দেশ বিদেশ
মানববন্ধনে বিরোধী জোটের নেতারা
‘এই পরিস্থিতির অবসান করতেই হবে’
স্টাফ রিপোর্টার
২৯ নভেম্বর ২০২৩, বুধবার২৮শে অক্টোবর মহাসমাবেশে সংঘর্ষের দীর্ঘ এক মাস পর প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। নজরুল ইসলাম খান ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটতে ইসলামী আন্দোলনের জাতীয় সংলাপে অংশ নেন। ওদিকে কারানির্যাতিত বিএনপি নেতাদের স্বজনদের নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, এখানে আপনারা দেখেছেন অনেক মা, অনেক বাবা আজকে কাঁদছে। তাদের স্বজনরা আজ কেউ কারাগারে, কেউ গুম হয়ে গেছে, কেউ খুন হয়ে গেছে। কিন্তু এই সরকারের হৃদয়ে তাদের কান্নার শব্দ নাড়া দেয় না। ওরা অবৈধ ক্ষমতাকে শুধুমাত্র টিকিয়ে রাখতে মরিয়া হয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সমানে কারাগারে ঢুকাচ্ছে। এই পরিস্থিতির আমরা অবসান চাই। এই অবস্থার অবসানে আসুন এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা রাজপথে নামি, প্রতিবাদ জানাই। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই স্বজনরা আছেন তাদের বুকের কান্না আপনারা শুনেছেন। আপনারা সবাই জানেন, গ্রেপ্তার করার জন্য গিয়ে তাকে না পেয়ে যাকে-তাকে গ্রেপ্তার করছে, ভাইকে গ্রেপ্তার করছে। একেবারে হৃদয়হীন একটা সরকার।
এরা মানুষের কষ্টে আনন্দ পায়। যাদের আত্মীয়স্বজনরা জেলে আছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্য, আপনারা আজকে প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দেবেন। প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন কিনা জানি না, কিন্তু কাগজটা যদি পৌঁছে উনি (প্রধান বিচারপতি) যদি পড়ে দেখেন। উনার কিছু করবার আছে বলে মনে হয় না। বিচারব্যবস্থা এখন একদম সরকারের হাতের মুঠোয়। পুলিশগুলো চলে সরকারের নির্দেশে, তার বাইরে নয়। অতএব, লড়াই করতে হবে সরকারে বিরুদ্ধে রাজপথে। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, রাজবন্দিদের স্বজনদের এই অনুষ্ঠানে মা-বোন-বাবার কথা শুনে কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে চোখে পানি রাখা খুবই কঠিন। গত দুইমাস ধরে ইসরাইলের আক্রমণে গাজায় যে রকম মানবিক বিপর্যয় চলছে গত অনেকগুলো বছর ধরে ২৮শে অক্টোবরের পরে এখানে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, মাননীয় প্রধান বিচারপতি আমরা পরিষ্কার করে এই নিবেদন আপনার কাছে রাখতে চাই, গত ২৮শে অক্টোবর যে সমাবেশগুলো ছিল তার মধ্যে বিএনপি’র মহাসমাবেশে আমরা মনে করি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে কতিপয় এজেন্টদেরকে দিয়ে সেখানে পরিকল্পিত সহিংসতা তৈরি করা হয়েছে। সেই সহিংসতাকে ব্যবহার করে সরকার সমস্ত দোষ বিরোধী দলের ওপরে দিয়ে তারা নির্বিচারে একটা সর্বাত্মক দমনপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি’র মহাসচিব থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদেরকে শত শত মামলা দিয়ে আজকে পর্যন্ত প্রায় ১৯/২০ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ কাস্টডিতে তাদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। তাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। এমনকি গণতন্ত্রের মঞ্চের নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা সাজানো হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আজকে মায়েরা রাস্তায় নেমেছেন, আজকে শিশুরা রাস্তায় নেমেছেন, তারা ফরিয়াদ করছে ন্যায়বিচারের জন্য। বাংলাদেশের মানুষ রাজপথে নামার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। কোনো দমনপীড়নে কাজ হবে না, রাজপথ দখল করে বাংলাদেশের মানুষ এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামতে বাধ্য করবে।