খেলা
‘গোল্ডেন আর্ম’ মুমিনুলের চমক
স্পোর্টস ডেস্ক
১ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবারদিনের শুরুটা ভালো ছিল না টাইগারদের। শেষ দুই উইকেটে ব্যাট হাতে টাইগারদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠেন নিউজিল্যান্ডের দুই পেস তারকা কাইল জেমিসন ও টিম সাউদি। দিনের শুরুতে ৪৪ রানে পিছিয়ে থাকা কিউইদের স্কোর পেরিয়ে যায় বাংলাদেশের টোটালকেও। বাংলাদেশ দলের নিয়মিত বোলাররা দুই কিউই ব্যাটারকে কিছুতেই বশ করতে পারছিলেন না যেন। এমন সময় আবারও হাজির ‘গোল্ডেন আর্ম’ ক্রিকেটার মুমিনুল হক সৌরভ। বাংলাদেশকে হতাশায় পুড়িয়ে টিম সাউদি ও কাইল জেমিসনের জুটি যখন লিড নিয়ে আরও এগিয়ে যাচ্ছিল, মুমিনুল বোলিংয়ে এসে এক ওভারেই ফিরিয়ে দেন দু’জনকে। আগের দিনও গুরুত্বপূর্ণ একটি উইকেট নেন মুমিনুল।
নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বড় জুটি ভাঙেন তিনি গ্লেন ফিলিপসকে বিদায় করে। মুমিনুলের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন ফিলিপস। এতে থামে কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে তার ৭৮ রানের জুটি। এরপর মূল বোলাররাই চেপে ধরেন নিউজিল্যান্ডকে। মুমিনুলকে আর প্রয়োজন হয়নি। দিনটা দারুণভাবে শেষ করে বাংলাদেশ। কিন্তু গতকাল লিডের আশায় দিন শুরু করা বাংলাদেশ গলদঘর্ম হতে থাকে সাউদি ও জেমিসনের জুটি ভাঙতে। ধারহীন বোলিং ও রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং সাজানোর সুযোগে নিউজিল্যান্ডের দুই পেসার রান বাড়াতে থাকেন অনায়াসেই। নবম উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের স্কোর পেরিয়ে যান তারা। খেলে নেন ১৭ ওভার। প্রথম ঘণ্টা কেটে যায় ওভাবেই।
অধিনায়ক শান্ত এরপর বল তুলে দেন মুমিনুল হকের হাতে। পানি পানের বিরতির পর প্রথমেই আক্রমণে আনা হয় মুমিনুলকে। বাংলাদেশ সাফল্যও পায় হাতেনাতে। প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ জেমিসন! অফস্পিনার মুমিনুলের অনেকটা রাউন্ড আর্ম অ্যাকশনের ডেলিভারিতে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার জেমিসন। রক্ষা পাননি তিনি রিভিউ নিয়েও। ৫২ রানের জুটি ভাঙার পর আর টিকতে পারেননি সাউদিও। মুমিনুলের স্টাম্প সোজা বল অনসাইডে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। মূল বোলাররা দিনের প্রথম ১৭ ওভারে তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেননি। মুমিনুল শেষ দুই উইকেট তুলে নেন স্রেফ ৫ বলেই। ৩.৫ ওভারের স্পেলে ৪ রানে ৩ উইকেট শিকার মুমিনুলের। এটি তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংও।
টেস্ট ক্যারিয়ারে আগেও এক দফায় ৩ উইকেট তিনি পেয়েছিলেন। ২০১৭ সালের পচেফস্ট্রুম টেস্টে প্রথম ইনিংসে বড় লিড নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টায় ছিল। সেবার টেম্বা বাভুমা, ফাফ ডু প্লেসি ও কুইন্টন ডি ককের উইকেট নেন মুমিনুল। সেই ২৭ রানে ৩ উইকেট ছিল তার আগের সেরা বোলিং।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বল হাতে তার ভূমিকা রাখা অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে স্মরণীয় সেই জয়ের পথে দারুণ দুটি ব্রেক থ্রু তিনি এনে দিয়েছিলেন। শুরুতে বিদায় করেছিলেন তিনি ১২২ রান করা ডেভন কনওয়েকে, পরে ৭৫ রান করা হেনরি নিকোলসকেও ফেরান তিনি। টেস্টে তার বাকি দুই উইকেটও নিউজিল্যান্ডর বিপক্ষে। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে তিনি আউট করেছিলেন সেঞ্চুরি করা বিজে ওয়াটলিংকে। আর গত বছর ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ২৫২ রানের ইনিংসের পর মুমিনুলের বলেই আউট হন টম ল্যাথাম।