শরীর ও মন
লিভারের বিপদ ন্যাশ হলে করণীয়
ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নিল
২৭ নভেম্বর ২০২৩, সোমবারন্যাশ হলো নন-অ্যালকোহলিক স্টিয়াটো হেপাটাইটিসের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি লিভারের একটি প্রদাহ। ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ন্যাশের বেশ সম্পর্ক আছে। ফ্যাটি লিভারের একপর্যায়ে শুরু হওয়া লিভারের প্রদাহকে ন্যাশ বলা হয়। ন্যাশ ও ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে স্থূলতা এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস থাকতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং পরিশ্রমের অভাব এ সমস্যাকে আরও জটিল ও গুরুতর করে তুলতে পারে।
লক্ষণসমূহ
দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ন্যাশের কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না। কোনো কারণে পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম অথবা লিভারের কিছু পরীক্ষা করতে গিয়ে ন্যাশ শনাক্ত হতে পারে। কখনো কখনো ওপর পেটের ডান দিকে হালকা ব্যথা বা চাপ অনুভূত হতে পারে। লক্ষণ থাকে না বলে যাদের ওজন বেশি, টাইপ-২ ডায়াবেটিস আছে বা যাদের পেটের মাপ বেশি, তাদের এমনিতেই রুটিন পরীক্ষা করা ভালো।
রোগ নির্ণয় বা পরীক্ষা: পেটের আল্ট্রাসনোগ্রামের পাশাপাশি অনেক সময় ন্যাশ নিশ্চিত করতে হলে লিভার বায়োপসি করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে লিভারের কিছু বায়োকেমিক্যাল টেস্ট করেও ন্যাশ সম্পর্কে অনেকটা ধারণা লাভ করা যায়।
লিভারের কতোটুকু ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে কিছু পরীক্ষা করার দরকার পড়তে পারে।
কিছু জটিলতা: ন্যাশ হলে এর প্রতিরোধ অথবা সঠিক চিকিৎসা না করা হলে রোগটি লিভার সিরোসিস, এমনকি লিভার ক্যান্সারের মতো রোগে রূপান্তরিত হতে পারে।
চিকিৎসা: ন্যাশের চিকিৎসা বেশ জটিল হয়ে থাকে। ন্যাশ প্রতিরোধ করাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত কায়িক শ্রম এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মাধ্যমে ন্যাশ প্রতিরোধ অনেকাংশেই সম্ভব। ন্যাশের চিকিৎসায় কিছু ওষুধেরও ভূমিকা অবশ্যই আছে। ডায়াবেটিস এবং রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকলে একইসঙ্গে সেগুলোও নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। ওজন ও ভুঁড়ি কমাতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
মনে রাখতে হবে ন্যাশ হলে এর অবহেলায় যেহেতু লিভারের মারাত্মক রোগগুলো হয়ে থাকে; তাই এ রোগ সম্পর্কে সচেতন হয়ে লিভারের কোনো রোগ হলেই বিলম্ব না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ভালো থাকুন এবং আপনার লিভারের যত্ন নিন।
লেখক: অধ্যাপক ও ডিভিশন প্রধান, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং আঞ্চলিক পরামর্শক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
চেম্বার: ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, মিরপুর রোড, ধানমণ্ডি, ঢাকা।
হটলাইন-১০৬০৬