প্রথম পাতা
বসন্ত ভালোবাসার দিন আজ
স্টাফ রিপোর্টার
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবারমাঘের শীতকে বিদায় জানিয়ে প্রকৃতিতে বসন্তের আগমন। ফাগুনের ঝিরিঝিরি হাওয়ার সঙ্গে কোকিলের কুহুতান মন ভরিয়ে দেয়। চোখ জুড়িয়ে যায় বাগানের রক্তিম পলাশ, অশোক, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া, কাঞ্চন পারিজাত, মণিমালা, মহুয়া, রুদ্রপলাশ, কুসুম, মাধবী আর গাঁদার ছোট ছোট ফুলের বর্ণিল রূপে। আবহমান বাংলার প্রকৃতিতে আজ ফাগুনের ছোঁয়া। গাছে গাছে নতুন পত্র-পল্লব। বকুল বৃক্ষের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে পূবের সূর্য। কবির ভাষায় বলছে, ‘নব শ্যামল শোভন রথে এসো বকুল-বিছানো পথে/ এসো বাজায়ে ব্যাকুল বেণু মেখে পিয়ালফুলের রেণু/ এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো।’ আজ পহেলা ফাগুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বলে দিনটি আজ আরও রঙিন। বাসন্তী মোহে মুগ্ধ প্রেমিকযুগল আজ একে অপরকে আবার বলবে- ভালোবাসি। শুধু তারুণ্য নয়, দিবসটি উদ্যাপনে বাড়তি আগ্রহ থাকে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা থেকে শুরু করে সবার। বন্ধু-বান্ধব, বাবা-মা, ভাই-বোন কিংবা কাছের অন্য কেউ- সবাই একে অপরকে শুভেচ্ছ জানান ভালোবাসা দিবসের। গোলাপের পাপড়িতে যেটি আরও রঙিন। লাল-হলুদ পোশাকেও জড়িয়ে আছে বসন্তের রঙ। বিশেষ করে মেয়েদের বাড়তি সাজসজ্জা ঋতু রাজকে আরও রঙিন করে। বাসন্তী রঙের শাড়ির সঙ্গে খোঁপায় শোভা পাবে হলুদ গাঁদা ও লাল গোলাপের টায়রা। বরাবরের মতো এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যদিয়ে উদ্যাপিত হবে পহেলা ফাগুন। সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে থাকবে বসন্ত কথনপর্ব, প্রীতি বন্ধনী বিনিময়, আবির বিনিময়, দলীয় সংগীত, আবৃত্তি, একক আবৃত্তি, একক সংগীত পাঠ, নৃত্য, আদিবাসীদের পরিবেশনা। এ ছাড়াও থাকবে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা। এরপর বকুলতলা থেকে বের হবে বসন্ত র্যালি। ফাগুন ও ভালোবাসা দিবসের সঙ্গে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে অমর একুশে বইমেলা। চারুকলায় সকালে বসন্ত বরণ শেষে বিকালে সবাই ছুটবে বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় আয়োজন অমর একুশে বইমেলায়। নগরজীবনের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে মানুষ সারা বছর এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করে। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও তার আশপাশ থাকে কোলাহলপূর্ণ। বসন্ত মানেই নতুন কলেবর। বসন্ত মানেই পূর্ণতা। তরুণ-তরুণীর বাসন্তী সাজ বাংলার রাজপথ, পার্ক সর্বত্র স্থানকে রঙিন করে তুলবে। গণমানুষের কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক/আজ বসন্ত।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘অযুত বৎসর আগে হে বসন্ত, প্রথম ফাল্গুনে মত্ত কুতূহলী, প্রথম যেদিন খুলি নন্দনের দক্ষিণ-দুয়ার মর্তে এলে চলি।’