খেলা
প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ক্রীড়াবিদরা
স্পোর্টস রিপোর্টার
২০ জুন ২০২২, সোমবার
অসহায় ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক এবং তাদের পরিবারকে নিয়মিতই সহায়তার অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঠিক একইভাবে দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদেরও সংবর্ধনায় কার্পণ্য করেন না তিনি। এবার প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেলেন জাতীয় পুরুষ ফুটবল, অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল এবং ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের সদস্যরা। দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের হাত থেকে এমন সংবর্ধনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ক্রীড়াবিদরাও। ২০২০ সালে মুজিববর্ষে নেপালের বিপক্ষে দুই ম্যাচে সিরিজ জয়ী ফুটবল দলের সদস্য জাতীয় দলের তারকা ফুটবলার তপু বর্মণ। প্রায় ছয় মাসের বেশি সময় মাঠের বাইরে। এই সময়টা তার খুব কষ্টে কেটেছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সংবর্ধনা পাওয়ার পর অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে এই ফুটবলার। প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেয়ে তপু বলেন, ‘ইনজুরিতে পড়লে খুব কঠিন সময় যায় ক্রীড়াবিদদে। আজ (গতকাল) প্রধানমন্ত্রীকে কাছ থেকে দেখলাম এবং ফুটবলের জন্য সংবর্ধনা পেলাম এটা আমাকে মানসিকভাবে দারুণ উদ্দীপ্ত করছে।’ তবে অর্থের অঙ্কের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতাকেই অনেক বেশি বড় করে দেখছেন ফুটবলাররা। তপু যোগ করেন, ‘করোনাকালীন সময়ে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের লাখ লাখ মানুষ। এরমধ্যেও প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডেকে সম্মানিত করেছেন। স্বাভাবিক সময় হলে হয়তো আমরা ছবি তুলতে পারতাম এবং কুশলাদি বিনিময় হতো। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাওয়াত দিয়েছেন সামনে আবার ভালো কিছু অর্জন করে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী কাছে যাওয়ার আশা রাখি।’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রীড়াবিদদের উদ্দেশ্য বলেন,‘ভবিষ্যতে আরও ভালো খেলতে হবে। যখন খেলতে নামবে, তখন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মানসিকতা নিয়ে নামবে। আমি সব সময় তোমাদের পাশে আছি। তোমাদের যখন যা লাগে আমি দেবো’। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় তিন দলের প্রত্যেক ক্রীড়াবিদকে পাঁচ লাখ টাকা করে এবং কোচ ও কর্মকর্তাদের দুই লাখ টাকা করে অর্থ পুরস্কার দেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবনে আয়োজিত এই সংবর্ধনায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ক্রীড়াঙ্গনে সাম্প্রতিক সময়ের সাফল্য ও গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম তুলে ধরেন। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। জামাল-তপুদের সঙ্গে সংবর্ধনা পেয়েছেন সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলও। ২০২১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলেন মারিয়া মান্ডারা। ওই দলের প্রত্যেক ফুটবলারকেও পাঁচ লাখ এবং কোচ ও কর্মকর্তারা দুই লাখ টাকা করে অর্থ পেয়েছেন। নারী ফুটবল দলের দলনেতা জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলা অত্যন্ত ভালোবাসেন এবং বিশেষ করে নারী ফুটবলের প্রতি উনার অত্যন্ত সুনজর রয়েছে। নারী ফুটবলাররা প্রধানমন্ত্রীর এই সংবর্ধনায় অত্যন্ত অনুপ্রাণিত এবং সামনের টুর্নামেন্টে তারা আবারো চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আবারো সংবর্ধনা নিতে চায়।’ তবে নারী ফুটবল দলের ক’জন ফুটবলার গণভবনে যেতে পারেননি। ১৯শে জুন থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তাই পরীক্ষার্থী ফুটবলারদের নাম বাদ দিয়ে বাফুফে তালিকা পাঠিয়েছিল। পরীক্ষা বন্যার জন্য বাতিল হলেও পরবর্তীতে আর নাম সংযোজনের সুযোগ ছিল না বাফুফের। এদিেক নারী ও পুরুষ ফুটবল দলের পাশাপাশি ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড দলও প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেয়েছে। মার্চে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত চারজাতি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। তিন দলের ৬৬ জন ক্রীড়াবিদ ও ২২ জন কোচ-কর্মকর্তা সংবর্ধনা পেয়েছেন। এরমধ্যে ২৫ জন পুরুষ ফুটবলার, ২৩ জন নারী ফুটবলার এবং ১৮ জন প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার ছিলেন। এই ৮৮ জনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী চারজনকে ডেকে হাতে উপহার তুলে দেন। তারা হলেন- পুরুষ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা, নারী দলের অন্যতম খেলোয়াড় মনিকা চাকমা এবং ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ফয়সাল খান। বাকি ৮৪ জনের উপহার তাদের হাতে হাতে পৌঁছে দেয়া হয়।