ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

মনোনয়ন নিতে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে ধরা ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি

স্টাফ রিপোর্টার
১০ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার

জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিতে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ৫০ লাখ টাকা ধরা খেয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায় (৬৩)। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ভুয়া এনএসআই’র ডিডি পরিচয় দিয়ে মনোনয়ন পাইয়ে দিবে এমন আশ্বাসে প্রতারক চক্রের সদস্যরা তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। পরে মনোনয়নের চূড়ান্ত তালিকায় নিজের নাম না দেখতে পেয়ে দীপক বুঝতে পারেন তার সঙ্গে বড় ধরনের প্রতারণা হয়েছে। পরে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি খুলে বলার পর অভিযোগ যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদের কাছে। ডিবি’র সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (উত্তর) ঘটনার তদন্ত করে প্রতারক চক্রের তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-নুরুল হাকিম (৩১), হাসানুল ইসলাম জিসান (২২) ও মো. হারুন অর রশিদ (২৯)। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। 
ডিবি জানিয়েছে, চক্রটি দীপককে ফোন করে প্রতারক বলে, আমি এনএসআই’র ডিডি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংক্রান্ত ইস্যুতে কাজ করছি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমি কয়েকজনকে বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছি। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ইতিমধ্যে কয়েকজনের মনোনয়নের বিষয়টি আমি নিশ্চিত করছি। আপনার মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। তাই আপনাকে ৫০ লাখ টাকা নগদ দিতে হবে। এরপর ভুক্তভোগীকে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা পুতুল নামীয় একজন মহিলার কণ্ঠের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয় চক্রের সদস্যরা। গত ৩রা সেপ্টেম্বর ঢাকার শাহবাগ থানাধীন সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি এলাকায় অবস্থানকালে মনোনয়নপ্রত্যাশী দীপক কুমার রায়কে হোয়াটসঅ্যাপে কল করে চক্রটি তার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। 
ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার  (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের টার্গেট করে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দেশব্যাপী সক্রিয় হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের টার্গেট করে কাজ করছিল। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গ্রেপ্তার আসামিরা নিজেদেরকে প্রধানমন্ত্রীর সচিব, একান্ত সচিব-২, এনএসআই’র ডিডি পরিচয় দিয়ে ৩টি নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়ন পাইয়ে দিবে বলে ফোন করে। তার ট্রুকলারে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ওইসব ব্যক্তিদের নাম ও ছবি  সেট করে ভুক্তভোগীদের কল দিতো। ভুক্তভোগীরাও ট্রুকলারে তাদের নাম ও ছবি দেখে বিশ্বাস করতো। এভাবে বহু মানুষের কাছ থেকে তারা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়াও গ্রেপ্তার আসামিরা নিজেদের ঢাকা জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক শেখ কামাল হোসেন এবং সাভার উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ শিবলী জামান পরিচয়ে বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে বিভিন্ন সরকারি ভাতা কার্ড প্রদান করা হবে বলেও তালিকা করিয়ে প্রলোভনের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করতো। 
হারুন বলেন, প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগী নিজেই অনেক অনুতপ্ত হয়েছেন। তিনি প্রতারণার শিকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানান। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে আমাদের দেখার জন্য বললে আমরা দুই দিনের মধ্যে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করি। এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকেই প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তবে যারা আমাদের কাছে অভিযোগের বিষয়টি জানিয়েছেন আমরা গুরুত্বের সঙ্গে প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এমন প্রতারণার শিকার আরও কেউ থাকলে আমাদের জানাবেন। অবশ্যই আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status