প্রথম পাতা
ড. তোফায়েল আহমেদের বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা
দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অনেক সংস্কার প্রয়োজন
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার
নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদের গ্রন্থ ‘সংস্কার সংলাপ’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার অনেক সংস্কার প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলসহ সর্বত্র গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়াতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি কার্যকর করেছে তা দেশের জন্য ভালো কিছু নয়। দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকলে এমন ভিসা নীতি আসতো না।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামে গ্রান্থিক প্রকাশন থেকে প্রকাশিত সংস্কার সংলাপ (সূচনা সূত্র) বইটির মুখবদ্ধ রচনাকারী আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এম. এ. মতিন বলেন, বইটির নাম ‘সংস্কার সংলাপ’ আমাকে ভাবিত করেছে। বইয়ে ৫টি প্রস্তাবের মধ্যে ২টি প্রস্তাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, বইটিতে দ্বিতীয় গুচ্ছে মাঠ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার বিষয়ক ৭টি প্রবন্ধ, তৃতীয় গুচ্ছে সরকারের নির্বাহী বিভাগের নানা নীতি ও কার্যক্রম নিয়ে আটটি প্রবন্ধ এবং শেষ গুচ্ছে শিক্ষা বিষয়ক সাতটি রচনা স্থান পেয়েছে। সারাবিশ্বে যখন গণতন্ত্রের সংকট চলছে- বিগত পঞ্চাশ বছরেও স্বাধীন বাংলাদেশ যখন নির্বাচনের মতো জরুরি বিষয়েও কোনো নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা করতে পারেনি, তেমনি একটি সময়ে এই বিরল বইটি জাতিকে নতুন দিকনির্দেশনা দিবে এটাই প্রত্যাশা।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাদের সামনে বড় একটা সমস্যা। আশা করি দেশের রাজনীতিবিদরা বুঝবেন, সুশীল সমাজ, যারা লেখালেখি করেন তারাও বিষয়টি বুঝতে পারবেন। এটা শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয় আমাদের ব্যক্তিজীবনেও প্রভাব ফেলবে। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা সংস্কার কথাটি শুনতে চান না। আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অনেক সংস্কার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ বাংলাদেশের মতো স্বাধীন ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য মোটেও ভালো নয়। তিনি বলেন, আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞা অলরেডি আরোপিত হয়েছে। বাংলাদেশের কিছু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের তা কার্যকর করা হচ্ছে বা হবে। এটা আমাদের মতো স্বাধীন দেশের জন্য মোটেও ভালো নয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দলীয় মনোনয়ন প্রণয়ন ব্যবস্থায়ও সংস্কার আনতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে নমিনিশনের ব্যাপারটা হচ্ছে আমি যাকে দেবো তাকে ভোট দিতে হবে। কলা গাছকে দিলে তাকেই ভোট দিতে হবে। আর না হলে দল থেকে বের করে দেবো। এ রকম একটি সিস্টেম প্রচলিত রয়েছে। সেন্ট্রাল থেকে নেতারা ঠিক করে দেয় কে নির্বাচন করবে। অথচ এটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হওয়ার কথা ছিল। প্রার্থী বাচাইয়ে সবার মতামত নেয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত করতে হবে।
সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত নিজেদের অভ্যন্তরের গণতন্ত্রের চর্চা করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কাছে ভালো নির্বাচন প্রত্যাশা করে কোনো লাভ নেই। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কখনো ঠিকভাবে হয়নি, ক্ষমতাসীন দলগুলো ঠিক যতটুকু নিজেদের জন্য লাভজনক মনে করেছে ততটুকুই সংস্কার করেছে। স্বৈরাচার পতনের পর গত ৩৩ বছরে যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে কেউই কথা রাখেনি। যতক্ষণ পর্যন্ত এই মানসিকতার পরিবর্তন না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো স্থায়ী সংস্কার সম্ভব না।
গ্রন্থিকা প্রকাশনের প্রকাশক রাজ্জাক রুবেলের সভাপতিত্বে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বইটির লেখক ড. তোফায়েল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোবাশ্বের মোনেম, জাতীয় নদী কমিশনের সাবেক সদস্য ড. শারমিন মুরশীদ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন
প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]