শরীর ও মন
বিশেষায়িত শিশুদের খেলাধুলা ও শরীরচর্চা
ডা. এমএ হক, পিএইচডি
২ অক্টোবর ২০২৩, সোমবারবেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় অটিজম শিশু কারও সঙ্গে কথা বলে না, খেলাধুলা করতে চায় না, তারা নিজেরাই একটি আলাদা জগৎ তৈরি করে এবং তাদের জগতেই নিজেরাই বিচরণ করে। তাদের কোনো বন্ধু নাই, কারও চোখে চোখ রাখে না, কারও ডাকে সাড়া দেয় না, কারও আদেশ, উপদেশ, অনুরোধ কিছুই শোনে না, তার জগতে সে একাই রাজা। এ সকল অটিস্টিক শিশুদের চিকিৎসার পাশাপাশি ব্যায়াম ও খেলাধুলার জন্য পরিবারে ভূমিকা রাখা খুবই প্রয়োজন। কোন ধরনের ব্যায়াম বা খেলাধুলা অটিস্টিক শিশুদের নিউরোডেভেলপমেন্টে সহায়তা করে সে বিষয়ে জেনে রাখা দরকার। দৈনন্দিন জীবনে ব্যায়ামের ও খেলাধুলার প্রয়োজন অপরিসীম।
ব্যায়াম ও খেলাধুলা শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে রক্ত সরবরাহ পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ‘অটিস্টিক শিশুদের’ সমস্যা যেহেতু ‘নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার’ সেহেতু এমন ব্যায়ামের প্রয়োজন যে ব্যায়ামের মাধ্যমে অন্যান্য সুবিধার পাশাপাশি মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হয়ে নিউরো ট্রান্সমিটার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ‘নিউরোডেভেলপমেন্টের কার্যকরি ওষুধের পাশাপাশি সঠিক ব্যায়ামের সমন্বয় ঘটলে চিকিৎসায় দ্রুত সফলতা পাওয়া যায়। এ সকল ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে নামাজের সেজদা পজিশনে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করা; মাথায় তেল দিয়ে দীর্ঘ সময় ম্যাসাজ করা এবং অনেক সময় ধরে চিরুনি করা; সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, দৌড়ানো ইত্যাদি।
ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরে রক্তের চলাচল দ্রুত হলে মস্তিষ্কের নিউরোনের চলাচল বৃদ্ধি পায় যা নিউরোডেভেলপমেন্টে সহায়তা করে। অটিস্টিক শিশুদের খেলাধুলাভিত্তিক আনন্দদায়ক শিক্ষা একটি শিশুর সামাজিক ও মানসিক দক্ষতার বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুরা প্রতিনিয়ত নিজেদের বিনোদনের জন্য নতুন নতুন গেম ও ক্রিয়াকলাপ নিয়ে চিন্তা করে। উদাহরণস্বরূপ, শিশুরা গল্প ও ঘটনা তৈরি করে নিজেদের মতো ও সেগুলো এমনভাবে কাজ করে যেন বাস্তবে তা ঘটছে। নির্মাণের খেলনা দিয়ে খেলার সময়, একটি বিল্ডিং-এর নকশা তৈরি সৃজনশীলতা নিয়ে আসে। সব ধরনের খেলাই সৃজনশীল অভিব্যক্তির বিকাশ ঘটায়। আপনি কীভাবে আপনার ছোট শিশুকে সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে পারেন তা অবশ্যই জানতে হবে। একটি শিশুর সামাজিক দক্ষতা শেখার প্রথম উপায় হলো তাদের পিতামাতার সঙ্গে যোগাযোগ। এরপর ভাই-বোন বা বন্ধুদের সঙ্গে খেলার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে। স্বাধীনভাবে খেলা চলাকালীন, শিশুরা অনেক সামাজিক দক্ষতা শেখে যেমন- অন্যদের সহযোগিতা করা, অন্য বন্ধুদের সঙ্গে খেলা, ভাবের আদান-প্রদান, বন্ধুদের নিয়ে আলোচনা, নিয়ম মেনে চলতে শেখা ইত্যাদি। অতএব, অটিজম শিশুর ওষুধের মাধ্যমে ‘নিউরোডেভেলপমেন্টের বাধাসমূহ অপসারণ, সঠিক খাবার প্রদান এবং উপরোক্ত ব্যায়াম বা খেলাধুলার সমন্বয় ঘটানো সম্ভব হলে দ্রুত মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ ঘটে।
অভিভাবকদের অটিজম শিশুর ব্যায়াম এবং চিকিৎসায় আরও যত্নবান হয়ে শিশুদেরকে স্বাভাবিক জীবনধারায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
লেখক: পিএইচডি (স্বাস্থ্য), এমফিল (স্বাস্থ্য), ডিএইচএমএস। চিকিৎসক ও গবেষক (ক্রনিক ডিজিজ অ্যান্ড নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার)।
চেম্বার: নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, (ড. হক হোমিও ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের একটি প্রতিষ্ঠান) বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড, গ্রাউন্ড ফ্লোর (জি-৪), ১৪৪ গ্রীন রোড, পান্থপথ, ঢাকা। মোবাইল: ০১৭০৭-০৭৩১৪১;
মন্তব্য করুন
শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন
শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত
৯৫ ভাগ কিশোরীকে টিকা দেয়ার টার্গেট/ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা পেল ১১ শিক্ষার্থী

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]