বাংলারজমিন
রংপুর-১
নির্বাচন ঘিরে টানাটানি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির
জাভেদ ইকবাল, রংপুর থেকে
৪ অক্টোবর ২০২৩, বুধবারদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রংপুরে নড়েচড়ে বসেছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। এদিকে ভোটের মাঠে নীরব বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তবে দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে কিনা এমন শঙ্কায় রয়েছেন ভোটাররা। তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুর আংশিক সিটি করপোরেশন নিয়ে গঙ্গাচড়া-১ আসন। ৯ ইউনিয়ন নিয়ে এ আসনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪০৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১৮ হাজার ২৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৪৪ জন। ১৯৯১ সাল থেকে রংপুর-১ গঙ্গাচড়া আসনটি রয়েছে জাতীয় পার্টির দখলে। গঙ্গাচড়া আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র ভোট ব্যাংক থাকলেও জামায়াতে ইসলামীর অবস্থানও বেশ ভালো।
রংপুর-১ গঙ্গাচড়া আসনের এমপি দল থেকে বহিষ্কৃত জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার পরিবর্তে এ আসনে আগামী নির্বাচনে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ভাতিজা হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ মনোনয়ন পাবেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। সেই লক্ষ্যে আসিফ প্রচার-প্রচারণা শুরু করলে সম্প্রতি রাঙ্গা সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ বলেন, এমপি থাকাকালীন এলাকার উন্নয়ন করেছি, তাই এলাকাবাসী আবারো আমাকে চায়। এদিকে স্থানীয় সমর্থকরা দলের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানকে লাঙ্গল প্রতীক দেয়ার দাবি তুলেছেন। জোটগত কারণে ছাড় দেয়া জাতীয় পার্টির এ আসন দখলে নিতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। তারা আর ছাড় দিতে রাজি নয়- এমন দাবি ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের। এ আসনে গত ১ যুগ ধরে নৌকার নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড রেজাউল করিম রাজু। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড মনোনয়ন দিলে আমি নেত্রীকে এ আসন উপহার দেবো। নির্বাচিত হলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, কৃষিভিত্তিক কলকারখানা গড়ে বেকার সমস্যা সমাধানসহ এলাকার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করবো। এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের আশা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন গঙ্গাচড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু। গত সংসদ নির্বাচনে বাবলু উপজেলা চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। বর্তমান সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও অস্বস্তিতে ভুগছেন। এদিকে প্রতিবারের মতো এ আসনে জাতীয় পার্টির মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে থাকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর সঙ্গে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মানবজমিনকে বলেন, নির্বাচনে দল অংশ নেবে কিনা তা চূড়ান্ত হয়নি। তবে নির্বাচনের পরিবেশ ও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত হলে গঙ্গাচড়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ওয়াহেদুজ্জামান মাবু, মোকাররম হোসেন সুজন, জামায়াতে ইসলামীর রায়হান সিরাজীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে। অপরদিকে, অবহেলিত গঙ্গাচড়ার আসনকে মডেল হিসেবে গড়ে তুলে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গণসংযোগ করছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু), রংপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি, এডভোকেট মোস্তাফিজার রহমান বুলু (এমএ, এলএলবি)। ওদিকে ‘বহিরাগত হটাও, গঙ্গাচড়া বাঁচাও’ এমন স্লোগান নিয়ে মাঠে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সিএম সাদিক। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আগামী নির্বাচন হবে কিনা এমন আশঙ্কা করছেন এলাকার সাজু মিয়া, আবুল কালামসহ অন্যরা।