দেশ বিদেশ
ভুবনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত মারুফ রিমান্ডে
স্টাফ রিপোর্টার
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবারঢাকার রাস্তায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আইনজীবী ভুবন চন্দ্র শীলের মৃত্যুর ঘটনায় মারুফ বিল্লাহ ওরফে হিমেল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া হিমেল বর্তমানে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে রয়েছেন। গত সোমবার রাতে রাজধানীর পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মারুফ বিল্লাহ হিমেল শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনের অবস্থান বার বার জানানোর চেষ্টা করছিল। তিনি গুলির দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে ইতিমধ্যে স্বীকার করেছেন। তাকে কেউ একজন ডেকে এনেছিলেন। তার নামে এর আগে কোনো পুলিশ রেকর্ড নেই। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। গতকাল অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হলে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানানো হবে। এদিকে ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীল ব্রেস্ট টিউমার এবং কিডনি রোগে আক্রান্ত। ভুবনের মা গিরিবালা শীল পক্ষাঘাতগ্রস্ত। সদ্য এসএসসি পাস করা একমাত্র মেয়ে ভূমিকা চন্দ্র শীলের পড়াশোনা নিয়ে শঙ্কায় পরিবার। এ বিষয়ে ভুবনের শ্যালক পলাশ চন্দ্র শীল মানবজমিনকে বলেন, গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই জানি না। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবশ্যই চাইবো।
একমাত্র মেয়ে ভূমিকাকে নিয়ে তার বাবার অনেক স্বপ্ন ছিল। মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় বিদেশে পাঠানো এবং নিজের মতো একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসলে হয়তো মেয়েটা তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। স্ত্রী রত্না সঠিক চিকিৎসা পাবে। ভুবনের মা এবং স্ত্রী দু’জনই অসুস্থ। সবকিছু মিলিয়ে যদি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সাহায্যের হাত বাড়ালে হয়তো ওরা ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। পলাশ চন্দ্র বলেন, গত সোমবার রাতে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার গ্রামের বাড়িতে ভুবনের মরদেহ নিয়ে আসা হয়। রাত ১২টায় তার মরদেহ দাহসহ শেষকৃত্য শুরু হয়ে রাত ৪টায় শেষ হয়। এর আগে গত ১৮ই সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীল গুলিবিদ্ধ হন। তিনি কাজ শেষে গুলশানের অফিস থেকে ভাড়ায় মোটরসাইকেলে করে মতিঝিলের আরামবাগের বাসায় ফিরছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ওই রাতেই তাকে ধানমণ্ডির পপুলার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গত শনিবার তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। সোমবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।