প্রথম পাতা
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ
স্টাফ রিপোর্টার
৪ অক্টোবর ২০২৩, বুধবার
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ‘অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে বিএনপি’র চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সুচিকিৎসা পাওয়া একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বেগম খালেদা জিয়া দেশের একজন সিনিয়র সিটিজেন। সংবিধানে তাকে বেঁচে থাকার জন্য চিকিৎসা গ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করেছে। যে রোগের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়, সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে বাধা দেয়া সংবিধানকে অবজ্ঞা করা। প্রকৃতপক্ষে দেশনেত্রীকে সংবিধানে দেয়া চিকিৎসা সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে- যা অন্যায়, অমানবিক ও অসাংবিধানিক। আমরা মনে করি, দারুণভাবে অসুস্থ এবং দেশে চিকিৎসা অসম্ভব হওয়া সত্ত্বেও একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আইনের দোহাই দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখার সুযোগ নেই। সরকার হীন উদ্দেশ্যে আইনের দোহাই দিয়ে চিকিৎসা থেকে দেশনেত্রীকে বঞ্চিত রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পুনরায় সরকারকে বলবো, রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষকে অন্যায়ভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার পরিণতি কখনো ভালো হয় না বিধায় যত দ্রুত সম্ভব দেশনেত্রীকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে একজন নাগরিক হিসেবে তাকে রোগের চিকিৎসা পাওয়ার সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেয়া হোক।
খালেদা জিয়ার ৮০ বছর বয়স হয়েছে, অসুস্থ তো হবেনই, সময় হয়ে গেছে এত কান্নাকাটি করে লাভ নেই- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। এত অশালীন, কুরুচিপূর্ণ, দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল জায়গা থেকে দিতে পারেন না সেটা আমরা ভাবতে পারি না। তার বক্তব্যে প্রমাণ হয়েছে এদেশের মালিক একজন। এদেশে শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউ নেই। বিচার বিভাগ তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি আইন আদালতের তোয়াক্কা করেন না। বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যে কথা তিনি বলেছেন তাতে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ফুটে উঠেছে। কতোটা অমানবিক হলে এ ধরনের কথা তিনি বলতে পারেন।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে শর্ত দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো শর্ত সাপেক্ষে তিনি বিদেশে যাবেন না- এটা পরিবার থেকে বলে দেয়া হয়েছে। বেগম জিয়াকে হাসপাতালে রেখে কেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেও বিএনপি কোনো নির্বাচন যাবে না। এটা একেবারেই পরিষ্কার কথা।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি’র পরবর্তী সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তো জোর করে তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারি না। এখনকার চিকিৎসা যেভাবে হচ্ছে সেইভাবেই চালিয়ে যাবো। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের আন্দোলনে সরকারের পতন হবে। তখন খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা পাবেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের বাইরে যেতে পারি না। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে যাবো, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে যাবো। এরপরে যদি কেউ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেয় সেই বাধাও আমরা গণতান্ত্রিকভাবে অতিক্রম করবো। এই জন্যই আমরা গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলি। আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু প্রমুখ।
পাঠকের মতামত
অত্যন্ত দু:খজনক ! রাষ্ট্রের সবো'চ্চ পদে বসে যে ভাষায় কথা বলেছেন তাতে ইরশা এবং হিংসা দুটিরই বহি:প্রকাশ ঘটেছে। নতুন প্রজন্মের জন্য অশনি সংকেত।
এসব কুরুচিপুর্ণ বক্তব্যের বিপরীতে মহাসচিব হিসেবে আপনার উচিৎ ওনার প্রতিটি বক্তব্য খন্ডন করে জোগায় জবাব দিয়ে জাতির বিভ্রান্তি দূর করা.
মন্তব্য করুন
প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন
প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]