দেশ বিদেশ
ইসি’র সঙ্গে ইইউ’র বৈঠক আজ
স্টাফ রিপোর্টার
২৯ নভেম্বর ২০২৩, বুধবারদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে আজ আবারো বৈঠকে বসছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল। বৈঠকে সংস্থাটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি আসার কথা রয়েছে। গতকাল নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার নির্বাচন কমিশন ভবনের ৫০২ নম্বর কক্ষে ইইউ’র সঙ্গে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি সূত্র জানায়, বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব মিশন ব্রেন্ড স্পাইনার, সংস্থাটির পলিটিক্যাল অফিসার সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন, সুইডেনের অ্যাম্বাসেডর আলেকজান্ডার বার্গ ফন লিন্দ্রে, ডেনমার্কের অ্যাম্বাসেডর ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মুলার, স্পেনের অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিতেজ সালাস, ইতালির অ্যাম্বাসেডর আন্তোনিও অ্যালেসান্দ্রো, কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অ্যাম্বাসেডর ইরমা ফেন ডুয়েরেন, ফ্রান্সের ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেম ডে কারড্রেল ও জার্মান অ্যাম্বাসির এক প্রতিনিধিসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত থাকতে পারেন। এর আগে ২২শে নভেম্বর বৈঠক করতে চেয়ে সিইসিকে ই-মেইল করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। এতে বৈঠকের জন্য ২৭শে নভেম্বর সময় চেয়েছিলেন তিনি। তবে বেশির ভাগ কমিশনার নির্বাচনী সফরে ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় ২৭শে নভেম্বরের পরিবর্তে ২৯শে নভেম্বর সময় দেয় ইসি। ইইউ রাষ্ট্রদূতের চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ নির্বাচন উপলক্ষে আমরা এরই মধ্যে আপনাদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করেছি। চিঠিতে আরও জানানো হয়, আগামী সপ্তাহে ইইউ মিশনের প্রধানদের সঙ্গে আপনারা যৌথ বৈঠকের সুযোগ করে দেবেন। ২৭শে নভেম্বর বিকাল ৩টায় আপনার সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহ প্রকাশ করছি। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া ও আলোচনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।
এর আগেও কয়েক দফায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সংস্থাটি থেকে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে দুই দফায় ইসি’র সঙ্গে বৈঠক করেন ইইউ প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা জানতে চায় ইইউ। এ ছাড়া দেশের নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা। পরবর্তীতে ইইউ পর্যবেক্ষক দল নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা জানান এবং পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে সিইসি স্বল্প পরিসরে হলেও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর জন্য ইইউকে চিঠি দেন।
ভোট পর্যবেক্ষণে বিদেশিদের সুবিধার্থে একগুচ্ছ পরিকল্পনা ইসি’র: এদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ দেখতে অন্য দেশ থেকে যেসব অতিথি, পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকরা আসবেন তাদের জন্য সবকিছু যাতে সহজ হয় সেজন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে (ইসি) অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিমানবন্দরে হেল্প ডেস্ক চালু থেকে শুরু করে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্যও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সভা শেষে নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। ইসি সচিব বলেন, আমরা বিমানবন্দর, হোটেলে একটি হেল্প ডেস্ক স্থাপন করবো। যেন বিদেশি অতিথি, পর্যবেক্ষকরা প্লেন থেকে নেমেই খুব সহজেই সার্বিক তথ্য পেয়ে যেতে পারেন। তারা যেন ইমিগ্রেশন ক্রস করে নির্ধারিত হোটেলে পৌঁছাতে পারেন সেসব বিষয়ে সেখান থেকে দেখা হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনী কীভাবে নিয়োজিত থাকবে সার্বিক বিষয়গুলো আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগতদের মধ্যে কেউ যদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা কীভাবে হবে সেগুলো নিয়ে আমরা একটি রূপরেখা তৈরি করেছি। অবশ্য এখনো কতো অতিথি কিংবা পর্যবেক্ষক ভোট উপলক্ষে আসবেন তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই বলে জানান ইসি সচিব।
তিনি বলেন, এটা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি যে, কতোজন আসবেন। কারণ যারা নিজ খরচে আসবেন তাদের জন্য আমরা আবেদনের সময় বর্ধিত করেছি ৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর যারা আমন্ত্রিত অতিথি তাদের রেজিস্ট্রেশনের সময় রয়েছে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে এই সময়ের পরে সঠিক সংখ্যা বলা যাবে যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক এবং অতিথি হিসেবে কতোজন আসছেন। জাহাংগীর আলম আরও বলেন, কে কোন ধরনের সুবিধা পাবেন সেটা নির্ধারণ হবে পরে। কারণ কোনো দেশের যদি সিইসি আসেন তাহলে তার জন্য এক ধরনের সুবিধা দেয়া হবে। কোনো দেশের যদি সচিব আসেন তাহলে তার জন্য আরেক রকম সুবিধা দেয়া হবে। তাই যারা আসছেন সেটা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সিকিউরিটি প্ল্যানটা বলা যাবে না। তবে এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি বিদেশি পর্যবেক্ষক মেহমান যারাই আসবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় সে বিষয়ে আমরা আজকের আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।