ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

পায়ুপথের (কলোরেক্টাল) রোগের উপসর্গসমূহ

ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
১৩ অক্টোবর ২০২৩, শুক্রবার

পায়ুপথে বিভিন্ন রোগসমূহ হলো পাইলস, ফিস্টুলা, ফিসার, এনাল ফিসার, প্রলেপস বা পলিপস ইত্যাদি পায়ুপথের রোগ। এই রোগের অন্যতম উপসর্গ হলো মলদ্বার দিয়ে রক্ত যাওয়া। এ ছাড়া রোগ অনুযায়ী বিভিন্ন উপসর্গ বা লক্ষণও রয়েছে।
যেভাবে বুঝবেন পায়ুপথের রোগে ভুগছেন
- যদি ফিস্টুলা হয়, তাহলে  এর জটিল লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়, অনেক সময় ফোঁড়ার মতো হয়, ফোঁড়াটা বেশ  বড় হয়ে, এরপর হঠাৎ করে ফেটে যায়। যখন ফোঁড়াটা হয়, তখন প্রচণ্ড ব্যথা হয়, জ্বরও আসতে পারে। ফোঁড়াটা ফেটে গেলে তখন কিছুটা আরাম আসে। কিন্তু ফোঁড়াটা বাইরে শুধু ফাটে না, ভেতরেও ফেটে যায়। তখন একটি নালি তৈরি হয়।  এই লক্ষণ অনেক দিন ধরে থাকে না। এরপর হঠাৎ করে আবার মলের ময়লা ওই নালির অ্যাবসেস দিয়ে যেতে পারে, সেহেতু সেটা আবার ফোলা শুরু করে। হয়তো আগের মতো অত ফুলে না, কিন্তু আবার একইভাবে ফেটে বের হয়ে আসতে পারে। এ রকম চলতে থাকে। সুতরাং বাইরে একটি মুখ থাকে এবং ভেতরে একটি মুখ থাকে। এটি হলো পায়ুপথের ফিস্টুলা।
- পাইলস থেকে রক্ত পড়ে। এটাকে চার ভাগে ভাগ করা হয়- প্রথম ডিগ্রি হলে ভেতরে থাকে, কিন্তু বের হয়ে আসে না, রক্ত পড়ে। দ্বিতীয় ডিগ্রি হলে বের হয়ে আসে পায়খানা করার সময়, আবার নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায়। তৃতীয় ডিগ্রি হলে বের হয়ে আসে, তবে পরে নিজেকে পুশ করে ঢুকিয়ে দিতে হয়। আর চতুর্থ ডিগ্রি হলে বের হয়ে এলেও পুশ করলেও বাইরে থাকে। এই পরের তিন ডিগ্রিগুলো রক্তপাত হতেও পারে, নাও হতে পারে। এগুলো হলো পাইলসের লক্ষণ।
- ফিসারটা হলো খুব জটিল। হঠাৎ করে হয়তো কোষ্ঠকাঠিন্য হলো এবং জোর করে পায়খানা বের হয়ে আসাতে, পায়ুপথের ওখানে ছিঁড়ে যায়। ছিঁড়ে গেলে তো অবশ্যই প্রচণ্ড ব্যথা হবে এবং একিউট (স্বল্পমেয়াদি) ফিসার যেটি, এখানে পায়খানা করতে গেলেই ব্যথা শুরু হয়, সেই ব্যথা অনেকক্ষণ ধরে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে কমে। আর এর যদি দ্রুত চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি দীর্ঘমেয়াদি হয়ে যায়। ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদি) ফিসার হলে তখন অন্য রকম লক্ষণ হয়। লক্ষণ তত মারাত্মক হয় না। তবে দীর্ঘমেয়াদি হয়।
- প্রলেপস হলো পায়ুপথ থেকে মলদ্বারটা বের হয়ে আসে। এতে দুই ধরনের অবস্থা দেখা দেয়। একটি হলো মেয়েদের। মেয়েদের যদি সন্তান জন্মদানের সময় কোনো আঘাত হয়, তাহলে তাদের প্রলেপস হতে পারে। আর শিশু বয়সে অপুষ্টি, ডায়রিয়া ইত্যাদি থেকেও সমস্যা হতে পারে। এগুলো বেনাইন।
-  পায়ুপথের ক্যান্সার হতে পারে। এ ছাড়া প্রদাহরোধী বাউয়েল ডিজিস হতে পারে।
যে ধরনের ক্যান্সার সেটা যদি পায়ুপথে হয়, স্কোমারসেল করসিনোমা হয়, তাহলে এটি রেডিও, কেমোথেরাপিতেও শেষ হতে পারে। কিন্তু এডিনোকারসিনোমা যেটি হয়, এতে রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপির পাশাপাশি অস্ত্রোপচার লাগে।
আর প্রদাহজনিত বাউল ডিজিস, যেমন টিউবার কলোসিস, এগুলো সারতে রোগ নির্ণয় করতে হয় এবং সঠিক চিকিৎসা করতে হয়।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ) কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। 
চেম্বার: ১৯ গ্রীন রোড, একে কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা। ফোন-০১৭১২-৯৬৫০০৯

 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status