প্রথম পাতা
মমতা কি শেষ পর্যন্ত ঢাবিতে ভর্তি হতে পারবে?
প্রতীক ওমর, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
৩০ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবারবিশ বছর আগের কথা। মা মঞ্জুয়ারা বেগমের কোলজুড়ে আলোকিত হয়ে জন্মগ্রহণ করে মমতা খাতুন। প্রসব বেদনা ভুলে মা যখন আনন্দে সন্তানের কপালে চুমু দেয় ঠিক তার উল্টো চিত্র দেখা যায় পিতা রমিজ উদ্দিনের মধ্যে। কন্যাসন্তান জন্ম দেয়া তার কাছে বড় অপরাধ মনে হয়েছে। স্ত্রী এবং কন্যা সন্তানকে রেখে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়িজমায় পাষাণ রমিজ। সেই থেকেই কোলের সন্তানকে নিয়ে অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন মঞ্জুয়ারা বেগম। কখনো দুই বেলা কখনো একবেলা খেয়ে জীবনধারণ করছেন তারা। তিলে তিলে খেয়ে না খেয়ে কন্যা মমতাকে আস্তে আস্তে বড় করেন। স্কুলে ভর্তি করান। পড়ালেখায় ভালোও করে মমতা।
প্রতিবেশী মামা মনির হোসেন এবং কলেজ শিক্ষক জাকিউল ইসলাম সবুজ তার সেই স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করেন। সময়ের হাত ধরে সেই স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মমতা। দুইদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় মেধাতালিকার ১০৪০তম স্থান দখল করেছে সে। সীমাহীন দারিদ্র্যতা উপেক্ষা করে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা সেই শঙ্কা দিন দিন দানা বাঁধতে শুরু করেছে। যেখানে তিন বেলা খাওয়ার জোগার করতে হিমশিম খাচ্ছে অসহায় মা মঞ্জুয়ারা বেগম। সেখানে মেয়েকে কীভাবে টাকা খরচ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করাবেন সেই চিন্তার সমাধান পাচ্ছেন না তিনি। মমতার গ্রামের বাড়ি বগুড়া সদরের বেলগাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা মেলে জড়াজীর্ণ একটি ঘর। সেই ঘরেই বসবাস করে মমতা এবং তার মা। সম্প্রতি মমতার এক মামার সহযোগিতায় বিদ্যুতের সংযোগ পেয়েছেন। এর আগে কুপির বাতি জ্বেলেই পড়ালেখা করতো। মোমবাতি কেনার টাকাও ছিল না তাদের। স্থানীয়রা বলেন, মমতাদের মতো অসহায় পরিবার তেমন দেখা যায় না।
গ্রামের মানুষ যতোটুকু পারে তাদের সাহায্য করে। মমতা খুব ভালো মেয়ে। কখনো কোনো আবদার তাকে করতে দেখা যায়নি। মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে। ওদের বাড়িতে মাত্র কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে। এর আগে মমতা টায়ার জ্বালিয়ে সেই আলোতে পড়ালেখা করতো। কখনো কুপির বাতিতে সে পড়েছে। কষ্টের ফল আজ সে পেয়েছে। মমতার সাফল্যে গ্রামজুড়ে চলছে আনন্দের উৎসব। কথা হয় মমতার মা মঞ্জুয়ারা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, কন্যাসন্তান জন্ম দেয়ার কারণে বিশ বছর আগে স্বামী রমিজ উদ্দিন আমাদের ফেলে চলে গেছে। তারপর থেকেই কলকারখানায় কাজ করে কোনোরকম জীবনধারণ করে চলছি। এখন অসুস্থতার কারণে কোনো কাজও করতে পারছেন না তিনি। ফলে অনাহারে অর্ধাহারে মেয়েকে নিয়ে কোনোরকম দিন পাড়ি দিচ্ছেন। মেয়ের এমন সফলতায় খুশি হলেও ভর্তি এবং ভর্তি পরবর্তী খরচের টাকা জোগান নিয়ে মহা চিন্তায় পড়েছেন তিনি। মমতার কাছে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে মানবজমিনকে বলেন, আমার মতো হতভাগা যেসব কন্যাসন্তান দেশের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবহেলায় পড়ে আছে, বড় হয়ে আমি তাদের নিয়ে কাজ করবো। তাদের ভাগ্য উন্নয়ন নিয়ে কাজ করবো। সর্বপরি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি সোচ্চার থাকবো।
দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমার সব মেধা ব্যয় করবো। প্রতিবেশী মামা মনির হোসেন বলেন, মমতাকে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। সে খুব মেধাবী। ওকে আমি বিনাপয়সায় প্রাইভেট পড়িয়েছি। এখনো পড়াই। মমতাকে যখন যে পড়া দিয়েছি সে মনোযোগ দিয়ে সেই পড়া করেছে। মনির আরও বলেন, আমার ইচ্ছা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। কিন্তু আমার সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। আমার ইচ্ছাকে পূর্ণতা এনে দিয়েছে মমতা। আমি মমতার জন্য গর্বিত। আদর্শ কলেজের শিক্ষক জাকিউল ইসলাম সবুজ বলেন, মমতা যেদিন প্রথম আমার কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য এসেছিল সেই দিন থেকেই ওকে দেখেছি খুব অসহায় পরিবারের সে। আমি তখন থেকেই ওর প্রতি আলাদা নজর দিয়েছি। মমতার যখন যে প্রয়োজন হয়েছে আমি বিভিন্ন শিক্ষকদের সহযোগিতায় তা পূরণ করার চেষ্টা করেছি। মমতা খুব মেধাবী। ওর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অপেক্ষা করছে সেটা আমি আগে থেকেই অনেকটা নিশ্চিত ছিলাম। আমি মমতাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি করার চেষ্টা করবো।
যদি সিরিয়ালে না পায় তাহলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অথবা ইংলিশ বিভাগে ভর্তি করাবো। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১০৪০তম স্থান দখল করার খবর পেয়ে মমতার বাড়িতে ছুটে যান ফাঁপোর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহররম আলী। এ সময় তিনি তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং মিষ্টিমুখ করান। ওই সাবেক চেয়ারম্যান মমতাকে ভর্তি এবং ভর্তি পরবর্তী যেকোনো সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। দেশের আনাচেকানাচে মমতার মতো কন্যাসন্তানদের দেখা মেলে। এমন অসহায় পরিবারগুলোর পাশে সমাজের বিত্তবাদনদের দাঁড়ানো খুব প্রয়োজন। বিত্তবানদের একটু সহযোগিতা পেলে মমতার মতো অদম্য মেধাবীরা দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করতে পারবে। মমতার পরিবার হৃদয়বানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
পাঠকের মতামত
মমতার সাথে সাহায্য জন্য নিচের নাম্বার গুলোতে যোগাযোগ করুন: ০১৫১৫২৯০৭৭৮ ০১৭৩৭৫২২৬৮০(whatsapp)
Please advise us via email we will take initiative for her support
I am interested to help her . So I need contact number of mamata.
মমতার নামে দ্রুত ব্যাংক হিসাব খোলা হউক।
তার ভর্তিতে কত টাকা লাগবে? যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হবে।
Please let me have her Mobile number to help her admission in DU
মমতার শুধু ভর্তির জন্য নয়, ভর্তি এবং পরবর্তী লেখাপড়া ও অন্যান্য খরচ সহ একটা স্থায়ী ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। মমতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে প্রতিমাসেই তার টাকার প্রয়োজন। তার অসহায় মায়ের খরচের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। ভর্তির পরবর্তী মমতার জন্য ঢাকা শহরে টিউশনির ব্যবস্থা করে দিলে অনেক ভালো হয়। তখন হাত পাততে হবে না তার। তাই শুধু এক মমতাকে নয়, বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মমতার মত অনেক অবহেলিত কন্যা সন্তা। আমাদের সহযোগিতার হাত একটু বাড়িয়ে দিলে, হবে তাদের স্বপ্ন। বাংলাদেশ হয়ে উঠবে সত্তিকারের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ।তাই আসুন আমরা সকলে মিলে এদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়াই। ---- মোঃ মহররম আলী সাবেক চেয়ারম্যান ফাঁপোর ইউপি, বগুড়া সদর, বগুড়া। মোবাইল নং - 01716345122
Please give me contact number.
তার ভর্তিতে কত টাকা লাগবে? যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হবে।
I expect momota to carry on. Bangladesh needs momota to be successful. If you face any moneytory problem in near future, just mail me - [email protected]
What a outstanding achievement . We should raise our hand and support her , I would like to support but need to know the right channel . Is there anyone can help to Gert her contact to sent the support