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক হয়নি। বরং নিজ সংসদীয় আসনে নিজেদের আধিপত্য ও প্রভাব বজায় রাখতে মন্ত্রী ও এমপিরা নির্বাচনী এলাকায় তাদের প্রভাব আরও মজবুত করার চেষ্টা করছেন।

বিজ্ঞাপন
উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তারা। অর্থাৎ তৃণমূল নেতৃত্বের নাটাই নিজেদের হাতেই রাখছেন মন্ত্রী ও এমপিরা। এতে গভীর সংকট দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতৃত্বে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও দলীয় সমর্থন দিতে চান সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলার নেতারা। আওয়ামী লীগের বিভাগীয় মতবিনিময় সভাগুলোতে এমন প্রস্তাব করেছেন সংসদ সদস্য ও দলের তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নির্বাচনগুলোয় দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ। স্বতন্ত্রভাবে দলের নেতারা নির্বাচন করতে পারবেন। যেকোনো প্রার্থীর পক্ষে দলের নেতারা ভোট করতে পারবেন। দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে একক প্রার্থীকে সমর্থনের প্রস্তাব করেছে দলটির তৃণমূল। আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম  ও রংপুর বিভাগীয় মতবিনিময় সভায় এমন প্রস্তাব করেছেন তৃণমূলের নেতারা। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুজিত রায় নন্দী বলেন, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও প্রার্থীকে দলীয় সমর্থনের প্রস্তাবনা আছে। চট্টগ্রামের বিভাগীয় নেতাদের মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সালাম বলেন, বলা হচ্ছে এমপি-মন্ত্রী বা জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপজেলা নির্বাচনে মাথা ঘামাবেন না। মাথা ঘামানোটা দৃশ্যমান না, দেখা যায় না। সবাই মাথা ঘামাবে। আগেও উপজেলা নির্বাচন হতো দলীয় প্রতীক ছাড়া কিন্তু সেখানে দল একজনকে সমর্থন করতো। তাহলে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা থাকে। এখন যদি একটা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে পাঁচ-সাত জন দাঁড়িয়ে যায়, সেখানে এমপি একজনকে সমর্থন করবেন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা আলাদা আলাদাভাবে সমর্থন করবেন। এতে সংগঠন আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 

কুমিল্লা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, আমরা এমপি হতে পারিনি। যারা সংসদ সদস্য হয়েছেন তাদের এমপি হয়েই থাকা উচিত। যারা স্বতন্ত্র এমপি হয়েছেন, তাদের স্বতন্ত্রভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেয়া উচিত। তাদের সংগঠনের বড় পদে রাখার দরকার নেই। স্বতন্ত্র এমপিরা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও  এমপিরা এখন উপজেলা নির্বাচনে তাদের পছন্দের মাইম্যানকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করছেন এবং সেই প্রার্থীর পক্ষে পরোক্ষ প্রচারণা করছেন। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে এমপিরা যখন এই ধরনের প্রার্থী দিচ্ছেন এবং সেই প্রার্থী যখন স্থানীয় আওয়ামী লীগের মনঃপূত হচ্ছে না, তখন উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের অন্যরাও পাল্টা প্রার্থী দিচ্ছেন। এইভাবে প্রতিটি উপজেলায় চার থেকে পাঁচ জন প্রার্থী দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানবজমিনকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পরই স্থানীয় নির্বাচন স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা চ্যালেঞ্জ। তবে এবার যোগ্য প্রার্থী বাছাই হবে আমাদের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। এর সঙ্গে রয়েছে দলীয় কোন্দল। দুই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে আমরা উপজেলা নির্বাচনকে ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করার চেষ্টা করবো। নির্বাচন নিয়ে নিজেদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, নজর রাখা হচ্ছে সেদিকেও।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status