দেশ বিদেশ
ভারতীয় নিম্নমানের চিনি দেশীয় মোড়কে বাজারজাত করতো তারা
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবারদীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে নিম্নমানের চিনি আমদানি করে এস আলম, ফ্রেস, ইগলুসহ দেশীয় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মোড়কে বাজারজাত করতো। এমন অভিযোগে ওই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত রোববার রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার কমলাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক টন চিনিসহ তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি’র মতিঝিল বিভাগের স্পেশাল অপারেশনস্ টিম। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- নিমাই বণিক (৪৪), মীর হোসেন (৩৮) ও আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (৩৯)।
গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, সম্প্রতি দেশের একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে তারা বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মোড়কে একটি চক্র ভারতীয় নিম্নমানের চিনি বাজারজাত করছে। এতে মানুষ প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে মাঠে নামে ডিবি’র মতিঝিল বিভাগ।
হারুন বলেন, তদন্তে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে কুমিল্লার সাহেব বাজারের মমিন ব্রাদার্স মূলত প্রতিদিন ৪০০-৫০০ বস্তা চিনি চোরাচালানের মাধ্যমে সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এনে কুমিল্লা সদর থানার বারাপাড়ার আরিশা ট্রেডার্সের মালিক খোরশেদের গুদামে মজুত করতো। এরপর এস আলমসহ দেশীয় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নকল মোড়কে প্যাকেট করে বিক্রি করতো। এরপর নিমাই বণিকের নির্দেশে আরিশা ট্রেডার্সের গুদামে মজুতরা অবৈধ চিনি ফেনীর ইসমাইল ব্রাদার্স, চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জের জমজম ট্রেডার্স, চট্টগ্রামের আল মদিনা ট্রেডার্স, শহীদ ট্রেডার্সসহ ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে বাজার দরের চেয়ে কম দামে বিক্রি করা হতো।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, দেশের বাজারে চিনির ৫০ কেজির প্রতি বস্তার দাম ৬ হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু ভারতীয় চিনি প্রতি বস্তা ৬ হাজার ২০০ টাকা। প্রতিদিন মমিন ট্রেডার্স আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ বস্তা চিনি কর ফাঁকি দিয়ে এনে এভাবে বিক্রি করতো। এর কারণ হিসেবে তারা আমাদের জানিয়েছে, দেশে চিনির দাম বেশি। অপর দিকে ভারতে চিনির দাম কম তাই ভারতীয় চোরাকারবারিরা লাভের আশায় বাংলাদেশের চোরাকারবারিদের কাছে চিনি বিক্রি করছে। তারা বস্তা প্রতি ৪০০-৫০০ টাকা কম দামে বিক্রি করতো। এরপর দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে বাজারে ছাড়া হতো। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশের চিনি শিল্প ধ্বংসের দারপ্রান্তে। এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, দেশীয় বাজারের চিনির মূল্যের উপর ভারতীয় চোরাকারবারিরা চিনির মূল্য নির্ধারণ করে। এ রকম অসংখ্য চোরাকারবারি চক্র সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। যারা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।