ঢাকা, ২১ মে ২০২৪, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

ডলারের দামে নতুন রেকর্ড

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১০ নভেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
mzamin

ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালেই আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এর বাইরে বর্তমানে বাড়তি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসীদের পাঠানো ডলার কিনতে পারে দেশের ব্যাংকগুলো। বাড়তি এই প্রণোদনা ঘোষণার পর দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বাড়লেও কমেনি ডলারের বাজারের উত্তাপ। টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় মূল্যে নতুন রেকর্ড গড়ছে। খোলাবাজারে ডলারের দাম এরই মধ্যে ১২৬ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

গতকাল রাজধানীর দিলকুশা ও পল্টনের বেশিরভাগ মানি চেঞ্জারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে। দেশের ইতিহাসে এটিই ডলারের সর্বোচ্চ দাম।
জানা গেছে, গতকাল খোলাবাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা। যেখানে গত সপ্তাহে এক ডলার ছিল ১২০ থেকে ১২১ টাকা।

পল্টনে ডলার কিনতে আসা মানিক বলেন, জরুরি কাজে অল্প কিছু ডলারের প্রয়োজন ছিল। ব্যাংকে গিয়ে ডলারের ব্যবস্থা করতে পারিনি। এজন্য খোলাবাজারে এসেছিলাম। এখানে ডলারের দাম অনেক বেশি।

বিজ্ঞাপন
তাই ডলার ক্রয় না করেই চলে যাচ্ছি।

এর আগে সর্বপ্রথম ২০২২ সালের আগস্টে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় উঠেছিল। এরপর বেশ কয়েক মাস ডলারের দাম কিছুটা কমতির দিকে ছিল। তবে চলতি বছরের অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২০ টাকায় উঠে। তবে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতা ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায় ঠেকেছে ডলারের দাম।

এদিকে বাড়তি প্রণোদনা দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলো বাধ্য নয়। ব্যাংক যদি প্রবাসী আয় কিনতে চায় তাহলে এই প্রণোদনা দিতে পারে। নতুন এই সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে প্রবাসীরা ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছে। এর আগের মাসে এসেছিল ১৩৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৩ কোটি ডলার।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাড়তি প্রণোদনা দেয়ার ফলে স্বল্প সময়ের জন্য প্রবাসী আয় কিছুটা বাড়বে। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান না। তাই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে হলে ডলারের দামের পার্থক্য আরও কমাতে হবে। কারণ ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা ডলার ও হুন্ডির মাধ্যমে আসা ডলারের দরের মধ্যে এখনো বড় পার্থক্য রয়েছে।

ব্যাংক বাড়তি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিলেও প্রতি ডলারের দাম পড়বে প্রায় ১১৬ টাকা। তবে এবিবি ও বাফেদা জানিয়েছে, বাড়তি প্রণোদনা সহ প্রতি ডলারের দাম ১১৫ টাকার বেশি হবে না। আর অপ্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে বর্তমানে ডলারের দাম ১২৬ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসাহিত হবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠান না বলে জানান এক সৌদি প্রবাসী। তিনি গত দশ বছর ধরে সৌদির বিভিন্ন খাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। প্রথম দুই বছর তিনি ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশটি থেকে অর্থ পাঠাতেন বলে জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে প্রতি রিয়ালে ২৯ টাকা ২৮ পয়সা থেকে ৩০ পয়সা পাওয়া যায়। আর হুন্ডির মাধ্যমে ৩১ টাকা থেকে ৩২ টাকা পাওয়া যায়। তাই এখন অধিকাংশ সময়ে হুন্ডিতে দেশে অর্থ পাঠাই। কারণ যেখানে বেশি দাম পাবো সেখানেই পাঠাবো। অনেক কষ্ট করে আয় করতে হচ্ছে। অনেক সময় কাজ থাকে না, তখন খুব কষ্টে জীবনযাপন করতে হয়।

করোনার সময়ে দেশের রিজার্ভ ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করেছিল। তখন রেকর্ড উচ্চতায় ঠেকেছিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হতে থাকে। ফলে ডলারের চাহিদা ও ব্যয় বাড়তে থাকে। এরপরে তৈরি হয় ডলারের ব্যাপক সংকট। সেই সংকট চলছে প্রায় দুই বছর ধরে। রিজার্ভ থেকে ধারবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ কমে ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status