বাংলারজমিন
সিলেটে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া মাহবুব, আফসরসহ গ্রেপ্তার ৪
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৭ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবারসিলেটের সুবহানীঘাটের পেট্রোল পাম্পের সামনে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদল কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অবরোধের সমর্থনে সড়কে অবস্থান নেয়া ছাত্রদল নেতাদের হটাতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের বন্দুকের আঘাতে গুরুতর আহত ছাত্রদল নেতা লিমনসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা দেড়টার দিকে জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনারের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কাঁচাবাজার এলাকার সামনে থেকে মিছিল বের করে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে ব্যারিকেড দেয়। এতে করে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। প্রায় আধঘণ্টা অবস্থানের পর পুলিশের দুটি টিম গিয়ে অবরোধস্থলে লাঠিচার্জ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কয়েক মিনিটের ধাওয়া-ধাওয়ির পর ছাত্রদল নেতারা মা ও শিশু হাসপাতালের গলি দিয়ে পালাতে চাইলে পুলিশ সেখান থেকে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রাসেল আহমদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন লিমনকে আটক করে। এ সময় কয়েকজন নেতাকর্মী লিমনকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের দিকে ছুটে আসেন। এবং পুলিশের কাছ থেকে লিমনকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুলিশের বন্দুকের আঘাতে ছাত্রদল নেতা লিমন আহত হন। তাকে ছাত্রদলের কর্মীরা পার্শ্ববর্তী আল হারমাইন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করলে সেখান থেকে পরবর্তীতে লিমনকে আটক করে পুলিশ নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রদল কর্মীদের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। এদিকে- দুপুরের দিকে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী ও সদস্য সচিব আফসর খানের নেতৃত্বে নগরীর মীরবক্সটুলা এলাকা থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করা হচ্ছিলো। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালিয়ে মাহবুব ও আফসরকে আটক করে। আটক অবস্থায়ই মাহবুবুল হক চৌধুরী উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন- ‘আমরা গ্রেপ্তার হচ্ছি। কিন্তু আপনারা আন্দোলনে থাকবে। কখনোই আন্দোলন থেকে সরে যাবেন না।’ সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি আলী মোহাম্মদ মাহমুদ বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, পুলিশ দুটি ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এদিকে- বেলা আড়াইটার দিকে নগর বিএনপি’র সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে কাজিটুলা এলাকায় মিছিল বের করে সিলেট মহানগর বিএনপি। মিছিলটি কাজিটুলা পয়েন্টে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা নজিবুর রহমান নজিব, সৈয়দ মইনুদ্দিন সুহেল, নাসির খান, শুয়াইবুর রহমান, মনসুরুল হাসান, সবুর আহমদ, লিটন আহমদ, আজিজ আহমদ প্রমুখ। এদিকে মাহবুব, আফসরসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার, মামলা করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমানো যায় না। এদিকে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বিশ্বনাথ থানায় দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় গতকাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে জামিন নিতে এসেছিলেন ২০ নেতাকর্মী। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রতিদিনই নেতাকর্মীরা জামিন নিতে আদালতে আসছেন। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাকর্মী কারান্তরীণ হচ্ছেন। অনেক নেতাকর্মীকে রিমান্ড নিয়ে পুলিশ নির্যাতন করছে।
মহানগর জামায়াতের মিছিল: সিলেট মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বাকশালী সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আদর্শিক মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে নির্মূলের পথ বেছে নিয়েছে। জনদাবিকে উপেক্ষা করে সরকার আবারো ভোট চুরি করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর। বুধবার দুপুরে জামায়াত আহূত ১০ম ধাপের টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ১ম দিন অবরোধ চলাকালে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পিকেটিং ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন। সোমবার দুপুরে নগরীর মেডিকেল রোড এলাকায় অনুষ্ঠিত পিকেটিং পরবর্তী মিছিল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জামায়াত নেতা এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু, শফিকুল আলম মফিক ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর সেক্রেটারি শরীফ মাহমুদ প্রমুখ।