অনলাইন
প্রতিনিধিদের সফর নিয়ে দূতাবাসের বিবৃতি
অবিচল অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের পাশে থাকবে সুইডেন
মানবজমিন ডেস্ক
(২ মাস আগে) ২৫ মার্চ ২০২৪, সোমবার, ৩:৪৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:২৩ অপরাহ্ন
অবিচল অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের পাশে থাকবে সুইডেন। এখানে সুইডিশ আরও কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা গেছে। বাংলাদেশ সফরে এমন মন্তব্য করেছেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত, সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়াসহ তার সঙ্গে থাকা প্রতিনিধি দল। ২১শে মার্চ তারা বাংলাদেশ সফর সমাপ্ত করেন। ২৫শে মার্চ সুইডেন দূতাবাসের দেয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এ সফরে প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী জোহান ফোরসেল এবং ইউএনডিপির অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল উলরিকা মোদির। ১৮ই মার্চ থেকে ২১শে মার্চ পর্যন্ত স্থায়ী হয় তাদের সফর। এ সময়ে প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করেন। ক্রাউন প্রিন্সেস এবং প্রতিনিধি দল নাগরিক সমাজ, যুব সমাজ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদার, বেসরকারি কোম্পানি এবং অন্য অংশীদারদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এই সাক্ষাতে বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন, সুযোগ সুবিধা এবং ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে পারেন প্রতিনিধিরা।
চট্টগ্রামে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলেন শুভেচ্ছাদূত প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। এ সময় তিনি ইউএনডিপির শহর স্থিতিস্থাপক কর্মসূচি প্রত্যক্ষ করেন। এসব কর্মসূচি নারী নেত্রীদের ক্ষমতায়িত করছে। ফলে শহরে স্থিতিস্থাপকতা টেকসইকরণ জোরালো হচ্ছে। চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন পরিদর্শন করেন ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া ও প্রতিনিধিরা। এ সময় তারা নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসব ছাত্রীর অনেকে শরণার্থী ব্যাকগ্রাউন্ডের। উপরন্তু প্রতিনিধিরা জলবায়ু-ঝুঁকিতে থাকা হাতিয়া দ্বীপের উপকূল পরিদর্শন করেন। সেখানে প্রত্যন্ত এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনকে স্থিতিস্থাপক পর্যায়ে আনার জন্য ইউএনডিপির কাজ পর্যবেক্ষণ করেন তারা। প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া, মন্ত্রী জোহান ফোরসেল এবং ইউএনডিপির অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল উলরিকা মোদির ভাসাণচরেও থামেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। সেখানে ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএফপি, ইউএনএফপিএ, ইউএন ওমেন, ইউএনডিপি, আইওএম এবং অন্যদের অর্থায়নে পরিচালিত জাতিসংঘের বহুবিধ এজেন্সির সমন্বিত কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। এই অর্থায়নের বড় একটি অংশ দিয়ে থাকে সুইডেন। এ সময় প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন তা ভিতর থেকে অনুধাবন করেন তিনি। এ সময় মন্ত্রী জোহান ফোরসেল ২০২৪ সালে সিডার মাধ্যমে বাংলাদেশকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ৭ কোটি ৭০ লাখ সুইস ক্রোনা দেয়ার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। আগের বছরের তুলনায় এ বছর এই অর্থায়ন অনেক বেশি। মন্ত্রী বলেন, উদ্বেগজনক পরিবর্তন দেখছি আমরা বাংলাদেশে। এখানে পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। বহু ত্রাণ বিষয়ক সংগঠনের কেন্দ্রীয় একটি দাতা হলো সুইডেন। এখন আমরা বাংলাদেশে আমাদের মানবিক সমর্থন বৃদ্ধি করছি। জরুরি প্রয়োজন মেটানো, জীবন রক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে।
এই সফরে পরিবেশবান্ধব রূপান্তর এবং বেসরকারি খাতের ভূমিকার দিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী জোহান ফোরসেল এবং উলরিকা মোদির বাংলাদেশে সবুজ রূপান্তর বৃদ্ধিতে বেসরকারি খাতের ভূমিকার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এমন একটি প্যানেলে অংশ নেন। প্রতিনিধি দলটি প্রধান প্রধান সুইডিশ কোম্পানির সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। এর মধ্যে আছে এইচঅ্যান্ডএম, ভলভো, এরিকসন, স্ক্যানিয়া এবং অ্যাটলাস কোপকো। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গেও তারা কথা বলেন। মন্ত্রী জোহান ফোর্সেল প্যানেল আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশের অবিচল অংশীদার হিসেবে থাকবে সুইডেন। বাংলাদেশে সুইডিশ আরও কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি আমি।