কলকাতা কথকতা
মমতার ‘পিতৃ পরিচয়’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে চাপের মুখে ক্ষমা চাইলেন বিজেপি প্রার্থী
সেবন্তী ভট্টাচার্য্য , কলকাতা থেকে
(৫ মাস আগে) ২৭ মার্চ ২০২৪, বুধবার, ৫:২২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৫০ অপরাহ্ন
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে এবার লোকসভা নির্বাচনে লড়ছেন বিজেপির বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষ। প্রচারের শুরুতেই তার মন্তব্য ঘিরে বেড়েছে বিতর্ক। মর্নিং ওয়াকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, 'আগে নিজের বাপ তো ঠিক করুন!' দিলীপের এই কথা বেশি দূর পৌঁছনোর আগেই হই হই করে উঠেছে তৃণমূল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আগেই কমিশনে চিঠি পাঠিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। নির্বাচন কমিশনও জেলা প্রশাসনের থেকে দিলীপের মন্তব্য নিয়ে জানতে চেয়েছে।
দিলীপ ঘোষ নারীদের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করছেন বলেও দাবি তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের। নির্বাচন কমিশনের দফতরে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রমুখ। শাসক শিবিরের বক্তব্য, দিলীপ ঘোষ যা বলছেন, তা আদর্শ আচরণবিধির পরিপন্থি। এভাবে কারও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে সমালোচনা বা আক্রমণ করা যায় না। এদিকে চাপের মুখে পড়ে মমতাকে নিয়ে দলীয় প্রার্থীর কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে সাফাই বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি দিলীপকে চিঠিও ধরিয়েছে দিল্লি। ফলে প্রবল চাপের মুখে পড়ে ক্ষমা চেয়েছেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।
দুঃখপ্রকাশ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ঝগড়া নেই। তার সম্পর্কে আমার মনে কোনও ক্লেশ নেই, ক্লেদ নেই। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তার প্রতিবাদ করেছি। আমার ভাষা, শব্দ চয়ন নিয়ে অনেকের আপত্তি আছে। দলও বলেছে। যদি তাই হয় আমি দুঃখিত।" এটাই প্রথম নয়, ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন পায়ে চোট পেয়েছিলেন তখন দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন 'উনি বারমুডা পরুন'।
এসবের মাঝে, বিজেপির তরফে বাংলার আরেক নেতা রুদ্রনীল ঘোষ দিলীপের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তিনি বলেছেন, “উনি মুখ ফসকে কথা বলার ক্ষেত্রে তৃণমূলের থেকে দেড় কিলোমিটার পিছিয়ে আছেন। অভিষেকও তো বলেছিলেন, যদি এক বাপের ব্যাটা হও। সেটা কু-কথা নয়? দিলীপদাকে সেই পর্যায়ে পৌঁছতে হলে আরও পরিশ্রম করতে হবে।” তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের মতে, "ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ নম্বর ধারায় পরিষ্কারভাবে বলা আছে, কোনও নারী সম্পর্কে কুরুচিকর, অসাংবিধানিক মন্তব্য করলে অভিযুক্তের ৩ বছরের জেল এবং জরিমানা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আইনি পথে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।"