প্রথম পাতা
শর্ত মেনে বিদেশ যেতে রাজি নন খালেদা জিয়া
কাজী সুমন
১ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার
সরকারের কোনো ধরনের রাজনৈতিক শর্ত মেনে বিদেশে চিকিৎসা নিতে রাজি নন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সরকার যদি নিঃশর্তভাবে অনুমতি দেয় তাহলেই বিদেশে যেতে চান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিএনপি’র একাধিক সিনিয়র নেতা। এদিকে বিদেশের চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে খালেদা জিয়ার পরিবার। সরকার যদি আজ অনুমতি দেয় তাহলে আগামীকাল সোমবারই তাকে বিদেশে নিতে চান পরিবারের সদস্যরা। ইতিমধ্যে পরিবারের তরফে সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত রোববার জানানো হবে। এদিকে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে এখন যে সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আবার তাকে জেলে যেতে হবে, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে তাকে অনুমতি নিতে হবে।
তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলটির শীর্ষ নেতারা এখনো সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন।
গত ৯ই আগস্ট থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। ৫২ দিনেও তার স্বাস্থ্যের তেমন কোনো উন্নতি নেই। মাঝে-মধ্যেই তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। নিতে হচ্ছে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। সর্বশেষ শুক্রবার বিকালেও তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টা পর ফের কেবিনে নেয়া হয়। লিভার সিরোসিসের কারণে তার পেটে পানি চলে আসছে। সেটা বের করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, ম্যাডামের পেটের পানি বের করার জন্য কেবিন থেকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল। পানি অপসারণের পর ফের তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতির জন্য রাজনৈতিক কিছু শর্ত দিতে চায়। এ ছাড়া চিকিৎসার ক্ষেত্রেও কয়েকটি দেশের নাম উল্লেখ করে দিতে চায়। সেক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড কিংবা এশিয়ার কোনো দেশে চিকিৎসা করাতে হবে। কিন্তু বিএনপি চায় যুক্তরাজ্য, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অস্ট্রেলিয়া।
ওদিকে শুক্রবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিনদফা বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার অনুমতি দিতে শর্তের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা শর্তের বিষয়ে জানতে চান। তখন বিএনপি নেতারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কোনো রাজনৈতিক শর্ত মেনে বিদেশে চিকিৎসা নিতে রাজি নন।
সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি’র চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সরকারের কোনো শর্ত মেনে বিদেশে যাবেন না। তাহলে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময়েই তিনি বিদেশে যেতে পারতেন। বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানান তিনি।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মানবজমিনকে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট এমন হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি। তার মুক্তি মানে হারানো গণতন্ত্র ফিরে পাওয়া। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে কোনো শর্ত খাটে না। এ ছাড়া শর্ত মানা বেগম খালেদা জিয়ার অতীতের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গেও যায় না। আমরা নিঃশর্তভাবে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা চাই।
জার্মানি বিএনপি’র সভাপতি আকুল মিয়া মানবজমিনকে জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবার থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আমাকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। তারা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। সরকার অনুমতি দিলে ম্যাডামকে জার্মানির বার্লিনে নেয়া হতে পারে।
পাঠকের মতামত
আওয়ামিলীগের শর্ত হলো বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার বিনিময়ে বিএনপিকে সাজানো নির্বাচনে আসতে হবে।
"বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে, গণতন্ত্রের মুক্তি"— এসব মনোলোভা কথাবার্তার চেয়ে চিকিৎসাই উত্তম।
আইন মন্ত্রী বাঙ্গালীদের হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন। খুনের আসামী, দাগী অপরাধী দিনে দিনে চলে গেছে সেটা আইনমন্ত্রী দেখেননি। খালেদা জিয়ার বেলায় যত নিয়ম।
আমার মনে হয় আগে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। পরে যা হয় দেখা জাবে। কারণ কার কোন সময় এমন দিন আসে বলা যায় না।
একজন মৃত্যু পথযাত্রীর চিকিৎসা নিয়ে আবার শর্ত কিসের? এটা স্পষ্ট জালিম সরকারের অমানবিক আচরন।আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার.
আল্লাহ্ তাঁকে ভাল রাখুক এই দোয়া করি।
প্রতিহিংসার রাজনীতি যেন দেশটাকে ছাড়ছেনা ! একজন সাবেক প্রধান মন্ত্রীর চিকিৎসা করাবেন ওখানে এত টানা হিচড়া হবে কেন ?
কিন্তু হাসিনা এরশাদ সাহেব কে হাত করে ভোটে চলে যায়, বেগম জিয়া তখন একাই আন্দোলন চালিয়ে জান এবং ৯০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেন। আপোষহীন নেত্রী কখনো অবুজ দুই সন্তানের কথা ও চিন্তা করেন নাই, দেশের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে জান। মঈন - ফখরুদ্দিন দুই ছেলে কে মৃত্যুুর মুখে ঠেলে দিলেও সমজতা করে বিদেশে জান নাই। এই হলো বেগম খালেদা জিয়া, আজ নিজের জীবনেই সংকটে এখনো তাঁর অবিচল মনোভাব আশাহত মানুষ কে বেঁচে থাকার সপ্ন দেখাই। আল্লাহ্ তাঁকে ভাল রাখুক এই দোয়া করি।
আশ্চর্য্য এক দেশ বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে যারা তত্ত্ববধায়ক সরকার নিয়ে, নিরেপেক্ষ সরকার নিয়ে তালবাহানা করেছিল, ক্ষমতায় থাকতে খুন, লুটতরাজ করেছিল, সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক দলের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, তারা আজ নাকি গণতন্ত্রের রক্ষাকারী হয়েছে। লজ্জাও লাগে না এদের। বর্তমান শাসকেরা গণতন্ত্রের নষ্টকারী হলে আপনার গণতন্ত্রের হত্যাকারী।
একজন মৃত্যু পথযাত্রীর চিকিৎসা নিয়ে আবার শর্ত কিসের? এটা স্পষ্ট জালিম সরকারের অমানবিক আচরন।
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার
নেতারা বলেছেন --- খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গনতন্ত্রেরমুক্তি, তার মুক্তি মানে হারানো গনতন্ত্র পাওয়া। এ ব্যক্তব্যের পরে যেন আবার নেতারা না বলে গ ন ত ন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করছি।
কারো চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করা উচিৎ নয় কারন এমন পরিস্থিতিতে অন্যকেও পড়তে হতে পারে।
পরিবারের উচিত সরকারের সব শর্ত মেনে জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া। এখানে বি এন পি দল কে দুরে রাখা উচিত। ''' বর্তমান প্রেক্ষাপট এমন হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি। তার মুক্তি মানে হারানো গণতন্ত্র ফিরে পাওয়া। '''' মুক্তির আগে এই ধরণের কথা বলা মানে যাতে আওয়ামী লীগের বেগম জিয়াকে মুক্তি না দেওয়া। তারা হিসেব করেছে বেগম জিয়ার মৃত্যু হলে দেশের জনগণ রাস্তায় নেমে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে।
বিদেশ যেতে হলে খালেদা জিয়াকে আগে জেলে যেতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে কোনো শর্ত খাটে না। তিনি কপট রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এটি গোটা দেশসহ বিশ্বও জানে। এটি অবৈধ সরকার ছলে বলে কলে কৌশলে তাকে মারতে চায়। ঐ উদ্দেশ্যেই তাকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। অভিযোগ আছে স্লোপয়জনিং এর। সেটিও খোলাসা হওয়ার ভয় অবৈধ দখলদারের ভিতরে কাজ করছে। আজ শর্ত, কাল অনুমোদন, পরশু মহানুভবতা এভাবে সময় পার করে জীবন বিপন্ন করাই কপটের মনের গোপন উদ্দেশ্য। এদের কোন কাজ স্বচ্ছ নয়। আইন বিচার ও প্রশাসনকে জিম্মী করে তারা সব করে। মজলুম মানবতার আদালতে সচেতনের এ আবদার জমা রাখা। জরুর এর ফয়সালা চাই।
উনি শেখ হাসিনা নন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রশ্নে উনি আপোষহীন। স্যালুট আপনাকে ।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি। তার মুক্তি মানে হারানো গণতন্ত্র ফিরে পাওয়া। You are 100% right.
She is a real dignified woman!
This is right decision. Freedom is more important then bow down to Awami League decision.
একেই বলে আপোষহীন নেত্রী। আল্লাহ দেশ মাতাকে অতি তাড়াতাড়ি সুস্থ্ করে ১৮ কোটি মানুষের মাঝে ফিরিয়ে দিন।
মন্তব্য করুন
প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন
প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]